অনেকেই বলেন, পর্যটকদের চাপে হারিয়ে যাচ্ছে ট্যুরিস্ট প্লেসগুলোর সৌন্দর্য। তবে তার চেয়েও বড় সমস্যা, হারিয়ে যাচ্ছে পর্যটনের পুরোনো ঐতিহ্য! কক্সবাজার, কুয়াকাটাসহ সব সমুদ্র সৈকতে সূর্যকে গিলে ফেলা, হাতের মুঠোয় মুষ্টিবদ্ধ করা, আঙ্গুলের ডগায় কিংবা দুই আঙ্গুলের মধ্যে সূর্যকে পরিমাপ করার মতো ছবির পোজগুলো আর খুঁজে পাওয়া যায় না। সেই সাথে বিচ বাইক, ওয়াটার বাইক, প্যারা বাইক, স্পিড বোটের মতো আধুনিক বাহনগুলোর দখলদারিত্বে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে বিশাল গর্তের নাভিসহ ভুড়ি বের করে সৈকতে তিমি, হাঙ্গর, ফুটকা মাছের পোজগুলো।
এ ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে যান স্থানীয় আব্দুল কুদ্দুস। তিনি 'সূর্য-গ্রহণ' সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার পেছনে দায়ী করেছেন টিকটক, লাইকি, ফেসবুকের মতো অনলাইন প্লাটফর্মগুলোকে। সেই সাথে পরবর্তী প্রজন্মকে সূর্য-গ্রহণ পোজগুলোর ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করে তিনি বলেন, 'আমার বাপ দাদা থেইকা শুরু কইরা সবার হানিমুনে একটা সুরুজ খাওয়া ছবি আছিল। আমারও আছে। আফসোস, এই প্রজন্মের কাছে এইসব এখন অজানা।'
দীর্ঘ ১৫ বছর পর পরিবারসহ কক্সবাজারে ঘুরতে এসে নীলফামারির বাচ্চু আহমেদ জানান ছাত্রজীবনে কক্সবাজারে শিক্ষাসফরে এসে সূর্যকে গিলে ফেলার অভিজ্ঞতা। মোবাইলের গ্যালারি থেকে ছবিটি দেখিয়ে তিনি বলেন, 'সূর্য খেয়ে ফেলা, সৈকতে ভাসমান তিমি মাছের মতো পরে থাকা, অর্ধনগ্ন হয়ে বালিতে পুতে থাকা কিংবা সমুদ্রে আই লাভ ইউ একে তার মাঝে ইলিয়াস কাঞ্চন পোজে বসে থাকা, এগুলো আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির পোজ। শুধু বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করলেই হবে না, বিদেশি ছবি তোলার পোজের আগ্রাসন থেকেও তো নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
এই বিষয়ে বিস্তর গবেষণা এবং সেগুলোকে বিশ্ব দরবারে তুলে দরবার জন্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা চেয়ে তিনি ক্যামেরা হাতে সপরিবারে সূর্য খাওয়ায় মনোযোগ দেন।