ডাইভিং ফুটবলেরই অংশ। তবে এবারের বিশ্বকাপে নেইমার সেটাকে নিয়ে গেছেন শিল্পের পর্যায়ে। নেইমার এবার কেউ ফাউল করলে পড়ে যান, না করলে পড়ে যান, আশেপাশে কেউ থাকলে পড়ে যান, না থাকলে পড়ে যান এমনকি হয়তো মাঠে একা একা দাঁড়িয়ে থাকলেও পড়ে যান! আমরা ধরে নিচ্ছি, তিনি ডাইভ করেন না। তবে তিনি কেন পড়ে যান? ভাবতে বসেছিল eআরকির পড়া এক্সপার্ট ভালো ছাত্রদের দলের সদস্যরা।
১# সাবধানের নেইমার
নেইমারের নামের মধ্যেই আছে মার। আর ফুটবল খেলার সময় কারো জার্সির পিছনে মার লেখা থাকলে বাকিরা খেপবেই। আগে নেই লেখা আছে কি নেই সেটা কেউ দেখে না। সবাই নেইমারকে মারতে আসে। তাই নেইমারের কাছাকাছি কেউ আসলেই নেইমার বুঝতে পারে তার খবর আছে, তাইকে হালকা স্পর্শেই নেইমার পড়ে যায়, মাঝে মাঝে তো বিপক্ষ দলের প্লেয়ারের নিঃশ্বাসের বাতাসেই সে পড়ে যায়। যাতে ঐ প্লেয়ার তাকে মারতে না পারে। কারণ নেইমার খুব ভাল করেই জানে, সাবধানের নেইমার।
২# হরলিক্সের অভাব
নেইমারকে অনেক বিজ্ঞাপনেই দেখা গেছে, কিন্তু কখনো তাকে হরলিক্স বা কোনো এনার্জি ড্রিংকের বিজ্ঞাপনে দেখা যায়নি। হয়তো তিনি ঠিকঠাক কখনোই এগুলো খেতে পারেননি, তাই টলার, স্ট্রংগার, শার্পারও হতে পারেননি। এ কারণেই হালকা ধাক্কা কিংবা দমকা বাতাসেই তিনি হুটহাট পড়ে যান!
৩# পড়ায় মনোযোগ
নেইমার যখন ছোট ছিলেন, তখন তিনি সারাদিন ফুটবল নিয়ে মজে থাকতেন। পড়ালেখা কিছুই করতেন না। তখন নেইমারের এক মুরব্বি তাকে বলেছিলেন, 'নেইমার পড়ায় মনোযোগ দে, নাইলে কোনো উন্নতি করতে পারবি না জীবনে'। কিন্তু নেইমারের ফুটবল ছাড়া অন্যকিছু ভাল লাগে না, আবার মুরব্বি মানুষের কথা ফেলাও তো যায় না। তাই ফুটবল খেলা আর পড়ায় মনোযোগ দেওয়ার একমাত্র উপায় হিসেবে নেইমার খালি একটু পর পর পড়ে যান!
৪# সমস্যা নেইমারের বুটে
আসলে এই পড়াপড়ির ব্যাপারে নেইমারের কোন দোষ নাই, সব দোষ নাইকির। ওরা নেইমারের যে বুট বানিয়েছে সেই বুটের নিচ দিয়ে হইলো পিছলা। তাই দৌড়াতে গেলেই একটু পর পর নেইমার পড়ে যায়। সম্ভবত এটা বাংলাদেশের আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ষড়যন্ত্র!
৫# নেইমার সিনেমার মতো থ্রিল পছন্দ করেন
ছোটবেলা থেকেই নেইমারের আইডল ছিলেন পেলে আর লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও। নেইমার সবসময়ই চেয়েছিলেন তার আইডলদের নিজের ভেতরে ধারণ করতে। পেলের মতো ফুটবলার তিনি হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু ডি ক্যাপ্রিওর মতো অভিনেতা হয়ে ধুন্ধুমার অ্যাকশান দৃশ্যে অভিনয় করার তো আর সুযোগ নেই! অথচ তার মধ্যে দুটো সত্ত্বাই আছে, ফুটবলার আর অভিনেতা! তাই খেলতে যখনই নেইমারের মধ্যে অভিনেতা সত্ত্বা জেগে ওঠে, তখন তিনি ডি ক্যাপ্রিওর মতো অ্যাকশান নেন, মানে লাফিয়ে পড়ে যান!
৬# নেইমার আসলে সাঁতারু হতে চেয়েছিলেন
নেইমারের এই ছিপছিপে শরীরে সাঁতার ভাল হয়। ফুটবলার না হলে নেইমার অবশ্যই সাঁতারু হত।
আর সাওপাওলোর তিয়েতে নদীর পাশে বড় হওয়া নেইমার সাঁতারটাও পারে বেশ ভালই। আর যে সাঁতার পারে সে ডাইভও ভাল দিতে পারবে, খুব স্বাভাবিক। তাই নেইমার মাঝেমাঝে বিশ্ববাসীকে তার সাঁতারের দক্ষতা দেখায় মাঠে।
৭# মাঠে বিশ্রাম নেয়ার জন্য...
ফুটবল খুব পরিশ্রমের খেলা, টানা নব্বই মিনিট দৌড়ানো কোনো চাট্টিখানি কথা নয়। মাঝখানে কেবল হাফটাইম যা দেয় তাতে কখনই বিশ্রাম হয় না। ঠিকঠাক ফুটবল খেলতে আরো বিশ্রামের প্রয়োজন। তাই নেইমার বিশ্রাম নেবার জন্যে একটু পর পর শুয়ে পড়েন। আর বোকা রেফারিরা সেগুলোকে ফাউল ভেবে...
৮# তিনি আসলে ডাউন টু আর্থ
নেইমার যখন বড় ফুটবলার হয়ে উঠছেন, তখন বড়রা তাকে বিনয়ী বা ডাউন টু আর্থ হতে বলতেছিলেন। সেই কথার ভুল অর্থ বুঝেই আজ এই অবস্থা কিনা, কে জানে!
বি:দ্র: এটি একটি কল্পনাপ্রসূত গবেষণা। এখানে কাউকেই মানসিকভাবে ট্যাকল করার চেষ্টা করা হয়নি। তাই নেইমারের মতো ডাইভ দিয়ে খামাখা ফাউলের আবেদন না করার জন্যে অনুরোধ থাকলো।