মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়—কথাটি একসময় বহুল প্রচলিত এবং কাব্যিক ভাবমান-সম্পন্ন হলেও মাথায় রাখতে হবে সময় বদলেছে। একই কথা সময়ভেদে কখনও শোনায় চিরন্তন সত্যের মতো, কখনও আবার ক্লিশে। গবেষণা এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষের ইউটিলিটি ফুরোয় না, বরং তা ফ্লারিশ অচেনা এক জগতে—যেখানে জীবিত অবস্থায় আমাদের প্রবেশাধিকার নিষেধ।
চলে এসেছে ঐতিহাসিক ৭ জানুয়ারি। বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচন কড়া নাড়ছে ঘরের দরজায়। প্রত্যেক ভোটার এবং মনোনয়ন প্রার্থীরা একইসাথে উত্তেজিত, উদ্বিগ্ন, ভীত এবং আনন্দিত। ভোটারদের কবরে চলছে মোনাজাত, কেউ করছেন দান-খয়রাত, কেউ নিয়মিত পরিষ্কার করছেন সেসব কবর, কেউ কেউ আবার উদ্যোগ নিয়ে পানিও ঢালছেন।
কাদের আদেশে এত পরিচর্যা চলছে তা এখনও বিস্তারিত জানবার সুযোগ হয়নি। তবে টক অব দ্য টেবিল হিসেবে বেশ আলোড়ন তুলেছে কোন গোরস্থানে কার সমর্থক বেশি এ ব্যাপারে। এক গোপনসূত্রে জানা যায়, ঢাকার বৃহত্তম কবরস্থান রায়েরবাজারে নৌকার ভোটার ৮৮.৬৭%, বাকি ০৬.২৩% এবং ৫% এ এগিয়ে আছে লাঙ্গল ও ট্রাক। এদিকে আজিমপুর গোরস্থানের বেশিরভাগই ট্রাক মার্কার সমর্থক। শোনা যায়, আজিমপুর গোরস্থান যার হাত ধরে স্থাপিত হয়েছিলো তিনিও মূলত ট্রাক গোষ্ঠীর মানুষই ছিলেন। তাই ট্রাকের সমর্থকও এখানে জন্মলগ্ন থেকে বেশি। বনানী গোরস্থানে এক্সাক্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। জানা যায়, সেখানেও ট্রাক এবং লাঙ্গল সমানতালে এগিয়ে চলছে। এতে সামান্য ক্ষুব্ধ হয়ে বাকি দলটি জানায়, ‘বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের একটি ভোট সমান বাকি গোরস্থানের তিনটি ভোট। আমরা এখানেই এগিয়ে আছি। বাকি খেলা ৭ তারিখ হবে।'
আজিমপুর গোরস্থানে নতুন ভোটারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত ৪ বছর ধরে কবরবাসী হওয়া বেশিরভাগ মানুষই জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন এই নির্বাচনে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও নতুন ভোটারের সংখ্যা বাড়তির দিকেই। গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন ভোটারদের মাঝে নৌকার প্রতি আগ্রহ তুলনামূলক বেশি। প্রতি ১০০ জনে ৯৮ জনই রায় দিচ্ছেন নৌকার পক্ষেই।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, কবর থেকে শুধু মৃত মানুষই নয়, ভোটের জন্য রেডি করা রাখা আছে শতশত ডামি এবং গেম অফ থ্রোনসের হোয়াইট ওয়াকারদের মতো অসংখ্য ডেড ওয়াকার। প্রয়োজনমতো তারা যেকোনো সময় উঠে আসবে। এতটুকু বলেই বাঁকা চোখে হাসতে থাকেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলের প্রার্থী।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন