প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন পড়লাম গতকাল। প্রথম পাতায় জ্বলজ্বল করছে একটা নিউজ, ‘দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়ালো খেলাপি ঋণ।’ খবরটিকে আমরা অন্যভাবেও বিশ্লষণ করতে পারি, দেড় লাখ কোটি টাকা ঋণখেলাপি মানে সরকার ও ব্যাংকগুলো দেড় লক্ষ কোটি টাকা পায়। আরও একটু সহজ করে বিষয়টা বললে এভাবেও বলা যায়, ‘দেড় লক্ষ কোটি টাকা জমা আছে সরকারের।‘
প্রত্যেকটা ঘটনা দুইভাবেই দেখা যায়। দেড় লক্ষ কোটি টাকা ঋণখেলাইর এই ঘটনায় প্রথম আলোসহ দেশের অন্যান্য পত্রিকাগুলো ভালো দিকটা তুলে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। কিংবা এমনও বলা যায়, তারা এই ঘটনার ইতিবাচক দিকটি এড়িতে গেছে।
দেড় লক্ষ কোটি টাকার ঋণখেলাপির এই ঘটনাকে আমি দেখি বাংলাদেশের অর্থনীতির নতুন যুগের সূচনা হিসেবে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন দেশে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। মাত্র ১৪ বছরে অক্লান্ত পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে এই সরকার সংখ্যাটি নিয়ে এসেছে দেড় লক্ষ কোটি টাকা।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও করোনার পর সারাবিশ্ব যেখানে অর্থনৈতিক মন্দা পার করছে, দেশগুলোর রিজার্ভ যখন ধুকছে, শ্রিলঙ্কার মতো দেশ যখন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে—ঠিক এমন সময়ে বাংলাদেশ ঋণ খেলাপিদের কাছে দেড় লক্ষ কোটি টাকা পায়। আরও সহজ করে বললে, মাত্র ৫০ বছর আগে স্বাধীনতা পাওয়া দেশটির শুধু ঋণখেলাপিদের কাছেই জমা আছে দেড় লক্ষ কোটি টাকা। পৃথিবীতে আর কয়টি দেশ নিজেদের অর্থনীতিকে এতো অল্প সময়ে এতটা সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পেরেছে আমার জানা নেই।
মাত্র ৩০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে বাংলাদেশ একটি পদ্মা সেতু বানিয়েছিলো। আরও ৫টি পদ্মাসেতু বানানোর টাকা আমরা ঋণখেলাপিদের কাছে জমা রাখছি। একেই সম্ভবত বলে উন্নয়ন। ‘দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে’, যে যারা এইসব কথা বলবে, তাদের মুখের উপর এই হিসেবে ছুঁড়ে দিন।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন