হলুদ রঙের প্রতি আমার দুর্বলতার কারণে অন্যদের যেসব সমস্যা

৪০৭৩ পঠিত ... ১৮:১০, জানুয়ারি ২০, ২০১৯

ফেসবুকে এইটা ওইটা লিখে মাঝেমধ্যে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ি। একবার হলুদ কালারের প্রতি আমার ফ্যাসিনেশন নিয়ে এক স্ট্যাটাস লিখলাম, সেই স্ট্যাটাসের অংশবিশেষ ছিলো এইরকম-
‘... সাদা আর হলুদ রঙের প্রতি আমার অস্বাভাবিক দূর্বলতা আছে। মাঝে মাঝে এই দূর্বলতা অসুস্থতার পর্যায়ে চলে যায়।’

এবার জার্মানিতে আসার আগে আমার উপর দায়িত্ব পড়লো, যেকোন কালারের ফ্রেবিক ডাই করার জন্য। যথারীতি আমি কটকটে হলুদ কালার সিলেক্ট করলাম।
‘এই বিখাউজ কালার এর অর্ডার কে দিলো?’ – কোম্পানির সিইও অবাক।
‘এই কালার এখন চলতাছে ভালো, নতুন ফ্যাশন, খুব ট্রেন্ডি’ – আমি নিজেকে ডিফেন্ড করলাম। প্রমাণ হিসেবে আমার হলুদ কালারের নতুন কেনা সোয়েটার দেখিয়ে দিলাম।
‘হুমম, হতে পারে’। যেহেতু আমি বলেছি, তিনি কনভিন্সড।

সব থেকে বেশি সাফারার আমার স্ত্রী।

রিকশা করে ঘুরছি দুইজনে, সাইড দিয়ে সাদা অথবা হলুদ কালারের ড্রেস পড়ে কোন মেয়ে পাছ করলে আমি হা করে তাকিয়ে থাকি।
‘তাকাও, তাকাও, অসুবিধা নেই’। – বেচারি আমার দুর্বলতা বুঝে। আমি আমার মুখের হা বন্ধ করি।
‘আমি পাশে থাকতে অন্য মেয়ের দিকে তাকাও, তোমার লজ্জা লাগে না?’
‘মেয়ে ছিল নাকি, আমি তো হলুদের দিকে তাকাইলাম’।
‘এরপর বাথরুমে গিয়ে তাকিয়ে থাকবা নিজের ... এর দিকে’।

অপমানের একটা সীমা আছে!

আরো সমস্যা আমাকে নিয়ে যখন ড্রেস কিনতে যায়। সব কালারের ড্রেস বাদ দিয়ে আমার মন পড়ে থাকে সাদা আর হলুদের দিকে। ওয়াড্রোব ভর্তি; তারপরও আরো একটি জমা হয় কালেকশনে।

অলংকরণ: রেহনুমা প্রসূন

এই স্ট্যাটাস দেবার কিছুদিন পরের ঘটনা-

‘হলুদ রঙ আপনার প্রিয় না পলাশ ভাই?’
‘হুমম’
‘কতোটুকু প্রিয়?’
‘অনেক’।
‘তাইলে ঠিকই আছে, যেই জিনিস নিয়া আসছি এই জিনিস পাইলে আপনি খুশি হইবেন। এইযে দেখেন’।
‘কি এইটা?’
‘হলুদ কালারের জাঙ্গিয়া কালেকশান, জিনিস ভালো, H&M এর, কালারটা পছন্দ হইছে বস? হলুদের শেড দেখছেন, চারটা চার শেড’।
‘হলুদ কালারের জাঙ্গিয়া মানুষ পড়ে?’
‘সমস্যা কী? কেউ তো আর দেখতাছে না, আপনি তো আর সুপারম্যানও না যে প্যান্টের উপরে পরবেন, এইটা পরলে মনে মনে খুশি থাকবেন যে ফেভারিট কালারের জিনিস ভেতরে পরা আছে, এতে আপনার কনফিডেন্স বাড়বো। তাছাড়া আরেকটা ব্যাপারে আপনার উপরে হতাশ হইলাম বস, আপনি শুধু কালারটা দেখলেন, ভেতরের জিনিসের মাজেজা বুঝলেন না”।
‘কি জিনিস? Combed Cotton?’
‘Combed Cotton তো অবশ্যই, তারচেয়ে বড় কথা এই কাপড়ে রেডিয়াম আছে’।
‘কী আছে?’
‘রেডিয়াম, ট্রাফিকের জ্যাকেটে রেডিয়াম থাকে না, অন্ধকারে জ্বলে, ঐরকম’।
‘তার মানে এই জাঙ্গিয়া রাতে জ্বলবো?’
‘জ্বি, শুধু জ্বলবো না, ঝিলিক দিবো’।
‘মনে কর, বাসায় কারেন্ট নাই, আমি এইটা পরে এক রুম থেকে আরেক রুমে হাটলে টর্চ লাইটের কাজ দিবো?’
‘টর্চ লাইটের কাজ না দিলেও হারিকেনের কাজ দিবো ফর শিউর, ইন্টারেস্টিং না? আমি জানতাম তো আপনার পছন্দ হইবো। এই জিনিস রাস্তায় পইড়া রাতে দাড়াইবেন, সবাই গাড়ি থামাইয়া আপনারে সালাম দিবো। এক্সক্লুসিভ’।

এই এক্সক্লুসিভ জিনিসের চার পিস আমার কাছে ইনটেক্ট অবস্থায় আছে, কারো লাগলে আওয়াজ দিয়েন।

৪০৭৩ পঠিত ... ১৮:১০, জানুয়ারি ২০, ২০১৯

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top