মজনু, দেবদাস, শাহজাহানদের নিয়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে 'স্পেশাল' টক শো

২৩৫১ পঠিত ... ১৫:৪৭, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮

উপস্থাপক: ভিউয়ারস, আজ ভালোবাসার দিনে আমরা স্টুডিওতে আনতে পেরেছি কয়েকজন বিশেষ অতিথিকে। যাদের নামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে প্রেম, ভালোবাসা, লাভ! প্রথমেই সেই সাহসী পুরুষ, যে ওপেনে বোতল টাইনা আমাদের তরুন সমাজকে বুঝাইছে, ‘ছ্যাকা’ মানেই ‘জে.ডি’, যিনি রাষ্ট্রের একজন সুনাগরিক হয়ে ৬৯ পার্সেন্ট ভ্যাট অর্থ্যাৎ কর দিয়া গেছে.... দ্যা বোতল ম্যান, সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন!

সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন: বোতল টানছি মানে?!
উপস্থাপক: সরি, আমি ভুলে দেবদাসের পরিচয় দিয়া ফেলছি.....
দেবদাস: সব ঠিক আছে, কিন্তু আপনাদের সিকিউরিটি গার্ড আমার ওষুধ কেড়ে নিলো কেন? এ কেমন অমানবিক আচরণ?
উপস্থাপক: আপনে অফ যান বস, ঠান্ডা কাশি বইলা জোরে দুইটা কাশি দিবেন আর কফ শিরাপের শিশি নিয়া টক-শো করবেন, এইটা আমার পোষায় না।

দেবদাস: ঐ গুলা গুরুত্বপূর্ন মেডিসিন ছিলো... ব্যাপার না.... আমার কষ্ট কেউ বুঝলো না...
উপস্থাপক: দর্শক, কাশির ওষুধ নিয়া ধরা পড়া দেবদাসের পাশেই আছেন প্রেমের জগতের বিল গেটস, টেকা পয়সাই আসল এটা প্রমাণ করা সেই মিলিওনিয়ার, ভালোবাসার বিল্ডিং মালিক সমিতির সভাপতি... আমাদের শাহজাহান মামা।
সম্রাট শাহজাহান: টাকা পয়সা আসল এইটা কই বলছি আমি?!
উপস্থাপক: ভণিতা বাদ দেন, আগ্রায় যেই বিল্ডিং বানাইছেন মিয়া, জায়গার দামই তো আছে কয়েক কোটি, বাকি ফ্ল্যাটগুলার দাম বাদই দিলাম।
উপস্থাপক: সুধী দর্শকবৃন্দ, ভালোবাসার বিল্ডিং মালিক সমিতির মামার পাশে আছে, অমর প্রেমের গল্পের রচয়িতা, মজনু ভাই.....

অলংকরণ: সালমান সাকিব শাহরিয়ার
প্রোডিউসারের আগমন।

প্রোডিউসার: এনাফ....এনাফ.....মজনু, ভোলা... চুপ কইরা বসো.... আর শাহজাহান আঙ্কেল, ঠান্ডা হন, নাইলে স্ট্রোক করবেন। আর মদারু দেবদাসরে কেউ ধইরা ওয়াশরুমে নেও, ও ঘর ভাসাইয়া বমি করবে বইলা আমার ধারনা।
উপস্থাপক: এরা ভ্যালেন্টাইন ডে তে কে আগে কারে প্রোপোজ করবে তা নিয়া ক্যারফা করতেছে....
প্রোডিউসার: তোমরা প্রোপোজে আটকায় আছো? মেয়ে তো গ্যাছে গা!
শাহজাহান: কী?! এইটা হইতে পারে না.... প্লিজ বেগমকে আটকান... দরকার বোধে আমি গুলশানে আরও দুইটা ফ্ল্যাট বুকিং দিবো....
প্রোডিউসার: চাঁদে ফ্ল্যাটে বুকিং দিলেও লাভ নাই, মেয়ে ঐ লোকের প্রোপোজে পটে গেছে।
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন: আমি জানতাম এইরকম কিছু হবে, এট দ্য এন্ড আমি মারা খাবো....
প্রোডিউসার: ‘মারা’ ওয়ার্ড বলা যাবে না..... সেন্সরড হবে..... উল্টা আমি এটা খেয়ে যেতে পারি.....
সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন: ‘মারা’ এখানে ‘মরন’ ‘মৃত্যু’ ‘ইন্তেকাল’ অর্থে ব্যবহার করছি।
প্রোডিউসার: তাইলে ‘মারা’ খাওয়া বলা যাবে .....
মজনু: আমি এত সহজে হাল ছাড়বো না, কই গেছে আমার প্রিয়া??
উপস্থাপক: তোমার প্রিয়া ফেসবুকে চেক ইন দিছে.....
মজনু: কী চেক ইন?? কার লগে??

উপস্থাপক: লিখছে, ‘হি প্রোপোজড মি টুডে! হ্যাভিং দ্যা বেস্ট ডে অফ মাই লাইফ’- উইথ দ্যা রিয়েল ম্যান হু.মু. এরশাদ...
দেবদাস: হোয়াট দ্যা......
প্রোডিউসার: ইয়াং ম্যান, পরের শব্দের প্রথম অক্ষর যেন ‘ফ’ দিয়া শুরু না হয়.....
দেবদাস: তাইলে ‘হ’ দিয়া শুরু করি?
প্রোডিউসার: করো....
দেবদাস: হেল ম্যান..... কে এই এরশাদ?
ক্যামেরাম্যান: দ্যা চাঙ্গা ম্যান। দ্য ম্যাজিশিয়ান। আলটিমেট কুবের মাঝি।
মজনু: ভোলা, তোমার আমার ঝামেলা পরে মিটমাট করা যাইবো, তুমি কিছু গ্লাডিয়েটর ভাড়া করো, আমি নাজিমুদ্দিন রোডের গ্যাং খবর দিতাছি....
উপস্থাপক: লাভ নাই.....
মজনু: কেন?কী এমন আছে তার যা আমাদের নাই???
উপস্থাপক: এটা শুধু তোমার প্রশ্ন না, আমরা জাতিগত ভাবে এই প্রশ্ন করে আসতেছি.... এখন আমি করছি.... আমার আগে আমার বাপে করছে.... তার আগে আমার দাদা....তার আগে তার দাদা... তার দাদা... তার দাদা... কী এমন ‘জিনিস’ তার কাছে আছে যে.....  কী তার গোপন বিদ্যা.....
দেবদাস: বিজ্ঞানের যুগ....নিশ্চয়ই কোন নতুন ধরনের মেশিন আছে তার....
প্রোডিউসার: ইয়ে, দেবদাস আসলে ‘টাইম’ মেশিন বুঝাইতে চাইছে..... দেব, তোমার শব্দ গঠনে গড়বড় আছে, ডাবল মিনিং হয় তো....আধাআধি কিছু বলবা না।
শাহজাহান: আমার দামের তাজমহলে জং ধইরা গেলো.... মরিচা পড়লো.... সাদা পাথরে দাগ পড়লো.. কী এমন জিনিষ তার কাছে যে এখনও মজবুত আর দৃঢ?
উপস্থাপক: জানি নারে ভাই..... জানলে কি এই ভ্যালেন্টাইন ডেতে এইখানে প্যারা খাই? যাই হোক, সবাইরে ধন্যবাদ আসার জন্য। মুডটাই অফ হইয়া গেছে।
দেবদাস: এসির ঠান্ডায় কাশিটা বাড়ছে বস, একটা কফ সিরাপ হবে? প্লিজ পারু, একটা ফোটা?
উপস্থাপক: পারু কেডা ?! কী কও মিয়া আমারে! এই, ক্যামেরা এখনও চলে নাকি?! বিপদে ফালাইবা নাকি দেব!
মজনু: আমারে যাওয়ার ভাড়াটা দিয়েন, পুরাই লস প্রোজেক্ট আমার।
শাহজাহান: কারো কাছে পাচশ ভাংতি হবে??
ভোলা: আমার সাথে চলেন, শেয়ারে যাই....তা কই আছেন এখন?
শাহজাহান: একটা কনস্ট্রাকশন সাইটে আছি.....
দেবদাস: বাহ, মামা কি আর্কিটেক্ট ? ফরেন হবে?
শাহজাহান: আর্কিটেক্ট হইলে কি শেয়ারে বাসায় যাই?
দেবদাস: তাইলে??
শাহজাহান: ইয়ে, তাগাড়ি টানি.....
মজনু: বাদ দেন, লাইফ যে কে কারে কখন কোপ দেয়....কেউ জানে না....
ক্যামেরাম্যান: এই শো অন এয়ার হইবো বস?
প্রোডিউসার: হইবো, ভ্যালেন্টাইন ডে তে মজনু দেবদাসদের চাচা খেলে দিছে, মানুষ এটা খাবে। তবে মজনু একটু সাহস করে যদি একটা মাইর লাগাই দিতো.... টিআরপি টা আরও বাড়তো... টক শোতে হাতাহাতি না হইলে জমে না....
উপস্থাপক: সমস্যা নাই বস, ফাইনাল খেলা তো ১৪ তারিখ.... সামনে আরও ফুল ফল কাঠাল আনারস দিবস আছে.... গেস্ট রেডি করেন।
প্রোডিউসার: ভালোবাসা অন্ধ শুনছিলাম, এখন দেখলা ব্যাপারটা ভিন্ন।
উপস্থাপক: কি রকম বস?
প্রোডিউসার: ভালোবাসা আসলে রাত কানা, সাথে আয়োডিন স্বল্পতাও আছে। 

২৩৫১ পঠিত ... ১৫:৪৭, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top