পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে ২৫টি কৌতুক

১২৭৭৩ পঠিত ... ১৫:১০, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭

পাকিস্তানি সেনাদের অহংকার, নির্বুদ্ধিতা ও ভীরুতা নিয়ে প্রচলিত আছে অনেক মজার সব ঘটনা ও কৌতুক। তারই কিছু পাঠকদের জন্য একত্রিত করেছে eআরকি।

অলংকরণ: মৌমিতা শিকদার

১.

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া সাবেক এক পাকিস্তানি সেনা তার নাতির কাছে যুদ্ধের স্মৃৃতি রোমন্থন করছিল—
নাতি: দাদু, যুদ্ধের সময় তুমি তো একজন সেন্ট্রি ছিলে। রাতে পাহারা দিতে তোমার ভয় করত না?
দাদু: মাঝেমধ্যে করত।
নাতি: কখন?
দাদু: যতক্ষণ না আমি ঘুমিয়ে পড়তাম।

২.
ইয়াহিয়ার সেনারা কি ডগ স্যান্ডউইচ খেত?
—না। পাউরুটি তাদের সহ্য হতো না।

৩.
একদিন পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পের সামনে একটা ছোট্ট বাঙালি ছেলে একটা ছাগল চরাচ্ছিল। খানসেনারা ভাবল, ওর সঙ্গে একটু মজা করা যাক। একজন সেনা বলল, ‘কি হে, নিজের ভাইকে এত জোরে জোরে পেটাও, এত নির্দয় কেন তুমি?’
ছেলেটা বলল, ‘কী করব? না পেটালে তো এত দিনে খানসেনাদের দলে গিয়ে ভিড়ত।’

৪.
বাংলাদেশি সেনাদের সঙ্গে গুলিবিনিময়কালে একবার সব পাকিস্তানি সেনা দৌড়ে পালাতে লাগল। হতভম্ব জেনারেল চিত্কার করে বললেন, ‘যাও সবাই, আবার যার যার পজিশনে ফিরে যাও। তোমরা দৌড়াচ্ছ কেন?’
‘কারণ, আমরা উড়তে পারি না।’

৫.
জেনারেল ইয়াহিয়া রাগান্বিত হয়ে এক সেনাকে বরখাস্ত করে দিয়ে বললেন, ‘আমি নিশ্চিত, আর্মি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর তুমি আমার মৃত্যু কামনা করবে, যাতে করে তুমি আমার কবরের ওপর থুথু নিক্ষেপ করতে পারো।’
সৈন্যটি বলল, ‘না স্যার। বরখাস্ত হওয়ার পর আমি আর লাইনে দাঁড়াতে চাই না।’

৬.
পাকিস্তানি এক ক্যাপ্টেন প্রায় নাচতে নাচতে এসে জেনারেলকে বললেন—
: স্যার, আমি এইমাত্র এমন একটা জিনিস আবিষ্কার করেছি, যা ৫০ জন মুক্তিসেনার সঙ্গে লড়তে সক্ষম।
জেনারেল: কী সেটা?
: ২০০ জন পাকসেনা।

৭.
জেনারেল ইয়াহিয়া আসছেন সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট পরিদর্শনে। মূল ফটকের পাহারায় আছে এক সেন্ট্রি।
ক্যাপ্টেন: জেনারেল এলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবে।
সেন্ট্রি: ইয়েস স্যার।
এক ঘণ্টা পর—
ক্যাপ্টেন: জেনারেল কি এসেছেন?
সেন্ট্রি: নো স্যার।
দুই ঘণ্টা পর—
ক্যাপ্টেন: জেনারেল কি এসেছেন?
সেন্ট্রি: নো স্যার।
অবশেষে তিন ঘণ্টা পর জেনারেল ইয়াহিয়া এলেন।
সেন্ট্রি: ফাজিল কোথাকার! কোথায় ছিলি তুই এতক্ষণ? ক্যাপ্টেন তোকে খুঁজছে।

৮.
পাকিস্তানি নৌপ্রধান: তা, তোমার সেনারা কেমন?
সেনাপ্রধান: ওরা অনেক সাহসী।
নৌ: আমি দেখতে চাই।
সেনাপ্রধান এক জওয়ানকে ডেকে বললেন, ‘ওই যে ট্যাংকটা আসছে, ওটাকে গায়ের জোরে থামাও।’
‘পাগল নাকি!’ বলে জওয়ানটি চলে গেল।
‘তুমি যে বলেছিলে ওরা অনেক সাহসী?’ নৌপ্রধান বললেন।
সেনাপ্রধান: কজন জওয়ান জেনারেলের সঙ্গে এভাবে কথা বলতে পারবে?

৯.
একজন পাকিস্তানি নতুন কর্নেল তার নতুন অফিসে এসেছেন। একজন সেনা এসে দরজায় নক করতেই কর্নেল টেলিফোনে কথা বলতে শুরু করলেন, ‘ইয়েস প্রাইম মিনিস্টার, ইয়েস, আমি এখনই আসছি।’
এরপর সেনাটির দিকে তাকিয়ে কর্নেল জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী চাই?’
সেনা: স্যার, আমি আপনার টেলিফোনটা ঠিক করতে এসেছি।

১০.
এক পাকিস্তানি সার্জেন্ট ২০ জন সেনাসদস্যের একটি দলের উদ্দেশে বললেন, ‘আমি ঠিক করেছি, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে অলস যে, তাকে সবচেয়ে সহজ কাজটা দেব। কে সবচেয়ে অলস? ১৯ জন সদস্যই হাত তুলল। সার্জেন্ট হাত না তোলা সদস্যটিকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুমি হাত তুলছ না কেন?’
সৈন্য: স্যার, হাত তুলতে কষ্ট হয়।

১১.
একদিন সকালে পাকিস্তানি সেনারা তাদের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে গিয়ে জানতে পারল, আজকে বন্দুক চালনার প্র্যাকটিস হবে না। সেনারা খুশি মনে তাঁবুতে ফিরে যাচ্ছিল। কিন্তু একটু পরেই তারা শুনল, রোজকার মতো তাদের শারীরিক ফিটনেসের প্র্যাকটিস হবে। শুনে এক সেনা বলল, ‘দেখো, বাঙালি সেনাদের উদ্দেশে আমরা গুলি ছুড়তে পারব কি না, তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু, ওরা গুলি করলে দৌড়াতে পারব কি না, তা নিয়ে সবাই চিন্তিত।’

১২.
একজন পাকিস্তানি কোস্টগার্ডের কাছে একটি মেসেজ এল।
‘হ্যালো! হ্যালো! আমরা আমাদের একটি বিমানের সঙ্গে সব যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছি। দয়া করে আপনি আরেকটি প্লেন পাঠিয়ে ওটাকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করুন।’
‘বিমানটিকে সর্বশেষ কখন, কোথায় দেখা গেছে?’
‘এটা বলা যাবে না। সিক্রেট।’

১৩.
এক পাকিস্তানি জওয়ান গেছে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। কোনো কারণে সে তার হাত দুটো মাথার ওপর তুলতে পারছিল না। ডাক্তার বললেন, ‘সমস্যা নেই। তুমি পাস। আত্মসমর্পণের আগে তোমাকে আর হাত তুলতে হবে না।’

১৪.
পাকিস্তানি আর্মি ক্যাম্পের সামনে একটি বুলেটিন বোর্ডে কিছু নামের তালিকা। এর শেষে লেখা—‘উল্লিখিত জওয়ানদের সদাচরণের জন্য সাপ্লাই রুমে সকাল নয়টায় পুরস্কৃত করা হবে। যথাসময়ে কেউ উপস্থিত না থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

১৫.
একজন পাকিস্তানি সেন্ট্রি সবে নিয়োগ পেয়েছে। তাকে বলা হয়েছে, স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি যেন ঢুকতে না দেয় এবং কেউ জোরপূর্বক ঢুকতে চাইলে তাকে যেন গুলি করা হয়। তো একদিন সেই সেন্ট্রি পাহারায় থাকাকালীন এক জেনারেল গাড়ি নিয়ে গেট দিয়ে ঢুকতে চাইলেন। জেনারেলের গাড়িতে স্টিকার নেই।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আপনি ঢুকতে পারবেন না।
জেনারেল: আমি জেনারেল খান।
সেন্ট্রি: সরি জেনারেল! আপনি ঢুকতে পারবেন না।
জেনারেল: ড্রাইভার, গাড়ি ঢোকাও।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আমি কিন্তু গুলি করতে বাধ্য হব।
জেনারেল: ড্রাইভার, গাড়ি ঢোকাও।
সেন্ট্রি: সরি স্যার! আসলে আমি চাকরিতে নতুন এসেছি তো, তাই অনেক কিছু জানি না। আপনাকে গুলি করব, নাকি আপনার ড্রাইভারকে?

১৬.
মুক্তিযুদ্ধের সময় তরুণ এক পাকিস্থানি পাইলটকে তার প্রশিক্ষক শিখিয়ে দিচ্ছিলেন, কী করে যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন করতে হয়, কী করে মিসাইল ছুড়তে হয়, কিভাবে রাডার ফাঁকি দিতে হয় ইত্যাদি।তরুণ পাইলট: কিন্তু,স্যার, আমি ল্যান্ড করব কিভাবে?
প্রশিক্ষক: ও নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।সেটা বাংলাদেশি গেরিলারাই করিয়ে নেবে...

১৭.
প্রথম পাকিস্তানি অফিসার: পাকিস্থানি আর্মি ট্রেনিংয়ে প্রথমে কী শেখানো উচিত বলে আপনি মনে করেন?
দ্বিতীয় পাকিস্তানি অফিসার: প্রথমেই শেখাতে হবে কিভাবে বিভিন্ন ভাষায় আত্নসমর্পন করা যায়।

১৮.
পাক অফিসার: কমান্ড মানতে হবে; তা না হলে গুলি করে ঘিলু বের করে ফেলব!!
পাক সেনা: তাই করেন স্যার! ঘিলু ছাড়া ও তো পাকিস্তান আর্মিতে কাজ করা যায় !!

১৯.
১ম পাক সেনা: মুক্তিদের ভয়ে সবকিছু ভুলে যাচ্ছি । কিভাবে এই রোগ সারতে পারে বলতে পারেন?
২য় পাক সেনা: কবে থেকে সবকিছু ভুলে যাচ্ছ?
১ম পাক সেনা: কে ভুলে যাচ্ছে?

২০.
পাক সেনা: স্যার আপনি পথের মাঝে এভাবে শুয়ে শুয়ে আছেন যে?
পাক অফিসার: শুয়ে আছি কি সাধে? গুলি খেয়েছি! বাঁচার আশা শেষ!
পাক সেনাঃ হারাম**! বাই*দ কোথাকার!!! তাই বলে পথ আটকে শুয়ে থাকতে হবে?

২১.
প্রথম পাক সেনা: ইনজামাম, আমার মনে হয় ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকেছে। এই ইনজামাম, তুই কি জেগে আছিস?
দ্বিতীয় পাক সেনা: না, আমি জেগে নাই।

২২.
পাক সেনা: স্যার, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের ঘিরে ফেলেছে। আমরা কি এখন দৌড়ে পালাবো?
পাক অফিসার: কী দরকার মরার আগে দৌড়ে ক্লান্ত হওয়ার?

২৩.
পাকিস্থানি সেনা: দোস্ত, আমার মনে হয় একটা চশমা নিতে হবে। আমি তো কোনো মুক্তিযোদ্ধা দেখতে পাচ্ছি না।
মুক্তিযোদ্ধা: ঠিক বলেছিস, তোর চশমা লাগবে। তোর দোস্ত এখানে নাই... তুই এখন মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটিতে।

২৪.
পাকিস্থানি কমান্ডার: মুনায়েম, তোমার হাতে ওটা কী?
মুনায়েম: বন্দুক স্যার।
পাকিস্তানি কমান্ডার: না মুনায়েম, এটা বন্দুক নয়। এটা তোমার ইজ্জত, তোমার গর্ব, এটা তোমার মা হয় মা! কামরান, তোমার হাতে ওটা কী?
কামরান: স্যার, এটা মুনায়েমের ইজ্জত, মুনায়েমের গর্ব, স্যার এটা আমার আন্টি হয়, আন্টি!

২৫.
হরহামেশা মার্শাল ল’র দেশ পাকিস্তানে তখন সান্ধ্য-আইন চলছে। সন্ধ্যা ছ’টায় কারফিউ শুরু। পৌনে ছ’টা বেজে গেছে, ত্রস্তপায়ে মানুষজন ছুটছে গন্তব্যে। সেনা চেকপোস্টের এক সৈনিক হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই বাড়ির পথে দৌড়ুতে থাকা একজনকে গুলি করে মেরে ফেলল।
সঙ্গী সৈনিকরা হতবাক। ‘তুই এটা কি করলি নালায়েক! লোকটা তো আমাদের কোনো উসকানিই দেয়নি। আর কারফিউ শুরুর এখনো পাক্কা পনের মিনিট বাকি? কোনো কারণ ছাড়াই জ্বলজ্যান্ত একজন মানুষকে মেরে ফেললি! এটা তো একাত্তরের পূর্ব পাকিস্তানও না। তুই মানুষ না অন্য কিছু?’
খুনি সৈনিকের ঠাণ্ডা জবাব, 'আমি লোকটাকে চিনি। তার বাড়ি এখান থেকে কম করে হলেও এক ঘণ্টার পথ। এই ১৫ মিনিটে বেটা কোনোমতেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারতো না। তাই... আগেভাগেই কাজ সেরে দিলাম!' কথা শেষ করে সদ্য গুলি করা রাইফেলটি পরিষ্কারে মনোযোগ দিল সে।

১২৭৭৩ পঠিত ... ১৫:১০, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৭

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

রম্য

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top