দেশের যুবসমাজের বেকারত্ব সমস্যা নিয়া আমি প্রচুর চিন্তাভাবনা করি। চিন্তায় মাঝেমধ্যে রাতে ঘুম হয় না। বাধ্য হয়ে বিটিভি দেখে ঘুমাই।
এইরকম অনেক নির্ঘুম রাত্রির শ্রমে আমি যুবসমাজের জন্যে একেকটা আইডিয়া বাইর করি। আজ তেমন এক বিজনেস নিয়া কথা বলবো।
তার আগে বেকার যুবসমাজের উদ্দেশ্যে একটা-দুইটা কথা কইয়া নিই। চানক্য বলছেন:
ব্যাপারে অপার লাভ আধেক লাভ চাষে
চাকুরি কুকুরি পেশা ঘুরি দেশে দেশে।
চাকরি করে জীবনে কিছু করতে পারবেন না, কুকুরের পেশা চাকরি। তারচে বরং ব্যবসা করেন। ব্যবসায় অপার লাভ৷
ডিজিটাল বাংলাদেশে ব্যবসা করতে হবে ডিজিটাল ব্যবসা। অনলাইনে ঘি আর মধুর ব্যবসার রিসেন্ট আউটব্রেক কি খেয়াল করছেন? এইসব লাইনে গিয়া সুবিধা করতে নেহি পারেগা। কারণ মার্কেট অলরেডি ওভারক্রাউডেড।
কিন্তু আপনারা বেকার যুবসমাজ! কী করবেন?
আপনাদের জন্যেই নিয়া আসছি ইউনিক বিজনেস আইডিয়া। যার রয়েছে সমৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা। স্ক্রিনশট বিজনেস৷
মূলত যারা প্রচুর সময় অনলাইনে থাকে এবং অন্যের ব্যপারে অতিকৌতূহলী এই ব্যবসা তাদের জন্যে।
বিভিন্ন সেলেব, পাতি সেলেব, মাইক্রো/ন্যানো সেলেবদের পোস্টের, কমেন্টের, কমেন্টের রিপ্লাইয়ের স্ক্রিনশট টুকে রাখবেন। শুধু অনলাইন সেলেব্রিটি না, যেকোন রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিখ্যাত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে প্রাপ্ত জিনিস টুকে রাখতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক ডকুমেন্ট, ছবি এইগুলায় অনলাইনে ঘোরে, বিভিন্ন ট্রেন্ড বা ইস্যুতে যার ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেইগুলা রাখতে হবে।
এইসব স্ক্রিনশটের ডকুমেন্টেশন হইতে হবে সিস্টেমেটিক। বিষয়ভিত্তিক সাজানো। যেকোন ইস্যুতে যেন নির্দিষ্ট ফোল্ডারে দরকারি জিনিসটা পাওয়া যায়। বেশিরভাগ লোক স্মার্ট নোটটেকিং কী জানে না। আপনাকে এই জিনিসটা শিখা নিতে হবে। লুমান'স স্লিপিং বক্স টেকনিক এপ্লাই করলে ডকুমেন্টেশন প্রসেস ভালো হবে।
বিভিন্ন ইস্যুতে আপনার আর্কাইভ থেকে লোকজন সেইগুলা কিনে নেবে। যেহেতু এগ্লার সাপ্লাই লিমিটেড থাকবে, এবং একজন কিনে ফেসবুকে শেয়ার করলে, আপনার আর নতুন করে সেইটা সেল করার সুযোগ থাকবে না, আপনার কন্টেন্ট এক্সক্লুসিভ হইতে হবে। মার্কেটে ইচ্ছা করে সাপ্লাই কম রাখতে হবে। এবং এক্সক্লুসিভ বলেই ভালো দাম চার্জ করতে পারবেন।
: এই জিনিস পাবলিক পকেটের পয়সা দিয়া কিনবে?
: অবশ্যই কিনবে। নইলে পাবলিক টাকা দিয়া কেন পত্রিকা কেনে?
আমার তো মনে হয় আপনার কালেকশন ভালো হইলে ব্যক্তির চাইতে পত্রিকাওয়ালার কিনবে সবার আগে।
ভয়েরিজম, গসিপ, স্ক্যান্ডাল এগুলার প্রতি মানুষের চিরকালীন, অফুরন্ত আগ্রহ। এর চাইতে বড় ড্রাগ নাই।
তাছাড়া এই যুগে আছে আবার ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা। ফলে 'কোয়ালিটি' বা 'ঝাঝালো' জিনিস দিতে পারলে ব্যবসা ভাল হবে। (ভাইরালিটির যুগে কোয়ালিটি = ঝাঝালো, কন্ট্রোভার্সিয়াল জিনিস।)
শর্টকাটে এই বিজনেসের নাম একেক ব্যবসায়ী একেকভাবে দেবে। দেয়া যায় স্ক্যান্ডাল আর্কাইভ। বাংলা একাডেমির ভাষায় 'কেলেঙ্কারি মহাফেজখানা'। কিন্তু এইসব নাম তো বিজনেসে চলবে না, কাগু। নামের মধ্যে একটু গ্ল্যামার বা কর্পোরেট ভাইব সান্ধাইতে হবে। নইলে খাবে না। কনট্রোভার্স ডক. বা এই টাইপের আরও কুল কোনো নাম দিতে হবে।
তদুপরি, স্ক্রিনশট বিজনেসের আরও অর্থকরী সম্ভাবনা আছে। ভবিষ্যতে এইগুলা দিয়া 'স্ক্রিনশটসমগ্র' বের করতে পারবেন। ইতিহাসের দলিল হিসাবে। শুনতে এখন হাস্যকর লাগতে পারে অনেকের কাছে। কিন্তু এমন সময় একদিন আসবে যখন স্ক্রিনশট হবে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল।
পরিস্থিতি আরও জটিল করতে অজস্র ফেইক স্ক্রিনশট ট্রু স্ক্রিনশট রূপে হাজির হবে। এবং ফেইক থেকে রিয়েল জিনিস আলাদা করতে গিয়া ফ্যাক্টচেকারারও নাকানি চুবানি খাবে।
এই বিজনেস আইডিয়া আগে কাউরে বলি নাই। আজকেই ফট করে আপনাদের বলে ফেললাম। আমি আইডিয়া ফ্রিতেই দিয়া থাকি। অবশ্য কেউ খুশি হয়া আমার নাম্বারে বিকাশ করলে মাইন্ড করি না।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন