বিল-মেলিন্ডার এত দ্রুত ডিভোর্স হওয়াটা কোনোভাবেই মানতে পারতেছি না।
ওদের মাঝে প্রথমে ঝগড়া হবে। হালকার ধমক, মৃদু ধমকের পর বিল মেলিন্ডারে প্রথমবারের মত কষায়ে একটা চড় দিবে। মেলিন্ডা বালিশে মুখ গুঁজে কাঁদবে। বাড়ি থেকে ফোন দিয়ে মা জিজ্ঞেস করলে বলবে, 'তেমন কিছু না মা! তোমাদের কথা খুব মনে পড়ছে। সেজন্য গলাটা ভারি।' মেলিন্ডার মা তাকে আধাঘন্টার জ্ঞান দিবে, মা আমার! জামাইর মুখে মুখে তর্ক করিস না। জামাইর খেয়াল রাখিস। ঠিকঠাক খাইতে দিস।'
কিছুদিন পর গেটস হয়তো মেলিন্ডাকে আবারো চড় দিবে। এরপর আরেকটা। দুইটা, তিনটা-চারটা।
সহ্যের সীমা অতিক্রম হলে মেলিন্ডা বাপের বাড়ি চলে যাবে।
মেলিন্ডার মা-চাচী-ভাবিরা বোঝাবে, মেয়েদের একটু মানিয়ে চলতে হয় মা। আমরাও মানিয়ে নিয়েছি। পুরুষ মানুষ একটু রগচটা থাকেই। সহ্য করতে হয়। সবার কপালে জামাইর মাইর থাকে না মা। ওগুলাকে আশীর্বাদ হিসেবে নিবি। তবেই সুখ পাবি।'
অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর মেলিন্ডাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গেটসকে রাজি করাবে মেলিন্ডার পরিবার। গেটস আসবে। একা না! সাথে বাপ-চাচাসহ ২০ জনকে নিয়ে গরু, মুরগি, রুই মাছের মাথা, খাসি দিয়ে দাওয়াত খাবে। মেলিন্ডার মা জামাইয়ের পাতে রুই মাছের মাথা তুলে দিতে দিতে বলবে, 'খাও জামাই খাও। গায়ে শক্তি পাইবা।' জামাই খাবে, মেলিন্ডার মা পাশে দাঁড়িয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবে।
সুখের সংসারের আশায় গেটসের বাড়ি চলে যাবে মেলিন্ডা। এর দুইদিন পর, তরকারিতে লবণ কম হওয়ায় তরকারির বাটিসহ মেলিন্ডার দিকে ছুড়ে মারবে বিল। কপাল কেঁটে যাবে মেলিন্ডার।
জামাইর মাইর খাওয়ার সৌভাগ্য কতজনের কপালে আছে-ভাবতে ভাবতে নিজের বড় কপালের কথা ভেবে আবারো মেনে নিবে মেলিন্ডা।
আবার মার খাবে। আবার। আবার আবার।
ডিভোর্সের কথা হয়তো মনের ভুলে একবার ভেবেও ফেলবে মেলিন্ডা। কিন্তু সমাজ, মানসম্মান, বাচ্চা-কাচ্চা, ভরণপোষণের চিন্তায় মেলিন্ডা তা মন থেকে ঝেঁড়ে ফেলে রান্না ঘরে যাবে। তরকারিতে লবণ ভালোভাবে দেখে নিবে।
একদিন হয়তো ভাত রান্না করতে দেরি হয়ে যাবে মেলিন্ডার। টেবিলে সময়মত খাবার না পেয়ে বিলের রগ আবার চটে যাবে। শাশুড়ির হাতের রুই মাছের মাথা খাওয়া শক্তি দিয়ে বিল ঝাঁপিয়ে পড়বে মেলিন্ডার উপর।
ডানহাত ভেঙ্গে যাবে মেলিন্ডার, ঠোঁট ফেটে যাবে, গলার একপাশের এক খাবলা মাংসও উঠে যাবে।
এরপর আরেকবার মেলিন্ডাকে মানিয়ে চলার বুঝ দেয়া হবে। পাশের বাসার ভাবিরা, দুপক্ষের মিউচুয়াল ফ্রেন্ডরা মেলিন্ডার ভাঙ্গা হাত আর ফাঁটা ঠোঁট জোড়া লাগানোর আগে সম্পর্কটা জোড়া লাগানোর চেষ্টা করবে। কোন কোন ক্ষেত্রে হয়তো জোড়া লেগেও যাবে।
আর না লাগলে, বিচার-সালিশ করে ডিভোর্স হতে হতে অন্তত ৫ বছর তো লাগবে।
এবার বলেন, কীভাবে মেনে নেবো এত দ্রুত ডিভোর্স হওয়া! এত তাড়াতাড়ি কি ডিভোর্স হয় নাকি, ডিভোর্স কি এতটাই সস্তা!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন