সম্প্রতি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নামে মাছ ও ফল চুরির মামলা হয়েছে। ফলচুরির ব্যাপারটা পড়তেই আমাদের মনে পড়ে যায় নজরুলের কবিতার সেই লিচু চোরের কথা। কেমন আছে সে? সেও কি তবে কোনো ঝামেলায় পড়লো? তার নামেও কি তবে মামলা হল? এসব ভাবতে ভাবতে আমরা খুঁজতে থাকি সেই লিচু চোরকে। অবশেষে আমরা জানতে পারলাম, তিনি এখন ফার্মগেটে ফলের দোকান দিয়েছেন। ফার্মগেটে গিয়ে তার খোঁজ করতেই আমরা পেয়ে গেলাম তাকে। বসে বসে গামছা দিয়ে মাছি তাড়াচ্ছিলেন। যদিও ফলের উপর কোনো মাছি ছিল না।
জিজ্ঞেস করলাম, মাছি তো নাই, তাড়াচ্ছেন কী?
- এইডা হইলো ভাইজান নয়া সিস্টাম। মাছি তাড়াইলে লোকজনে ভাবে ফলমূল গাছেত্তন কেবল ছিইড়া আইনা থুইছি।
- আসলে ঘটনা কী?
- ঘটনা হইলো ভাইজান, এক মাস পর আসলেও এই ফলগুলানরে এমুন তরতাজাই দ্যাখতে পাইবেন। এখন বলেন, আপেল কয় কেজি লাগবো?
- আমরা আসলে ফল নিতে আসিনি। আপনার সাক্ষাৎকার নিতে এসেছি। আপনিই তো নজরুলের সেই লিচু চোর?
- জী ভাইজান৷ সবই অতীত। অহন ফলের ব্যাবসা করি। (নিচু গলায়) আসলে ভাইজান করি ফর্মালিন দেওনের ব্যবসা। হেহেহে..
- আগের পেশা ছাড়লেন কেন? নজরুলের ভয়ে?
- কি যে কন ভাইজান! কবিতা লেখছিলো বইলাই তো আরো উৎসাহ নিয়া চুরি করতাম... চোরদের কত্ত সম্মানডা দিছিলো। বড় ভাল লোক।
- তাহলে চুরি করা ছাড়লেন কেন?
- মামলার ভয়ে ভাইজান। ফল চুরির মামলা হইলো খতরনাক মামলা। বর্তমানে এই ব্যাপারে সরকার হার্ড লাইনে আছে ভাইজান।
- তাহলে যে বললেন, ফর্মালিন দেয়ার ব্যবসায় নেমেছেন...
- (দাঁত বের করে হাসতে হাসতে) জী ভাইজান, এইটা হইলো শান্তির ব্যবসা। মনের সুখে ফর্মালিন মারি। কুনো মামলাও নাই, ভয়ও নাই।
- বাহ, এখানে তো তাহলে মালীর ঘাড়ে পড়ার ভয় নেই...
- (লাজুক হেসে) ওই ঘটনা বইলা আর লজ্জা দিয়েন না ভাইজান৷ মামলা খাওনের ভয়ে ওই কাজ ছাইড়া অহন আমি সাবলম্বী। হেহেহে...
- সেই মালির কোনো খোঁজ জানো?
- উনার বাগানের ফলই তো কিন্না আনি। লোকটা আমারে অহন ভালা পায়। আগে চোর বইলা গাইল দিতো। অহন তমিজ কইরা কথা কয়। ফর্মালিনের ব্যাবসাডা আমারে টাকাও দিছে সম্মানও দিছে।
আমরা আর কথা বাড়ালাম না। হতাশ চোখে ফিরে যাচ্ছি, এমন সময় লিচু চোর আমাদের ডেকে বললেন, 'ভাইজান, এক কেজি আপেল নিয়া যান৷ এইডা আমার উপহার।' আমরা বললাম, 'রেখে দিন। এক মাস পরে এসে নিয়ে যাবো। নষ্ট তো আর হবে না।'
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন