আরেকজনের এক্সের দায়িত্ব নিয়ে আমি যেভাবে বাবা হয়ে গেলাম

১২৮৭ পঠিত ... ১৫:৪৩, এপ্রিল ১১, ২০২৩

আরেকজনের

এক মেয়ের ব্রেকাপ হয়েছিলো। আমার কাছে কান্নাকাটি করতো। আর কোনো উপায় না পেয়ে আমি শেষমেশ মোটিভেশনাল স্পিকারের দায়িত্ব নিলাম। মেয়েটাকে বলতাম, ‘বয়ফ্রেন্ডকে মাফ করে দাও।‘ ও বলতো, ‘শালারপুতরে জীবনেও মাফ করবো না। আমি আমার অতীত ভুলতে চাই।‘

এর পর আলাপে আলাপে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। মোটিভেশনাল স্পিকারের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়ে আমি ওর বন্ধুর পদ নিলাম। আমি বলতাম, ‘বন্ধু, আরও ভাবো। যদি মাফ-টাফ করে দেয়া যায়।‘ ও বলতো, ‘এই শালারপুতের কথা আর মুখেও আনবা না। আমি আমার অতীত ভুলতে চাই।‘

দিন যায়, মাস যায়। আমি বন্ধুর পদ থেকে সরে দাঁড়াই। আরেকজনের এক্স গার্লফ্রেন্ডকে নিজের গার্লফ্রেন্ডের মতোই সময় দিতে থাকি। আমাদের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে। ও বলে, ‘তুমি বিয়ে করবে কবে?’ আমি বলি, ‘তোমার যেদিন মর্জি হবে, সেদিন।‘

লোকে বলে, ‘বিয়ের বছর দশের মাথায় স্বামী-স্ত্রীও ভাই-বোনের মতো হয়ে যায়।‘ আমরা যেহেতু স্বামী-স্ত্রী না, তাই দুই মাসের মাথায়ই আমরা ভাই-বোন হয়ে গেলাম। ও বলতো, ‘ভাইয়া, ভুলতে পারতেছি না আসলে।‘ আমি বলতাম, ‘বইনরে, এগুলা জীবনে বহুত দেখছি।‘

নদীর স্রোতও হয়তো কারও জন্যে থেমে থাকতে পারে, কিন্তু সময় কাউকে সোডে না। সে বয়ে যেতে থাকে। সময় মানুষকে বদলে দেয়, বদলে দেয় সম্পর্ককেও। ভাই-বোন হওয়ার তিন মাসের মধ্যেও আমাদের সম্পর্কটা বাবা-মেয়ের মতো হয়ে গ্যালো। আমি মেসেজ দিতাম, ‘খাইছো?’ ও রিপ্লাই দিতো, ‘হু, তুমিও খেয়ে নাও। বয়স হয়ে যাচ্ছে তোমার, চুল সাদা হইতেছে। এই বয়সে অনিয়ম কোরো না।‘

...মেয়েটা অনেকদিন পর আজ হঠাৎ মেসেজ দিলো, ‘ও ফিরে আসছে। আমি ওকে মাফ করে দিছি।‘

আমি রিপ্লাই দিলাম, কে? ওই শালারপুতে?

—থাক, আর গালি দিয়ো না। ও নিজের ভুল বুঝতে পারছে।

—আচ্ছা।

—আমি ওকে বিয়ে করবো।

—করগা।

—তুই-তোকারি করতেছো কেন? তুমি নিশ্চয়ই চাও আমি লাইফে হ্যাপি হই!

এই পর্যায়ে আমি বললাম, ‘মা'রে, আমি অবশ্যই চাই তুই সুখী হ। এত কষ্টে এক বছর তিন মাস ধরে তোকে মানুষ করেছি, আর তোর সাধ-আহ্লাদ আমি দেখবো না? একদিন নিয়ে আয় ওকে। আমি নিজে তোকে ওর হাতে তুলে দিয়ে দায়িত্বমুক্ত হই।‘

এই মেসেজ পাঠানোর পর অনেকক্ষণ আর রিপ্লাই নাই। একটু আগে মেসেজ চেক করতে গিয়ে দেখি মেয়েটা আমাকে ব্লক করে দিয়েছে। আমার খুবই খারাপ লাগছে। বাবা হয়ে মেয়েকে এভাবে পর হয়ে যেতে দেখার যে কী কষ্ট, তা আজ বুঝতে পারছি।

যাহোক, মেয়ের উপর তো আর বেশিক্ষণ রাগ করে থাকা যায় না। আমি নিজেকে সামলে নিয়েছি। মেয়েটা আমার শালারপুতের সাথেই ভালো থাকুক। শুভকামনা সবসময়।

১২৮৭ পঠিত ... ১৫:৪৩, এপ্রিল ১১, ২০২৩

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top