এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম একেবারেই কম বলা চলে। যাঁরা কোরবানি দিয়েছেন, তাঁরা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও। সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, আর্থিক সংকটে আড়তদারেরা চামড়া কিনতে পারছেন না। আবার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম একবারেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। খবর: প্রথম আলো।
এদিকে চামড়ার দামের এই দুরবস্থার কারণে আনন্দিত ছাত্রসমাজ। জানা গেছে, চামড়ার দাম করার পর থেকে খারাপ ছাত্রদের ঐতিহাসিক 'চামড়া তুলে ফেলা'র হুমকি দিচ্ছেন না শিক্ষকরা।
এ সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর জনপ্রিয় এক স্কুলের একজন ব্যাকবেঞ্চার, 'আমাদের এক স্যার আছে, আমরা ডাকি চামড়া স্যার। মাইরা চামড়া তুলে ফেলব ছাড়া কোনো কথাই বলে না। ঈদের পর থেকে দেখি সে বেত ছাড়া ক্লাসে ঢোকে, আমাদের কাছে স্কেলও চায় না। চামড়ার কথা তো মুখেও আনে না। এ কোন কেরামতি হইলো বলেন তো ভাই!'
একই রকম তথ্য পাওয়া গেলো এক স্কুলছাত্রীর বক্তব্যেও। তবে শিক্ষক নয়, অভিভাবকদের কাছ থেকে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে তার, 'আম্মা-আব্বা কথায় কথায় মেরে চামড়া তুলে নেয়ার কথা বলতো। কিন্তু কোরবানির ঈদে গরুর চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে লস খাওয়ার পর থেকে এই কথা আর শুনি নাই। দোয়া কইরেন, চামড়ার দাম যেন সামনে আরও কমে।'
শুধু কি ঘরবাড়ি কিংবা স্কুলে? মিছিলেও 'অমুকের চামড়া তুলে নেবো আমরা' ধরনের স্লোগান দেয়া থেকে বিরক্ত থাকছে অনেকে। এমনই এক সংগ্রামী নেতা জানালেন, 'কোরবানির দিন কসাই আসে নাই। গরুটার চামড়া একাই কষ্ট করে তুলছিলাম। সেই চামড়া যদি বিক্রি করে ছুরির দামও উঠে না আসে, এরপর কি আর কারো চামড়া তোলার ইচ্ছা হয় বলেন?'
এ ব্যাপারে একজন চামড়া তোলা বিশেষজ্ঞ শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তিনি টেবিলের উপর সজোরে দুটো বেত্রাঘাত করে জানান, 'গরু পিটায়ে অনেক মানুষ বানিয়েছি। চামড়া তোলার জন্য মানুষ পেটালে যদি সে গরু হয়ে যায়, এই ভয়েই পেটাচ্ছি না। গরুর চামড়ার তো দামই নাই, চামড়া তুলতে গিয়ে বেত ভেঙে গেলে উল্টা আরও পয়সা লস হবে।'