এই যে কেটি বোম্যান নামক মাত্র ২৯ বছর বয়সী এক মেয়ের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া অ্যালগরিদম থেকে প্রথমবারের মত যে ব্ল্যাকহোলের ছবি পাওয়া গেল, সেই ব্ল্যাকহোলের ভেতর ঢুকলে আরেকটি অল্টারনেট ইউনিভার্স পাওয়া যাবে। সেই অল্টারনেটিভ ইউনিভার্সের প্রায় সব কিছুই আমাদের এই ইউনিভার্সের মতই শুধু একটু এদিক ওদিক আরকি!
এই যেমন সেই অল্টারনেট ইউনিভার্সের পৃথিবীতে কেটি বোম্যান জন্মেছেন বাংলাদেশে। সেখানে তিনি কম্পিউটার সাইন্সে অনার্স ফাইনাল দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। বাসা থেকে কেটিকে বিসিএস-এর প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি কেটির বিয়ের জন্য পাত্রও দেখা হচ্ছে। পাশের বাসার আন্টি ইতিমধ্যে তাদের বাসায় এসে কেটির মা-কে খোটা দিয়ে গিয়েছেন ‘এত বড় মেয়ে, কিন্তু বিয়ে দিচ্ছেন না? এখন বিয়ে না দিলে তো পরে ভাল পাত্র খুঁজে পাবেন না ভাবি। বেশি বয়সী মেয়েদের এমনিতেই কেউ বিয়ে করতে চায় না!’
বাংলাদেশি কেটি বোম্যানের শঙ্কা হল এই দেশে থাকলে তাকে অন্য কোন ‘ম্যান’এর বউ হয়ে বাসায় বসে বসে কুটনামির অ্যালগরিদম দিয়ে তৈরী ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখে জীবন পার করতে হবে আর বড়জোর নদ-নদীর নাম বা বিভিন্ন কবিতা-উপন্যাস প্রকাশের সাল মুখস্থ করে বিসিএস এর জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
এদিকে কেটির অনার্সের রেজাল্ট প্রকাশের পর দেখা গেল কেটির খুব ভাল করেছে। সে দ্রুত টোফেল আর জিআরই দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমায়। তারপর অল্টারনেট ইউনিভার্সের বাংলাদেশি কেটির জীবন গড়ায় এই ইউনিভার্সের কেটির মতই। কেটির নেতৃত্বে তৈরি হওয়া অ্যালগরিদম থেকেই একদল গবেষক প্রথমবারের মতো ব্ল্যাক হোলের ছবি প্রকাশ করে। ততদিনে কেটির বয়স প্রায় ৩৯। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেটির ছবি ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায় ল্যাপটপের স্ক্রিনে ব্ল্যাকহোলের ছবি সামনে রেখে ক্যামেরার দিকে বিস্ময় ও আবেগ নিয়ে তাকিয়ে আছে কেটি।
বাংলাদেশে বসে কেটির এই ছবি দেখে কেটির মা-ও আনন্দে আত্নহারা। তিনি মোবাইল হাতে ছুটে যান কেটির সেই পাশের বাড়ির আন্টির কাছে। ‘ভাবি, ভাবি, দেখেন আমার মেয়ের ছবি’, মোবাইলে কেটির সেই ভাইরাল হওয়া ছবিটা ধরেন কেটির মা। পাশের বাড়ির আন্টি ছবিটা দেখে বলে ওঠেন ‘আল্লাহ! ভাবি, কংগ্রাচুলেশন! আপনিও শেষ বয়সে এসে অবশেষে নাতি-নাতনির মুখ দেখবেন। কেটিকে দেখে কি খুশিই না মনে হচ্ছে! কেটি যে ঐ দেশে গিয়ে বিয়ে করেছে, আমাদের তো জানালেনও না ভাবি?’ ব্ল্যাকহোলের ছবিটা ভাল করে দেখে তিনি বলেন ‘ওদের দেশে আল্টাসনোগ্রাম একটু ভিন্নরকম, তাই না ভাবি? তা এটা ছেলে নাকি মেয়ে?’
এরপর আন্টির চোখ যায় ছবিতে কেটির পাশে মাথা নিচু করে বসে থাকা তার এক সহকর্মীর দিকে। কেটির মা-কে কোনকিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তিনি বলে উঠেন ‘আপনার মেয়ে জামাইয়ের তো পুরো টাক পড়ে গেছে! কেটির সাথে বয়সের ডিফারেন্সটা একটু বেশি মনে হচ্ছে, তাই না ভাবি? আমি তো আগেই বলেছিলাম, ঠিক সময়ে বিয়ে করলে আমাদের মেয়েটা আরও সুন্দর হ্যান্ডসাম একটা জামাই পেত!'
লেখা: সাদরিল শাহজাহান
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন