আমি শাবানা। আমার স্বামী জসিম। খোকন নামে আমাদের একটি ছেলে আছে। খোকন স্কুলে পড়ে।
জসিম ভ্যানে করে আচার বিক্রি করে অর্থোপার্জন করে। আমাদের সংসারে সুখের অভাব নেই। কিন্তু আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না- চ্যাটিং করতেই এমবি ফুরোয়।
এই অল্প উপার্জন থেকেই জসিম মাসে মাসে গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠায়। আমার শ্বশুর আনোয়ার হোসেন অসুস্থ, হার্টের রোগী। দেবর কাঞ্চন কলেজে বিএ পড়ে। তার ওপর জসিম লটারি কিনে টাকা নষ্ট করে।
একদিন পাশের বাসার এক ভাবি এসে আমাকে ফেসবুকে একটি গ্রুপে এড করে দেন। তিনি দেখিয়ে দেন কীভাবে উদ্দোক্তা হতে হয়। তারপর আমি গ্রুপের স্যারের পরামর্শ নিই।
জসিম রাতে বাড়ি ফিরলে আমি তাকে বুঝিয়ে বলি কীভাবে বড়লোক হওয়া যায়। তারপর ভাবিদের গ্রুপটার কথা বলি। জসিম বিষয়টি বুঝতে পারে। আমি জসিমকেও সেই গ্রুপে এড করে দেই।
তারপর জসিম স্যারের পরামর্শে আমাকে একটি সেলাইমেশিন কিনে দেয়। আমি রাতদিন কাপড় সেলাই করি। সেখান থেকে টাকা জমিয়ে জসিমকে একটা টেম্পো কিনে দেই।
ধীরেধীরে আমি হাতে বানানো জামা অনলাইনে বিক্রি করতে থাকি। জসিম হোম-ডেলিভারি দেয়। জসিমও ভালো রোজগার করতে থাকে। এভাবেই আমাদের অনেক টাকা জমে যায়। তারপর আমি একদিন দশটি সেলাইমেশিন কিনে দশজন নারীকে নিয়ে ছোট্ট একটা প্রতিষ্ঠান খুলি।
জসিম তার টেম্পো বিক্রি করে একটি টয়োটা করোলা কিনে ফেলে! আমার প্রতিষ্ঠানও বড় হতে থাকে। অবশেষে আমি আর জসিম মিলে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি চালু করলাম।
সেদিন যদি ভাবি আমাকে ঐ গ্রুপে এড না করতেন তবে আমি শাবানা আজ এতো দূর আসতে পারতাম না। স্যার আর প্রিয় গ্রুপকে অনেক ধন্যবাদ। স্যারের গ্রুপের কারণেই আমি শাবানা আজ কোটিপতি হতে পেরেছি।
লেখা: আবদুল মতিন সোহাগ
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন