ঢাকার মোহাম্মদপুর, ছিনতাইকারীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে সুপরিচিত এলাকা। এবার পা রেখেছে বিশ্বদরবারে। ইউনেস্কোর ঘোষণার মধ্য দিয়ে মোহাম্মদপুরের মুকুটে এক অনন্য পালক যুক্ত হলো।
বিশ্বব্যাপী ছিনতাইকারীদের জন্য ইউনেস্কো বেশ কিছু বছর ধরেই একটি অভয়ারণ্য খুঁজছিল, অবশেষে মোহাম্মদপুরকে সেই মর্যাদা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
জানা যায়, এই বিশেষ মর্যাদা পেতে বিশ্বের বিভিন্ন শহর বহু বছর ধরে আবেদন জানিয়ে আসলেও, ইউনেস্কো শেষ পর্যন্ত ঢাকার মোহাম্মদপুরকেই বেছে নিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা রবিন জানান, প্রথম প্রথম তো ভয় পাইতাম। কিন্তু এখন তো গর্ব হয়। এতদিন শুনে আসতাম , অমুক শহরে চুরি বেশি, তমুক শহরে ব্যাগ খোয়া যায়। আমাদের দেশে পকেটমারি অনেক হলেও সেটা গর্ব করার মতো ছিল না। এখন অবশ্য বুক ফুলিয়ে গর্ব করা যায়। আশা করছি এই স্বীকৃতির পর বাইরের দেশ থেকে মানুষজন ছিনতাই করতে আসবে।
এদিকে এ খবরে ছিনতাইকারীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা কাজ করছে। ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ছিনতাই শেখানোরও সুযোগ পাচ্ছে তারা। নিজেদের খুশি ভাগাভাগি করতে এলাকাবাসীকে মিষ্টি খাওয়াতে খাওয়াতে বলেন, মিষ্টি খা শালার পুতেরা, তোগোর টাকা দিয়া কেনা মিষ্টি, মিষ্টি না খাইলে কিন্তু ক্ষুর বাইর করুম। মোহাম্মদপুর কিন্তু আমগোর এলাকা আর আমাগোরে এখন থেইকা সকাল বিকাল সালাম না দিলে এলাকায় থাকা নট কইরা দিমু।
এদিকে অভয়ারণ্য ঘোষণার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ছিনতাই শিখতে মোহাম্মদপুরে আসার পরিকল্পনা করছে অনেকেই। ইউনেস্কো জানিয়েছে, তারা মোহাম্মদপুরকে ছিনতাইকারীদের আন্তর্জাতিক ট্রেনিং সেন্টার হিসেবেও ঘোষণা করতে পারে। সেই সাথে পর্যটকদের জন্য ‘ছিনতাই অ্যাডভেঞ্চার প্যাকেজ’ চালু করার কথাও ভাবা হচ্ছে। যেখানে তারা অভিজ্ঞ ছিনতাইকারীদের মাধ্যমে সরাসরি ছিনতাইয়ের অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।
অন্যদিকে স্থানীয় থানা ইনচার্জ বলেন, এতদিন আমরাও ভাবতাম, ছিনতাই আমাদের সমস্যা। এখন বুঝলাম, আসলে এটি আমাদের ঐতিহ্য। ইউনেস্কোর এই পদক্ষেপের পর আমাদের আর কিছু করার নেই। ছিনতাইকারীদের আমরা আর শুধু অপরাধী মনে করি না, তারা আসলে আমাদের সংস্কৃতির ধারক ও বাহক।
এমনকি থানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ছিনতাইকারীদের জন্য পুলিশি নিরাপত্তারও ব্যবস্থা করবে যেন তারা তাদের ঐতিহ্য বহন করতে পারে নির্ভয়ে।