বাংলা ২য় পত্র আর কাজে লাগছে না শিক্ষার্থীদের। বরং কর্মক্ষেত্রে চিঠির গুরুত্ব বেড়েছে কয়েকগুণ। সম্প্রতি এক অরাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে । এ সমীক্ষার উপর ভিত্তি করেই নীতিনির্ধারকেরা ঠিক করেছেন আর রাখা হবে না বাংলা ২য় পত্র। পরিবর্তে শুধু চিঠি লেখা নিয়ে আলাদা বিষয় যুক্ত হতে যাচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষাক্রমে। এ নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে দেশের বুদ্ধিজীবী সমাজে।
সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনির বালুখেকো চেয়ারম্যান সেলিমের জন্য লেখা ১৫টি চিঠি নিয়ে ডেইলি স্টারে প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই আলোচনায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। চিঠির গুরুত্ব ও এর রাজনৈতিক ব্যবহার নিয়ে বিশেষ তাৎপর্যও থাকবে এই সাবজেক্টে।
নিজের এক ফেক আইডি থেকে চিঠির গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি। তিনি মনে করেন, চিঠির গুরুত্ব এখন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশী। কর্মক্ষেত্রে এখন প্রতিযোগিতায় থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এক টেবিল থেকে অন্য টেবিল, রুম থেকে রুম, অফিস থেকে অফিস; সব ক্ষেত্রে অপরিহার্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে চিঠি। সরকারী, বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠানগুলো এখন কর্মীদের নতুন করে চিঠি লেখার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বাজারে টিকে থাকলে হলে চিঠি লেখা শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের ফেক আইডি থেকে দীপুমনি বলেন, ‘এইসব ণত্ব বিশান আর ষত্ববিধান পড়ে লাভ নাই। যত লাভ চিঠি লেখায়, ঠিকঠাক মতো চিঠি লেখা শিখলে জীবনে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়া যায়।‘
বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী কলিমুল্লাহ খান এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, বর্তমান আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় এটি খুবই গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত। স্কুলে আধা বেলা ছুটি প্রার্থনা থেকে শুরু করে লবিং করে চাকরি নেয়া, দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় বা ব্যাকাপ দেয়া সব কিছুতেই এখন চিঠির দৌরাত্ব! কেউ শুধু প্রয়োজনের কাজটুকু করার জন্য চিঠি ব্যবহার করছে আবার কেউ কেউ একে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এমনও ঘটেছে যে চিঠি লিখেই রাজনীতিবিদ থেকে সেলিব্রিটি হয়ে গেছেন।
শিক্ষাবিদ প্রফেসর আখতার জামানকে নিয়ে তৈরী করা হয়েছে সিলেবাস প্রস্তুতি কমিটি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমুলক সিলেবাস তৈরী করা। আমরা যে দক্ষতা দরকার তা শেখানোর পাশাপাশি চিঠি লেখার জন্য প্রয়োজনীয় যে চেতনা দরকার তা ও শেখাবো। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা, সরকারী চাকরিতে বদলির জন্য আবেদন, বদলির আদেশ বাতিলের আবেদন, সরকারী প্রকল্পের বাজেট চেয়ে আবেদন, নিজের লোককে চাকরি দেয়ার জন্য চিঠি ইত্যাদি ব্যাপারে কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ভাষা ব্যবহার করে চিঠি লিখা যায় তা খেয়াল রাখতে হবে সিলেবাস তৈরীর ক্ষেত্রে।