আগারগাঁও থেকে বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ গেলাম ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিটে।
নিজেই ড্রাইভ করি আমি। দুর্ভাগ্য আমার; আগে খেয়াল করিনি, মোবাইল ঘেটে মাঝপথে জেনেছি আমাদের পরম নমস্য রক্ষাকর্তা ভিআইপিরা বেশ কিছু সড়ক বন্ধ করে সংগীত সুধা পান করতে মিরপুর স্টেডিয়ামে গিয়েছেন। শুনে এক লহমায় মনের সব রাগ, ক্ষোভ উড়ে চলে গেল। উনাদের সঙ্গীত পিপাসু মনের জন্য আমরা যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটু কষ্টই না করলাম তাহলে কীভাবে হবে? এত অকৃতজ্ঞ তো আমি নই! নিশ্চয়ই সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ভিআইপিরা পরিবারকে সময় দেন, অন্য কোনো কাজের সময় পান না, তাই গান শোনার জন্য কর্ম দিবসকে বেছে নিয়েছেন। গান শোনাও তো উনাদের কাজ বা দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
তবে সুখের কথা ছিলো এই যে, গাড়িতে আজ সত্যি সত্যিই পর্যাপ্ত খাবার—দু’টো পাটিসাপটা পিঠা, তিনটা মোমো, এক প্যাকেট বিস্কিট, খাবার স্যালাইন ও এক ফ্লাস্ক চা নিয়ে উঠেছিলাম। প্ল্যানিং কমিশনের সামনে এক জায়গায় ৫০ মিনিটের মতো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় একটা পাটিসাপটা পিঠা আর দু’টা মোমো সাবাড় করলাম। আকবর আলী খানের জীবনী পড়ে ফেললাম ৩০ পাতা। বিজয় সরণিতে বসে খুললাম বিস্কিটের প্যাকেট। বিস্কিট শেষ করতে করতে আরও ৩০ পাতা শেষ করলাম বইয়ের। মহাখালি ফ্লাইওভার থেকে নামতে নামতে দেখি চা, পিঠা, মম সবই শেষ। ব্যাকআপ হিসেবে আমার পেছনের সিটের আরেকটা ছোট্ট ফ্লাস্কে গরম পানি নিয়ে নিয়েছিলাম। ড্যাশ বোর্ডের ভেতরে ছিলো কাজী টি'র টিব্যাগ। সেটা দিয়ে চা বানিয়ে পান করতে করতে চেয়ারম্যানবাড়ি। কিন্তু এরপর সব খাবার শেষ। কামাল আতাতুর্ক এখনো ম্যালা দেরি।
নাহ, পরেরবার আরও বেশি করে খাবার নিয়ে বনানী যাত্রা করতে হবে। স্পেয়ার চাকার সাথে চিড়া, মুড়ি আর গুড়ও রাখতে হবে মাস্ট।
তবে ধন্যবাদ আমাদের রক্ষাকর্তাদের। এই রাস্তায় আমাকে সারারাত বসে কাটাতে হয়নি বলে। কী বলে যে ধন্যবাদ দিবো! বসে থাকতে হলে তো আমাকে সারারাত না খেয়ে কাটাতে হতো। কী সৌভাগ্য আমার, সেই কষ্টটুকু করতে হয়নি।
থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন