ইদানিং নাকি সব প্রশ্ন আউট হয়ে যায়।
আমার ভাগ্নে এসএসসিতে এ প্লাস পাবার পর, আমার আপাকে ফোনে বলতে শুনলাম ‘জ্বি ভাবি, এ প্লাস পাইছে মাশাল্লাহ, আপনার ছেলেও এ প্লাস? খুব খুশি হলাম ভাবি। পরীক্ষার আগে কয়টা প্রশ্ন হাতে পাইছিলো? একটা মাত্র? আমার ছেলে তো দুই সাবজেক্টের পাইছিলো মাশাল্লাহ’।
এই হলো অবস্থা।
তবে হ্যাঁ, না মানে ইয়ে, আমাদের সময়ও প্রশ্নপত্র আউট হতো।
ড্রইং পরীক্ষায় কী আসবে তা আমরা আগে থেকেই জানতাম, তারপরও যে খুব একটা লাভ হতো তা না, এক একজন বন্ধুবান্ধব ক্লাসিক্যাল লেভেলের আর্টিস্ট।
একবার স্যার ক্লাস টেস্টে বলে দিলেন, যার যা পছন্দ তা আঁকতে। আমরা সবাই কেউ গ্রামের দৃশ্য, কেউ সূর্য ডোবা, কেউবা আবার আম, কাঠাল– যে যার খুশিমতো আঁকতে লাগলাম।
আমাদের এক বন্ধু শিবলী ছিল মাস্তান টাইপের ত্যাদড়। মনে আছে, সে পাইপগানের ছবি এঁকে জমা দিয়েছিলো, পাইপগানের পাশে আবার দুইটা ছোটো ছোটো বিচি, বিচিগুলা কি জিজ্জেস করাতে বলছিলো ‘বিচি না বেটা, এইগুলা গুলি আকছি, গুলি ছাড়া পাইপগান দিয়া কি বা... ফালামু?’
আরেক ভূগোল ক্লাসে, এক প্রেমিক বন্ধু এক মনে তার প্রেমিকার স্কেচ আঁকছিল। ক্লাস নিতেন চমন আরা আপা, বন্ধুকে হাতে নাতে ধরার পর ছবি দেখে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকতে গেলে তো পাঁচটা পেন্সিল ভাঙ্গে, এই ছবিতো ভালোই আঁকছো, কোন হাতে আঁকছো?’
বন্ধু খুশি হয়ে ডান হাত দেখায়।
মনে আছে, আপা বেত দিয়ে সেই হাতে ড্রইং করছিলেন।
আরেকবার স্যার আরেক বন্ধুর ড্রইং দেখে প্রশংসা করতে লাগলেন, ‘সবুজ রঙের লাউটা ভালো আকছোছ, রঙটা ফুটছে ভালো, শীতের কচি লাউ’।
পাশ থেকে এক বিটলা বন্ধু বলে, ‘স্যার, ওয়তো লাউ আঁকে নাই, কাঁচা আম আকতে গিয়া লাউয়ের মতো হইছে’।
আর্টিস্ট এর প্রতিবাদ করে- ‘মিথ্যা কথা স্যার, আমারে মাইর খাওয়ানোর লাইগ্যা বলতাছে, আসলে ডাব আঁকছি’।
সবাই কনফিউজড!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন