নির্বাচন মৌসুমে ২০টি ফাটাফাটি রাজনৈতিক কৌতুক

৫৪৬৪ পঠিত ... ২০:২০, নভেম্বর ২৯, ২০১৮

১.
মিটিং শেষে নেতা গলায় প্রচুর মালা নিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে এলেন। কিন্তু মুড অফ। ‘বস বিষয় কী, গলায় এত মালা তারপরও মুড অফ?’ সহ-নেতা জানতে চায়।
‘পয়সা দিলাম পাঁচশ মালার, গলায় দিছে তিনশ মালা...’ 

 

২.
১ম : আমি আশেপাশের বাতাস আমার বক্তৃতা দিয়ে ভরে দেব।
২য় : কিন্তু ঘটনা তো দেখছি উল্টা।
১ম : মানে?
২য় : আপনার বক্তৃতা তো শুধু বাতাস দিয়ে ভরা।  

 

৩.
ভারতীয় জোকস এটি। তখন পাঞ্জাবের জৈল সিং প্রেসিডেন্ট। কিন্তু একটা বিপদ দেখা দিল। তিনি ভালো ইংরেজি জানেন না। ইংরেজি জানা এখন জরুরি। কিন্তু একটা দেশের প্রেসিডেন্টকে কে ইংরেজি শেখাবে? ঠিক আরেক প্রেসিডেন্টই একজন প্রেসিডেন্টকে ইংরেজি শেখাতে পারে। পৃথিবীর সব দেশেই খোঁজ লাগানো হলো কোনো দেশের প্রেসিডেন্ট ইংরেজি শেখাতে রাজি আছে কি না। দেখা গেল রোনাল্ড রেগ্যান রাজি হয়েছেন। তিনি খবর পাঠালেন আমার কাছে চলে আসুন ছয় মাসে মিলটন, শেক্সপিয়ার গুলিয়ে খাইয়ে দেব।

জৈল সিং অসুস্থতার কথা বলে আমেরিকা চলে গেলেন। ছয় মাস পার হয়ে গেল। পিএম তার ছেলে রাজিবকে পাঠালেন খোঁজ নিয়ে আসতে ইংরেজি কদ্দুর শেখা হয়েছে জেনে আসতে।

ক’দিন পর রাজিব ফিরে এসে জানালেন, জৈল সিংজির কথা বলতে পারব না তবে রোনাল্ড রেগ্যান দেখলাম ফ্লুয়েন্ট পাঞ্জাবিতে কথা বলছেন। 

 

৪.
পাকিস্তানের এক্স ডিকটেটর জিয়া সার্ক সম্মেলনে ভারত যাবেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে তার ব্যক্তিগত নাপিত অসুস্থ। তিনি আবার ক্লিন সেভড না হলে কোনো আলোচনায় মন বসাতে পারেন না। তখন তার অসুস্থ নাপিত জানাল, ‘স্যার আপনি ভাববেন না, ওখানে আমার এক ভাই আছে করিম, সেও ভালো নাপিত। তাকে আমি খবর দিয়ে দিয়েছি, সে আপনাকে ক্লিন সেভড করে দেবে আমার মতোই।’

প্রেসিডেন্ট জিয়া নিশ্চিত হয়ে রওনা হলেন ভারতে। ওখানে পৌঁছে ক্লিন সেভড হতেও সমস্যা হলো না। ভালো সেভ করল করিম।

পরে করিমকে একদিন ফোনে জিজ্ঞেস করল প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত নাপিত—

‘তুমি আসলে কিভাবে উনাকে ক্লিন সেভড করলে?’

‘কেন তুমি যেভাবে করতে।’

‘আমি কিভাবে করি বলো তো?’

‘ঐ যে ‘ইলেকশন কবে দিচ্ছেন?’ বললেই তার সব দাড়ি-গোফের গোড়া শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায় তখন আমি ক্ষুর চালাই আরামে...’ 

 

৫.
নেহেরুর সময় তার এক কেবিনেট মিনিস্টার ছিল যার ইংরেজি খুব খারাপ পাশাপাশি উচ্চারণও খারাপ। নেহেরু তাকে প্রায়ই টুকটাক ভুল ধরিয়ে দিতেন। উচ্চারণ ঠিক করতে সাহায্য করতেন।

একবার তারা দুজন গেলেন কাশ্মীর। সে সময় খুব নাজুক অবস্থা ওখানে। যুদ্ধ চলছিল। এর মধ্যে নেহেরু মিটিং ডাকলেন জনগণের মনোবল ঠিক করতে। মিটিং চলছে হঠাৎ তার ইংরেজি কম জানা কেবিনেট মিনিস্টার দেখলেন দুটো পাকিস্তানি ফাইটার প্লেন ছুটে আসছে। তিনি চিৎকার করে উঠলেন "Bomber! Bomber!!" নেহেরু যেহেতু ফাইটার প্লেন দেখতে পাননি তিনি বিরক্ত হয়ে ফিসফিস করে বললেন, "Be silent"। তখন কেবিনেট দ্বিতীয়বার প্লেন দেখে চিৎকার করে উঠল, "Omber! Omber!"

 

৬.

একজন পলিটিশিয়ানের দুটো গুণ থাকা খুব জরুরি। একটা হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী দেয়ার ক্ষমতা থাকা এবং দুই হচ্ছে সেইসব না ঘটা ভবিষ্যদ্বাণী কেন ঘটল না তার ব্যাখ্যা দেয়ার ক্ষমতা থাকা। 

 

৭.

এক দরিদ্র দেশের নেতা বক্তৃতা করছিলেন উচ্চ কণ্ঠে, ‘যেখানে দেশের দু-তৃতীয়াংশ মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে সেখানে ঐ রকম দামি দামি গাড়ি আমি বরদাস্ত করব না।!...ঐ গাড়িটা জ্বালিয়ে দাও।’ তিনি দূরে একটা গাড়ি দেখে আবেগে বলে ফেললেন।

তার কিছু সমর্থক ততক্ষণাৎ ছুটে গিয়ে গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে এলো।

মিটিং শেষে বিমর্ষ নেতা তার সমর্থকদের আড়ালে ডেকে বললেন, ‘আমার গাড়িটাই তোমাদের চোখে পড়ল? আর গাড়ি ছিল না?’ 

আমেরিকায় জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন তার হালকা পাতলা লম্বা শরীরের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। বিশেষ তরে লম্বা পা জোড়ার জন্য তাকে সবাই ‘Lon-Lean Legged’ বলত। একবার এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করল, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, আপনার কি মনে হয় একজন সফল রাজনীতিবিদের পা জোড়া কতটা লম্বা হওয়া উচিত?’

‘শরীরটাকে মাটিতে দাঁড় করিয়ে রাখতে যতটা দরকার।’ প্রেসিডেন্টের উত্তর!

 

৮.

চার্চিলকে এক মহিলা এক পার্টিতে বলল, ‘আপনি তো মনে হচ্ছে খুব বাজে রকম মাতাল হয়েছেন।’

চার্চিল ভিতরে ভিতরে বিরক্ত হলেন। বললেন, ‘হ্যাঁ আমি এখন মাতাল তবে কাল ভোরে আর মাতাল থাকব না। কিন্তু আপনি কুৎসিত দর্শন একজন মহিলা কিন্তু কুৎসিতই থাকবেন।’

 

৯.

একটা রাজনৈতিক কনফারেন্সে গেলেন রুজভেল্ট, চার্চিল, স্টালিন। রুজভেল্ট, চার্চিল পাশাপাশি কেবিনে। চার্চিল দিগম্বর হয়ে গোসল করছিলেন এমন সময় রুজভেল্ট কেবিনের দরজা খোলা পেয়ে একদম সোজা ভিতরে ঢুকে গেলেন। দিগম্বর চার্চিল তখন কোনোমতে নিজেকে চাদরে ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করে বললেন, ‘আমাদের আমেরিকান বন্ধুর কাছে যুক্তরাজ্যের লুকানোর কিছু নেই!’

 

১০.

সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে কিসিঞ্জার তখন দিল্লী গেছেন। অশোকা হোটেলে কঠিন নিরাপত্তায় অবস্থান করছিলেন। ইন্ডিয়ান চিফ প্রোটোকল গেল তার কাছে দেখা করতে। দরজায় সিকিউরিটি জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হতে চাইলেন ‘Kissinger?’

‘বলতে পারবো না, কোনো মহিলাকে তো ঢুকতে দেখিনি।’ গার্ডের উত্তর

 

১১.

ইংলিশ ফরেন মিনিস্টার রাশিয়া গেলেন একটা জরুরী কনফারেন্সে। ক্রেমলিনের এক হলে বক্তৃতা দিতে হবে। হঠাৎ তার খেয়াল হলো ইংরেজি বক্তৃতাটা রাশান ভাষায় দিলে কেমন হয়। ততক্ষণাৎ তিনি তার PA-এর মাধ্যমে একজন রাশান জোগাড় করে পুরো বক্তৃতাটা অনুবাদ করিয়ে নিলেন। এবং একটু প্র‍্যাকটিসও করে নিলেন।

পরদিন গাড়িতে করে ক্রেমলিন হলে যাচ্ছিলেন হঠাৎ খেয়াল করলেন বক্তৃতাটার প্রথম সম্বোধন বাক্যটি রাশান ভাষায় অনুবাদ করা হয়নি, এখন উপায়? এখন কী করা। হঠাৎ তার নজর গেল একটা পাবলিক টয়লেটের দিকে। তিনি সেখানে থেমে পড়লেন। পাবলিক টয়লেটে MAN এন্ড WOMAN লেখা থাকে, ওখান থেকে শব্দটা টুকে নিলেই হলো।

পরদিন ক্রেমলিন হলে রাশান ভাষায় ভালোই বক্তব্য রাখলেন। সবাই প্রশংসা করল তার রাশান উচ্চারণের।

গাড়িতে ফেরার সময় মিনিস্টার তার P.A. কে জিজ্ঞেস করলেন,

‘কী বক্তৃতা কেমন দিলাম?’

‘ভালো স্যার, কিন্তু শুরুতে ওটা বললেন কেন?’

‘কোনটা?’

‘ঐ যে বললেন, মি. এন্ড মিসেস পাবলিক লেবরেটরিস।’

 

১২.

প্রেসিডেন্ট নেহেরু একবার বক্তৃতা দিচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের হাইড পার্কে। তার সঙ্গে ছিলেন জৈল সিং। তো নেহেরু খেয়াল করলেন শ্রোতারা কথা বলছে তার বক্তৃতা মনোযোগ দিয়ে শুনছে না। তখন তিনি একটা ট্রিক করলেন। বললেন, ‘আচ্ছা আপনাদের এবার একটা কুইজ ধরব...বলুন তো আমার বাবা-মার একটা সন্তান হলো সে আমার ভাইও না বোনও না...সে কে?’

শ্রোতারা সব চুপ কেউ কিচ্ছু বলছে না। তখন তিনি বললেন, ‘সেটা আমি নিজেই’। তারপর যথারীতি তিনি আবার বক্তৃতা শুরু করলেন...

এর বেশ কিছুদিন পর। জৈল সিং এক জায়গায় বক্তৃতা দিতে গেছেন। সেখানেও হঠাৎ করে শ্রোতারা মনে হলো অমনোযোগী। তখন জৈল সিং নেহেরুর টেকনিক ফলো করলেন। তিনি হঠাৎ বললেন, ‘এবার আপনাদেরকে একটা কুইজ ধরা যাক...আমার বাবা-মা’র একটা সন্তান হলো সে আমার ভাইও না বোনও না, সে কে?’ 

শ্রোতারা সব চুপ। এবার জৈল সিং বললেন, ‘সে প্রেসিডেন্ট নেহেরু।’

 

১৩.

‘ঠিক করেছি আমি রাজনীতিতে ঢুকব।’

‘তুই জানিসটা কী?’

‘কিছুই জানি না, তবে ভান করি সব জানি।’

‘তাহলে ঠিক আছে, ঢুকে পড়।’

 

১৪.

কার্ল মার্কস এর স্ত্রীকে ‘দাস ক্যাপিটাল’ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষণ্ন কণ্ঠে বলেন, ‘ও দাস ক্যাপিটাল না লিখে যদি শুধু ক্যাপিটাল-এর দিকে একটু মনোযোগ দিত...’

 

১৫.

‘বন্দুকের নলই সকল ক্ষমতার উৎস!’

‘কোন বন্দুক দুনলা না এক নলা?’

 

১৬.

নেতা কার্যালয়ে গিয়ে তার সেক্রেটারিকে তলব করল—

‘দেখো তো কাল যে খাদ্য পরিস্থিতির উপর বক্তব্য রাখলাম সেটা কাভারেজ কেমন হয়েছে।’

একটু পর কয়েকটা দৈনিক কাগজ নিয়ে সেক্রেটারি এসে জানাল, ‘স্যার সবাই আপনার বক্তব্য মেয়েদের পাতায় ‘রেসিপি’ হিসেবে ছেপেছে।’

 

১৭.

‘আমাদের এলাকার সব কুকুরের লেজ কাটা হয়েছে।’

‘কেন?’

‘বাহ্‌! কাল যে এলাকার এমপি আসছেন। কোনো কুকুর যাতে লেজ নাড়তে না পারে তাই এই ব্যবস্থা!’

 

১৮.

‘যারা দেশ চালায় তাদের সম্পর্কে জনগণ প্রকৃত সত্য জানলে দেশে প্রতিদিন বিপ্লব হতো’ বাক্যটি চার্চিলের!

 

১৯.

‘শুনেছিস বক্তৃতাবাজ নেতা রমিজ তো সবজি ব্যবসায় নেমেছে।’

‘কেন? এত ব্যবসা থাকতে সবজি ব্যবসা কেন?’

‘ও বক্তৃতা দিতে উঠলেই টমেটো, বেগুন...এসব জুটতো। শ্রোতারা সেগুলি দিয়েই...’

 

২০.

‘আচ্ছা তোমরা এই যে রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে যাও কত করে পাও?’

‘যেই দলের মিটিংয়ে যাই তারা দেয় পঞ্চাশ ট্যাকা আর যেই দলের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেই তারা দেয় ত্রিশ টাকা।’

‘কেন ওরা ত্রিশ টাকা দেয় কেন?’

‘ঐ যে মিটিংয়ে নেতা বক্তৃতা দিতে উঠলে পঁচা ডিমতো আমরাই মারি!’

৫৪৬৪ পঠিত ... ২০:২০, নভেম্বর ২৯, ২০১৮

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top