ইনসেপশান ছবিটা যারা দেখেছেন, তারা একবাক্যে স্বীকার করবেন, সিনেমার গল্পে মুন্সিয়ানা কি জিনিস দেখায়ে দিছে। স্বপ্নের ভেতর স্বপ্ন, তার ভেতরেও স্বপ্ন। এক স্বপ্নের জগতের ঘাত প্রতিঘাতে উপরের স্তরের স্বপ্নে প্রভাব পড়ে। কি দারুন!
আমাদের দেশে এমন গল্প হয় না বলেই ভাল সিনেমা হয় না, এই কথাও অনেকে বলবেন।
আসলে আমরা গল্প খুঁজে নিতে পারিনা। চোখের সামনেই কিন্তু গল্প থাকে। জাস্ট সেটা দিয়া সিনেমা বানাইয়া উঠতে পারিনা আমরা।
এইবার একটা দেশি ইনসেপশানের গল্প বলি!
গত দুইতিন দিন ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকছে বিএনপি-জামাত, এমন একটা সরকারি প্রচারণা ছিল। কিছু কিছু প্রমাণ আমরাও পাচ্ছি। ছদ্মবেশে অছাত্ররা ভুয়া আহত সেজে পুলিশের হাতে ধরা খেয়েছে। ওকে এইটুকু ঠিক আছে। ইনসেপশান এর শুরু হচ্ছে এর পরে, ছাত্রদের সাথে মিশে বিএনপি-শিবির নাকি আওয়ামীলীগের কার্যালয় ভাংচুর করতে গেছে। সেখানে প্রতিপক্ষ হেলমেট মাথায় যারা মাইর দেয়া শুরু করলো তারা কারা? তারাও নাকি জামাত-বিএনপি। তারমানে ছাত্রদের ভিড়ে যারা ছিল তারা শিবির হলে, ছাত্রদেরকে পিটানোর দলেও শিবির ছিল?
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের কাউকে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের কেউ নখের আঁচড়ও মারেনি বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। আবার আন্দোলনের ছবি নিয়ে বলা হচ্ছে এগুলো প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর ছবি। বিএনপি-জামাতের কাজ। আবার ফটোগ্রাফারকে তুলাধুনা দিচ্ছে যারা, বলেন তো তারা কারা? ইয়েস তারাও বিএনপি-জামাত। সো বিএনপি জামাত পুলিশের সাথেও হাটতেছে, আবার পুলিশের মাইরও খাইতেসে। ইন্টারেস্টিং!
এত কোলাহলে শুধু পাবলিক আর ছাত্রলীগকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। কাহিনীর টুইস্ট কিন্তু এখানে। দুই পক্ষে যখন জামাত-শিবির ছদ্মবেশে মারামারি করছিল তখন টুক করে ১৭ জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হবার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সংবাদের সূত্রমতে তো ছাত্রলীগের সাথে আন্দোলনরত ছাত্রদের কোনো বিরোধ হয় নাই। ছাত্রলীগ নেতারা চকলেট হাতে নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদেরকে বুঝাতে গিয়েছে। আমরা খবরেও দেখেছি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, ছাত্রলীগকে এই আন্দোলনকারীদেকে বুঝানোর জন্য। আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে হেলমেটধারী জামাত শিবিরের দূর্বৃত্তদের সংঘাত হইছে। শিবিরের মাইর খেয়ে ছাত্ররা আহত হইছে বলা হচ্ছে, তাহলে ছাত্রলীগকে মারলো কারা? তাহলে কি ছাত্রলীগকে পুলিশ পিটায়ে দিল? কিন্তু তা কি করে হয়! ছাত্রলীগ আর পুলিশ মিলেই তো ভুয়া ছাত্র ধরলো একসাথে। গুজব ছড়ালো কারা সেই তালিকা হচ্ছে, গুজবের জন্ম দিলো কারা সেটা কেউ খুঁজছে না। কার্যত স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এখন রাস্তায় তাদের প্রতিবাদ করতেছেনা, তারা স্কুলে ফিরে গেছে, তাহলে এখন রাস্তায় কারা? শিবির জামাত? তাহলে এদের পিটাচ্ছে কারা, পুলিশের পাশে হেঁটে?
বিশাল ইনসেপশান হচ্ছে রে ভাই!
কিন্তু এই গল্প নিয়া কোনো সিনেমা হবেনা। কারন আমাদের লাইফটাই সিনেমাটিক।
[eআরকি একটি স্যাটায়ার ওয়েবসাইট। নিছকই বিনোদনের জন্য এর সংবাদ প্রচারিত হয়। কাজেই একে সিরিয়াসলি নিবেন না, বিশ্বাসও করবেন না। পড়ুন, এরপর ভুলে যান।]
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন