মুন্সিগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল ক্লাসে ধর্ম থেকে বিজ্ঞানের উৎপত্তি বিষয়ে পড়ানোর সময় ধর্মানুভূতিকে আঘাতপ্রাপ্ত হন ক্লাস টেনের ছাত্ররা। তাদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন- ধর্ম আর বিজ্ঞান আলাদা বিষয়। কোন ধর্ম থেকেই বিজ্ঞান উৎপত্তি হয়নি৷ ধর্ম হলো বিশ্বাস আর বিজ্ঞান প্রমাণিত বিষয়৷ আর বর্তমান যুগের ৯০% বিজ্ঞানী ইহুদি, খ্রিস্টান। তারাতো কোরান পড়ে না। এই বক্তব্যের কারনে তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া শুরু হয়- ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, মালাউনের ফাঁসি চাই। শিক্ষকের দুই গালে জুতা মার তালে তালে৷' অভিযুক্ত শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
এমন কর্মকাণ্ডের পর কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে নীতিনির্ধারকরা। বিজ্ঞান শিক্ষাকে খোলনলচে পালটে ফেলা হতে পারে বলেও একটি অবিশ্বস্ত সূত্র মারফত জানা গেছে। ধারনা করা হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম বদলে রাখা হতে পারে ‘বিজ্ঞান ও কুযুক্তি’ বিশ্ববিদ্যালয়।
নিয়োগ দেওয়া হতে পারে নতুন ফ্যাকাল্টিও। ইতিমধ্যেই তাদের যাচাই বাছাইপর্ব চলছে। তবে যাচাইবাছাই ছাড়া বেশ কিছু আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তিত্বক্ব সরাসরি নিয়োগ দেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। তাদের ভেতর আছেন, আল্লামা মামুনুল হক (মানবিক বিজ্ঞান), মুফতি ইব্রাহীম(পদার্থবিজ্ঞান), দেলোয়ার হোসেন সাঈদী (জ্যোতির্বিজ্ঞান শিক্ষক)সহ আরও অনেকেই।
এদিকে হৃদয় মণ্ডলের এমন কর্মকাণ্ডের বেশ সমালোচনা করেন ফ্যাকাল্টিদের একজন। তিনি বলেন, ‘ওই মণ্ডল কি শিক্ষার্থীদের চেয়ে বেশি জানে নাকি? ছাত্ররা যেটা বলছে সেটা ও মেনে নেয় নাই কেন? ছাত্রদের মুখে মুখে তর্ক করে, বেয়াদব শিক্ষক। এই ধরণের শিক্ষকদের কাছ থেকে আমাদের ছাত্ররা কী শিখবে!’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অ-বিজ্ঞান সংস্থা জানান,‘এইসব বিজ্ঞান টিজ্ঞান শিখে কী হবে? দেশে যানজট কমবে? জিনিসপত্রের দাম কমবে? কেউ চাঁদে যাইতে পারবে? যদি নাইই হয় তাহলে এইসব বিজ্ঞান শিখে লাভটা কী? এরচেয়ে কুযুক্তি শিখুক, আমাদের মত রাজনীতিবিদ হতে পারবে।’
টিটু (১৫) নামের এক কলেজছাত্রও প্রায় একরকম মন্তব্য করেছেন eআরকি'র সাথে এক গোপন সাক্ষাৎকারে। টিটু জানান, ‘কোথাকার কোন আইনস্টাইন, নিউটন,গ্যালিলিও নিয়ে আপনারা পইড়া আছেন। এসব ইহুদি নাসারাদের কথা আমরা বিশ্বাস করি না। দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ছেলেমেয়েদের ব্রেইনওয়াশ চলছে। একটু চিন্তা করে বলেন তো এসব আমাদের কোনো কাজে আসে কি-না? হুদাই বিজ্ঞান শিক্ষকগুলোকে বেকার বেকার বেতন দেওয়ার কোন মানে হয় না। এরচেয়ে এই টাকা ঝাড়ফুক বিজ্ঞানের ইনভেস্ট করা যাইতে পারে।’