প্রাচ্যের অক্সফোর্ড হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি তাদের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ এবং বাইরের গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। ঘটনাটিতে ঢাকার মানুষজন নাখোশ হলেও একে সাধুবাদ জানিয়ে পাশ্চাত্যের তথা আসল অক্সফোর্ড এমনকি বিষয়টিকে অনুকরণ করে নিজেদের ক্যাম্পাসেও একই কাজ করেছে তারা।
‘ঢাকা যদি পারে, তবে আমরাও পারি’ অক্সফোর্ডের প্রশাসনিক কমিটির এক মুখপাত্র বলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, আমাদের ক্যাম্পাসে এখন থেকে কেবল ছাত্র, শিক্ষক এবং ক্যাম্পাসের অনুমোদিত বিড়াল প্রবেশ করতে পারবে। জরুরি প্রয়োজনের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে, তবে অবশ্যই আগে থেকে নোটিশ দিয়ে। না হলে বাইরের কোনো চাকাও ঘোরাতে দেওয়া হবে না।
অক্সফোর্ডের গেটগুলোতে ইতোমধ্যেই রোবট-গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে, যেগুলো প্রতিটি পরিচয়পত্র স্ক্যান করে শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিদের ঢুকতে দিচ্ছে। এক বিক্ষুব্ধ প্রাক্তন ছাত্র বলেন, আমি ২৫ বছর ধরে এই ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করি। এখন ঢুকতে চাইলে আমাকে প্রমাণ করতে হবে আমি আসলেই এখানে পড়েছিলাম! আমার ডিগ্রি সার্টিফিকেট দেখানোর জন্য বলা হয়েছে। অক্সফোর্ডের কাছে এমন স্বাধীনতাই কি আমরা চেয়েছিলাম?
অন্যদিকে, অক্সফোর্ডের ভেতরে চায়ের দোকানের মালিকরা এ সিদ্ধান্তে বেশ হতাশ। তারা জানিয়েছেন, বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ হওয়ায় তাদের দোকানে সবুজবাত্তি খুলে লালবাত্তি লাগিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে কিছু আঞ্চলিক পায়রা এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। এক পায়রা অভিযোগ করে বলেন, আমরা তো বহিরাগত নই, আমরা তো বরাবর এখানেই ছিলাম। এখন আমাদেরও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না!
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক এই সিদ্ধান্তকে ‘ঢাকার প্রতি অক্সফোর্ডের গভীর শ্রদ্ধার প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ঢাকার এই উদ্যোগ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা আমাদের ক্যাম্পাসকে আরও সুসংহত করতে চাই। তবে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কোনো বহিরাগত যেন আমাদের গাছের পাতা পর্যন্ত ছুঁতে না পারে। ছুঁতে হলে আগে চান্স পেয়ে দেখাতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা মন্তব্য করেছেন, আমরা শুনেছি ঢাকার ক্যাম্পাসে এখন এত শান্তি যে, পাখিরাও গান গাইছে। আমরা সেই পরিবেশ আমাদের ক্যাম্পাসেও দেখতে চাই। অবশ্য এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে খুশি হয়েছেন অক্সফোর্ডের শিক্ষার্থীরা। এমনকি ক্যাম্পাসে হার্ভাড না অক্সফোর্ড, অক্সফোর্ড অক্সফোর্ড স্লোগানে আনন্দ মিছিলও করেছেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত পরীক্ষামূলক। যদি কার্যকর মনে হয়, তবে ঢাকার প্রশাসনকে পাল্টা চমকে দেওয়ার জন্য আরও কিছু অভিনব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।