তো, ঘটনা হলো আবদার করে প্রতিবেশি দেশ মায়ানমার আমাদের কাছে সেন্টমার্টিন চেয়ে বসেছিলো। একজন বাংলাদেশি হিসেবে মায়ানমারবাসীর আবদার পূরণ করতে পারছি না বলে আমরা অবশ্যই অনেক দুঃখিত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া এবং চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য আমরা যা করা সম্ভব, সবটাই করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তবু, আমরা বাঙালি, প্রতিবেশিকে তো আমরা খালি হাতে ফিরিয়ে দিই না। হয়তো তাদের ঝামেলা যাচ্ছে, এর মানে তো এই না যে আমরা মুখ ফিরিয়ে রাখবো। চলুন, ভাবতে চেষ্টা করি, সেন্টমার্টিন না দিলেও মিয়ানমারকে আমরা কীভাবে সাহায্য করতে পারি!
১# ফ্রি ড্রয়িং ক্লাস
অবৈধ দখলের ভুল স্বীকার করতে গিয়ে মিয়ানমার জানিয়েছে, মানচিত্রের ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে। চিত্রাংকনকে মনে ধারণ করে বাংলাদেশের বুকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য আঁকিয়ে। কে জানে, ভবিষ্যতে মিয়ানমার হয়তো মানচিত্র অংকনে ভুল করে সেন্ট হেলেনা দ্বীপ কিংবা নিউইয়র্কও দাবি করে বসতে পারে। কিন্তু সব জাতি তো আমাদের মত উদার না। এমন অংকনের ভুলে আমেরিকা ছোটখাট মিসাইল ছুঁড়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রতিবেশি দেশের উপর অত্যাচার করবে তা আমরা হতে দেবো না। তাই তো তাদের জন্য আমরা ব্যবস্থা করতে পারি ফ্রি ড্রয়িং ক্লাসের। প্রিয় মিয়ানমারবাসীরা, অভিজ্ঞ চিত্রশিল্পীদের কাছে আঁকাআঁকি শিখতে চাইলে আজই যোগাযোগ করুন 'বিলকিস আর্ট গ্যালারি'তে। এখানে যত্নসহকারে রিকশা ও সি.এন.জির পেছনে নায়ক নায়িকাদের ছবি আঁকা হয়।
২# প্রতিভাবান গণিত শিক্ষক রপ্তানি
যে দেশ নিজের সীমারেখায় ভুল করে বারবার, সে দেশে গণিত শিক্ষকের অভাব স্পষ্ট। পাটিগণিত কিংবা বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি থেকে জ্যামিতি গণিতের প্রতিটি শাখায় অনন্য জ্ঞানের অধিকারি অসংখ্য বাংলাদেশি টিউটররা গণিত শেখাতে আগ্রহী। টিউশনির ব্যস্ততায় সরাসরি সময় দিতে অপারগতা প্রকাশ করা গণিত শিক্ষকরা বলেছেন, প্রয়োজনে স্কাইপিতে ভিডিও কনফারেন্সে মিয়ানমারবাসীদের গণিতে পারদর্শী করে তুলবেন।
৩# ভূমি জরিপ প্রশিক্ষণ
অবস্থাদৃষ্টে যা বোঝা গেলো, মিয়ানমারে ভূমির মাপ জোখে দুর্বলতা ইতিহাস সৃষ্টি করে দেয়। নিজ দেশের ভূমির পরিমাপে অজ্ঞতা আমাদের বাংলাদেশিদের হতাশ করেছে। আপনাদের জন্য আমরা আরও ব্যবস্থা করেছি জমির সঠিক মাপ নির্ণয়ের হাতে কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
৪# ভাসমান বাড়ি উপহার
একটু খানি সেন্টমার্টিনই তো চেয়েছে! আমরা সমুদ্রে তাদের একটু জায়গা দিতেই পারি! মিয়ানমারবাসীদের জন্য আমরা তৈরি করে দিতে পারি কিছু নৌকা৷ অভিবাসন সমস্যায় ভোগা মায়ানমার নাগরিকরা সাগরে ভেসে ভেসে সংসার করতে পারবেন। এমন সুখ আর কিইবা হতে পারে বলুন?
৫# আরও শরণার্থী ক্যাম্প
এমনিতেই আমাদের প্রতি মিয়ানমার বরাবরই উদার। তাহাদের কয়েক লাখ শরণার্থীদের জন্য আলাদা বাড়িঘর বানিয়ে দিয়েছি আমরা। এগুলো যদিও কোনো বড় ব্যাপার না, প্রয়োজনে আরও কয়েকটা শরণার্থী ক্যাম্প বানিয়ে আমরা আরো শরণার্থীকে রাখতে পারবো। আমরা অতিথিদের কখনোই অযত্ন করি না। তবে ইয়ে, ক্যাম্পে আসার আগে ছিনতাই, চুরি, খুনের মত অসাধারণ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে আসলে ভালো মানের কক্ষ পাবার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকবে।
৬# ইয়াবা ব্যবসায়ী রপ্তানি
এদিকে বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেছে ৫ গ্রাম ইয়াবা পেলেই যাবজ্জীবন কারাদন্ড। অথচ এই বড়িগুলোই কত কষ্টে তৈরি করেছেন মিয়ানমারের প্রতিভাবান 'মাদক-শিল্পী'রা। তাই চাইলেই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের আমরা পাঠিয়ে দিতে পারি মিয়ানমারে। সেই সঙ্গে যেতে পারেন কিছু ইয়াবা সেবনকারীও, তাহলে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের ঝামেলাও থাকলো না। বিজিবির গুলিও খরচ হলো না!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন