আর একটা দিন দেমাগ দেখিয়ে নিন। ট্রাম্প শপথ নেবার পরেই আবার আওয়ামীলীগ অফিসে দীপাবলির আলো জ্বলে উঠবে, আকাশ বাতাস মথিত করবে জিতবে আবার নৌকা গানটি। পুষ্প বৃষ্টিতে সয়লাব হবে শেখদের প্রত্যাবর্তন পদরেখা। সেনানিবাসে ঝিলিক দেবে তারেক সিদ্দিকীর রুপালি টাকরেখা। টেলিভিশনের পর্দায় হেসে উঠবে এমিরেটস গিল্ডের শব্দ সৈনিকেরা। ত্রিরঙ্গা নিশান ওড়ানো বিমান বহরের প্রোপেলারের শব্দের মাঝে শোনা যাবে ত্রাতার আগমনী গান। তিনি আসছেন।
বীণা সিক্রির আত্মজৈবনিক ‘ফিনিশিং ইয়ারস’ হট কেক হবে। গণভবনের পুকুরের কই মাছ দিয়ে প্রগতিশীলতার নুডলস রান্নার রেসিপি আসবে কেকা ফেরদৌসী শোতে। জাফর ইকবালের মানভঞ্জন করে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসবে শিবিরে লুকিয়ে থেকে সদ্য আত্মপ্রকাশ করা ছাত্রলীগ। এবার জগন্নাথের সাবেক ভিসি মীজান সত্যিই যুবলীগের দায়িত্ব নেবেন। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুখরিত হবে কওমি জননীর মুগ্ধ আশেকে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নবতিপর প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীকে অনুরোধ করবে, আপনি চোখ বন্ধ করুন; আপনাকে শহীদ মিনারে নিয়ে যাব।
সুভাষ সিংহ হাতে ইটের মতো ভারী কখানা বই নিয়ে পাণ্ডিত্য জাহিরে এসে বসবে তোতলামির আসরে। সাড়ে চুয়াত্তর জার্নালে শ্যামল হাসির জোয়ার উঠবে। এডিটর'স গিল্ডের শনিবারের চিঠি নিয়ে বাবু কালচার কফিতে চুমুক দেবে।
খোকন সোনা চুলে জেল দিয়ে টিশার্ট পরে হৃদয় হরণ করবে ভাটিয়ালি পল্লীর। ফুলের বাগানে দাঁড়িয়ে কাদের এর ক্যান্ডিট ফটোতে মোনালিসার হাসি খেলা করবে। গুলফাত ম্যাম আরাফাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বলবে, এবার এত গুলি এনেছি; যা শতবর্ষের শান্তি নিয়ে আসবে।
হারুনের ভাতের হোটেলের বাইরে লেখা থাকবে, নো বিফ মিট। বেনজির গলায় সোনার চেইন পরে কাপ্তাই লেকে স্পিড বোটে ঘুরবে সকাল সন্ধ্যা দুপুর। মুনিরের ‘লুকিং ফর জঙ্গীজ’ বক্স অফিস হিট করবে।
বসুন্ধরার কন্ঠ সার্কাসের মঞ্চে আবার ডিগবাজি দিয়ে বুবুর কন্ঠ হয়ে উঠবে। বাংলা একাডেমিতে আবার মাথা পিছু দেড়শো মুজিব গ্রন্থ লেখার রাখাল রাজাদের উন্মেষ ঘটবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হ্যাকারেরা আবার বেস্ট সেলার হবে।
গোয়েন্দা সংস্থা এবার লালবাগ কেল্লায় আয়নাঘর বানাবে। বাল বদরের করা তালিকা অনুযায়ী লাল বিপ্লবীর লিস্টি করে এক এক করে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে আগরতলা ও বর্ধমানে।
রবীন্দ্র জাতীয়তাবাদের উন্মাদনা উঠলে জাতীয়তাবাদ বিরোধী রবীন্দ্রনাথ হারেরেরে আমায় ছেড়ে দেরে দেরে বললে; তাকেও ক্রসফায়ারে দিয়ে ডামি রবীন্দ্র গুণের কবিদের নিয়ে বসবে জাতীয় কবিতা উৎসব।
জুলাই বিপ্লবের পর ছয় মাস চুলে কলপ না করে যাদের পক্ককেশ দৃশ্যমান হয়েছিলো ইউটিউবের আফসোস শোতে; তারা আবার কলপ রহমানের মৃদু লাস্যে হাজির হবে প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরের প্রশ্ন নয় প্রশংসা করতে এসেছির আসরে। তাদের বাতিল হওয়া প্লট পদবী ফিরে পাবার ক্রন্দনে স্মিত হেসে তিনি বলবেন, প্লট ও পদ হারানোর বেদনা আমি বুঝি।
জুলাইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষ্ণ চূড়া ফুলের হাসি দেখে যে ললিতা আপা সব কিছু শান্ত হয়ে যাবার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনি এবার প্রক্টর হয়ে পদ্ম ফোটাতে ট্রাক্টর চালাবেন।
৫ আগস্টের পর ফিফথ ডিভিশনের বিপ্লবী হয়ে যারা পিঠ বাঁচিয়েছিল; তারা আবার ঝাঁকের কই ঝাঁকে মিশে যাবে। পলাতক আওয়ামী ফিরে দেখবে ঝাঁকের কই দখল করেছে নতুন আওয়ামীলীগ। তারা তখন মূল্যায়ন হলো না লীগ বলে কান্নায় ভেঙে পড়বে।
যেসব হিন্দুরা লাল বিপ্লবী; ভারতের মিডিয়ায় গিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডার জবাব দিয়েছে; তাদের গোত্রচ্যুত করে তাদের ওপর বাকশাল থ্রি পয়েন্ট ও হামলা চালালে; রিপাবলিক বাংলার ময়ূখ বলবে, এদের সংখ্যালঘু পরিচয় গৌণ; আসল পরিচয় হচ্ছে, এরা পূর্ব পাকিস্তান চেয়েছিল।
শ্রীরাধা দত্ত বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে একটা ভাঙা বাড়ির ছবি দেখিয়ে কাঁদবেন অনেকক্ষণ; প্রপিতামহের জমিদারির গল্পটা, তিনি কতটা প্রজাপ্রাণ ছিলেন, দিদিমা গরিব মুসলমানদের চাল ডাল দিয়ে সাহায্য করতেন; ইত্যাদি গল্পে উপস্থিত প্রজাদের চোখে অশ্রু এনে দিলে; দর্শকের মাঝে গুঞ্জন উঠবে, লর্ড কর্নওয়ালিশই ভালো ছিলেন।
চট্টগ্রামে ইসকনের পথ নৃত্যে কয়েকটি এমেরিকান তরুণ-তরুণী নেচে নেচে বলবে; উই উইল মেইক বাংলাদেশ গ্রেট এগেইন।
ইসলামি বক্তারা ইউটিউবে কওমি জননীর বংশ লতিকা নিয়ে আলাপ করবে, উনারা বাগদাদ থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের বঙ্গালে না এলে ইসলাম ধর্মের কথা কেউ জানতেই পারত কী।
উনি আবার তাহাজ্জুদ নামাজ সেরে সাকিবকে ফোন করবেন, আজকের ক্রিকেট ম্যাচের জন্য দোয়া করতে। ফেসবুকে হারি জিতি বাংলাদেশ বলে হাপুস নয়নে ক্রন্দন শুরু হবে; আনারকলির। ম্যাচের টেনশনে সে অজ্ঞান হয়ে যাবে। প্রতিপক্ষের উইকেট পড়লেই বুবুকে ফোন করবেন পাপন ভাই। ক্রিকেট বান্ধবী জিম্বাবুয়েকে ফুল খেলায় পরাজিত করলে প্রেসিডেন্টিশিয়াল গ্যালারিতে অশ্রুসিক্ত হবে পেঙ্গুইনের দল। এস আলম নিজে দাঁড়িয়ে ম্যান অফ দ্য ম্যচ সাকিবের হাতে তুলে দেবে স্টক এক্সচেঞ্জের চাবি।
ফুটবল হাতে ব্যারিস্টার সুমন ঢুকে পড়বে মঞ্চে, ‘পুটবল বাঁছাও’ দাবি নিয়ে। সালাউদ্দিন তার মাথায় হাত রেখে বলবেন, এবার আমরা ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল খেলব।
স্লামডগ মিলিওনিয়ারদের বিরহিনীদের অপেক্ষার অবসান ঘটবে, ভারত থেকে দেশপ্রেমিক লীগের স্বামীরা ফিরলে। সেকেন্ড হোমের বাগানগুলোতে আবার ফুটবে টিউলিপ।
সাংবাদিকতায় স্বাধীনতা পদক নিতে এসে চ্যানেলে চ্যানেলে ময়ূখ শেখাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। ঢাকা ক্লাবে ময়ূখের সঙ্গে সেলফি তুলতে আকুল হবে রুপালি শেফালি সিনথিয়া ও আলপনা।
জুলাই বিপ্লবের লেনিনগ্রাদ যাত্রাবাড়িতে সামান্য বিক্ষোভ দেখা দিলে, প্রণবের ঘোড়ায় চড়া এলিট ফোর্স বলবে, খামোশ; এয়সা পিটোগে; বাপ কা নাম ইয়াদ নাহি রাহেগা।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন