ছাপড়ি কথাটা আমি প্রথমবার শুনি কিছুদিন আগে। সদ্য পাওয়া তথ্যে কৌতুহল বাড়ে। শব্দটা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পর থেকে শব্দটা আরও বেশি শুনতেছি। বিশেষত ইয়াং পিপলের মধ্যে এর ব্যাপক ব্যবহার দেখতেছি।
শব্দটা বাংলা একাডেমির ব্যবহারিক অভিধানে পাবেন না। পাওয়ার কথাও না। কারণ বাংলাদেশে শব্দটা ব্যবহারের বয়স অল্পদিনের। মারাঠি, কন্নড়া ও হিন্দি ভাষায় মূলত ব্যবহৃত হওয়া মধ্যভারতের একটা শব্দ কীভাবে বাংলা ভাষায় ঢুকে পড়ল? এবং ঢাকা ইয়ুথ সাবকালচারগুলাতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাইল?
আসেন, তদন্ত করি।
ছাপড়ি একটা ইন্ডিয়ান আর্বান স্ল্যাং। উৎস মধ্যভারতে—মূলত মহারাষ্ট্র আর মধ্যপ্রদেশে। আদিতে শব্দটার অর্থ ছিল ‘ছাপড়া’র স্ত্রীলিঙ্গ হিসেবে অর্থাৎ ছাপড়া ঘরের চাইতে ছোট কুড়েঘর টাইপ ঘরের নাম ছাপড়ি। তবে ছাপড়ির বর্তমান ব্যবহার এই অর্থে হয় না। এক সাবরেডিটে দেখলাম, ছাপড়ি কথাটা ছাপ্পাড় থেকে আগত। কাঁচা ঘরের ছাদ বা চালারে ছাপড় বলে। ছাপ্পার একটা কাস্ট যারা মিস্ত্রীর কাজ করে এবং ঘরের চাল ছাওয়া যাদের পেশা। এদেরকেও ছাপড়ি বলা হইত। বিশেষত ব্রিটিশরা এদেরকে ক্রিমিনালাইজ করত।
ছাপড়ি শব্দটা সাধারণত নির্দিষ্ট বয়সের ও নির্দিষ্ট ধরনের ছেলেদের বোঝায়। এদের বয়স সাধারণত ১৫ থেকে ২৫ পর্যন্ত হয়ে থাকে। ছাপড়িদের কিছু বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ ছাপড়িত্ব আছে বলে মনে করা হয়। গুগলবাবার সহায়তায় শব্দটা সম্পর্কে কিছু বিষয় জানলাম। যেমন, ছাপড়িগণ তাদের ‘উদ্ভট’ ‘রুচি’র ফ্যাশনের জন্য ‘পরিচিত’। যেমন, কটকটা উজ্বল রঙের চুল, খুব আটোসাটো বা ফিটিং হয় না এমন পোশাক, এবং ‘ক্রিঞ্জ’ মোটরবাইকের প্রতি অতি প্রেম এদের কমন বলে ধারণা করা হয়। আরও মনে করা হয় যে, তারা টিকটক ভিডিও বানায়ে থাকে।
ইয়ুথ স্পিক ও স্ল্যাং বুঝতে আমার পছন্দের উৎস আর্বান ডিকশনারি। আর্বান ডিকশোনারি অনুযায়ী, ছাপড়ি হইতেছে: ‘নিচুক্লাসের ওয়ানাবি ফাকবয়, যাদের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে, ছেড়া জিন্স, নিওন ফ্লিপ ফ্লপ স্যান্ডেল, উজ্জ্বল রঙ করা চুল, আর স্পিডিং মোটরসাইকেল; মাঝেমধ্যে উইলিও থাকে।’ (‘উইলি’ শব্দটা আমিও আজকে প্রথম জানলাম। বাইকের স্টান্টের সময় জোরে চালায়ে এসে হঠাৎ হার্ড ব্রেক কষে সামনের চাকা শূন্যে ওঠানোর স্টান্টের নাম ‘উইলি’ (wheelie) এবং পেছনের চাকা শূন্যে ওঠানোর নাম স্টপি)।
ছাপড়ি ধরনের শব্দ কিন্তু মধ্যভারতীয় ভাষার অনন্য কিছু না। অর্থ ও ভাব-ব্যাঞ্জনার দিক দিয়া ছাপড়ি শব্দটা ইংলিশ ‘ট্যাকি’ ও ‘ক্রিঞ্জ’ এর কাছাকাছি। বাংলায় বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত ‘বস্তি’র সমতূল (যেমন, ‘ও একটা বস্তি’)। বাংলায় ছাপড়ির কাজিনদের মধ্যে আছে ‘গাইয়া’, ‘ক্ষ্যাত’, ‘গ্রামের চাচাতো ভাই’ ইত্যাদি। এই বিশেষণের ক্রিয়াপদ ভার্শনও আছে। যেমন, ‘বুয়া লাগা’, ‘বস্তি লাগা’ ভালো লাগা মন্দ লাগার মতো ক্রিয়াপদ।
২০২০ সালের দিকে ইন্টারনেটে ছাপড়ি শব্দটার বহুল ব্যবহার শুরু হয়। ইন্ডিয়ান টিকটকার ও ইউটিউবারদের মধ্যে যে কাজিয়া চলতেছিলো সেখানে ইউটিউবাররা টিকটকারদের ছাপড়ি বলে গালি দেয়া শুরু করে। এরপরে ছাপড়ি সংজ্ঞার মধ্যে ক্রিঞ্জ ‘টিকটক’ কন্টেন্ট বিষয়টাও ঢুকে পড়ছে। বাংলাদেশের অপু ভাই বা প্রিন্স মামুনদের মতো টিকটক সেলেব্রিটিরা যেমন ট্রলের শিকার হইত।
ছাপড়িসূচক এইসব বৈশিষ্ট্যে নজর দিলে আমরা দেখবো—ছাপড়িত্ব বিষয়ে নানা মুনির নানা মত থাকলেও—একটা জিনিস ধ্রুব: রুচি। মনে করা হয় ছাপড়িগণ রুচিশীল না। ছাপড়ি কথাটা মূলত টেইস্ট বা রুচির ঘাটতি বুঝাইতে ব্যবহার করা হয়। আর্বান স্ল্যাং হিসেবে এটা মূলত বোঝায়, সমাজের ‘স্ট্যান্ডার্ড’ ফ্যাশন, ভাষা ও কালচার বোঝে না কিন্তু ফ্যাশনেবল ভাব ধরতে চায়—এমন ‘ক্ষ্যাত’ পিপল।
এই ধরনের অভিব্যক্তি আসলে কাজটা কী করে? কেউ যদি আপনারে বলে, গাইয়া, ক্ষ্যাত, গ্রামের চাচাতো ভাই, সে আসলে কী মিন করে?
তার আগে চলেন, রুচি জিনিসটা বোঝার চেষ্টা করি। আর সেই বোঝাবুঝির ভিত্তিতে ছাপড়ি ধরনের শব্দের কালচারাল পলিটিক্সকে দেখার চেষ্টা করি।
অদ্ভুত বিষয় হইতেছে, এইরকম মৌলিক ও অতি-পরিচিত একটা বিষয় হওয়া সত্ত্বেও, রুচি কী? –এই প্রশ্নের কনভিন্সিং উত্তর দেওয়া মারাত্মক কঠিন; মোটামুটি অসম্ভব। অজস্র সংজ্ঞা আছে বটে কিন্তু সেইসব সংজ্ঞা এত বিচিত্র আর পরস্পর-বিরোধী যে বেশি লোক কোনো একটাতে সহমত ভাই হয় না। এখন পর্যন্ত আমার চোখে পড়া সংক্ষিপ্ত, সহজ ও মোক্ষম সংজ্ঞাটা দিছেন জার্মান দার্শনিক আর্থার শোপেনহাওয়ার। তার মতে, ‘রুচি হইতেছে ব্যক্তিস্বভাব অনুযায়ী এক ধরনের প্রয়োজনবোধ।’ ‘ব্যক্তিস্বভাব অনুযায়ী’ —তার মানে খুবই সাবজেক্টিভ জিনিস। ফলে কোনটা উন্নত রুচির বা রুচিশীল আর কোনটা অনুন্নত রুচির— এই বিষয় কোনো যৌক্তিক মীমাংসায় পৌছানো যায় না। গ্রুদেবও বলছেন, রুচির প্রশ্নে তর্ক শেষপর্যন্ত গায়ের জোরে গিয়ে ঠেকে।
রুচি ও শ্রেণির সাংস্কৃতিক রাজনীতি নিয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ও তাত্ত্বিক পিয়েরে বুরদিও। বুরদিও রুচির ব্যাখ্যা করতে গিয়া নানান রকম ক্যাপিটাল বা পুঁজির ধারণা আনছেন। তার মতে পুঁজি তিনটা বেশে হাজির থাকতে পারে। ১. অর্থনৈতিক পুঁজি। ২. সাংস্কৃতিক পুঁজি ও ৩. সামাজিক পুঁজি। অর্থনৈতিক পুঁজি সহজে টাকায় বা সম্পত্তিতে কনভার্ট করা যায়। সাংস্কৃতিক পুঁজিও, নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে, অর্থনৈতিক পুঁজি এবং এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা সম্ভব। আর সামাজিক পুঁজি মূলত সামাজিক কানেকশন, যা নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে যারে অর্থনৈতিক পুজিতে রূপান্তরিত করা যায়। বুরদিও’র সাংস্কৃতিক পুঁজির ধারণা ক্ষমতা ও প্রতিষ্ঠানের সামাজিক ব্যবস্থার সঙ্গে রুচি ক্যামনে সম্পর্কিত তা বুঝতে বুরদিওর সাংস্কৃতিক পুঁজির ধারণাটা কাজে লাগানো যায়। এখানে পয়সা মূল ব্যাপার না, ব্যাপারটা ‘রুচি’ এবং রুচিশীলতা বা রুচিহীনতার। ফলে রুচি/টেইস্ট জিনিসটারে বুরদিও দ্যাখেন ক্ষমতার প্রচ্ছন্ন চর্চা হিসাবে। ক্ষমতার বৈধতা ও সাংস্কৃতিক পুনঃউৎপাদনের যে অবিরাম লড়াই তেমন এক যুদ্ধময়দান রুচিশীলতা।
স্ট্যাটাস স্ট্রাগল প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে চলে আসতেছে। খাদ্য বস্ত্র, বাসস্থান ইত্যাদির মতো মৌলিক চাহিদাগুলা পূরণ হয়ে গেলে মানুষ মূলত তার স্টেটাসে উত্তরণের জন্যেই চেষ্টা করে। সমাজে স্টেটাসের জন্য বিভিন্ন সাবকালচারের নিরন্তর লড়াই চলে। আধুনিক মানব সমাজরে স্টেটাসের নিরন্তর যুদ্ধময়দান হিসেবেও পাঠ করা যায়।
এই লড়াই রুচি, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন স্টেটাস-মার্কার দিয়া চলে। একেক ধরনের রুচি একেক সময় সমাজে আধিপত্য বিস্তার করে চলে। প্রতিদ্বন্দ্বী নানা রকম রুচি লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। স্টেটাসের এই লড়াইয়ে ভাষাও গুপ্ত ও প্রকাশ্য এবং নানা সূক্ষ্ম ও মোটা কায়দায় সোশাল ডিসটিংকশন তৈরির হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। ছাপড়ির মতো শব্দ নির্দিষ্ট সাবকালচারকে কুপোকাত করতে হেল্পায়। এই লেন্সে দেখলে আপনারে ছাপড়ি বলা মানে আপনারে পরোক্ষে নিচু ক্লাসের—শূদ্র বা অস্পৃশ্য বলা। আপনার সফিস্টিকেশন নাই। এমনকি যথেষ্ট পয়সাপাতি হইলেও ইজ্জতের বাটখারায় আপনি তলানির দিকে।
বাংলায় ছাপড়ি ধরনের শব্দের সাম্প্রতিক বহুল ব্যবহার অন্তত দুইটা বিষয়ের ইশারা দেয়।
১. লায় হিন্দির ব্যাপক প্রভাব মিক্লা ও আপার মিক্লাদের মধ্যেও পড়া শুরু করছে। মজার ব্যাপার হইতেছে, এক সময় বাংলার প্রধান ও ডমিনেন্ট সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীগুলা উর্দুর এমন বিরোধিতা করছে, —কিছুমাত্রায় এখনও করে— যারে মোটামুটি ভাষাবর্ণবাদ বলা যায়। অথচ এখন উর্দুই হিন্দির আলখাল্লা পইরা বাংলার সদর দরজা দিয়া হরদম ঢুকতেছে (হিন্দি আর উর্দু মূলত একইভাষা। রাজনৈতিক কারণ দুইটা ভিন্ন লিপিতে লেখা হয়)। নতুন প্রজন্ম বারিশ, সুকুন, বাবা কি পারি, হালদি নাইটি ইত্যাদি কথা এত অনায়াসে বলে যে তাদের নৈমিত্তিক শব্দ ভান্ডারের অংশ হয়ে গেছে। উর্দু, হিন্দি বা হিব্রু যাই হোক—আমি বাংলার শব্দ ভান্ডারে যেকোনো ভাষার শব্দের অবাধ প্রবেশ ও লেনদেনের পক্ষে, তবে বাংলায় উর্দু নিয়া আপত্তিওয়ালাদের চেহারা মুবারক আমার দেখতে মঞ্চাইতেছে।
২. ছাপড়ি ধরনের শব্দের রমরমা সমাজে প্রকট শ্রেণি বিভাজনের প্রতিফলন। ভাষা বা শব্দ কেবল ভাব আদানপ্রদানদের প্রতিকী চিহ্নমালামাত্র না। ভাষার সঙ্গে শ্রেণি ও ক্ষমতা গভীরভাবে জড়িত। এই ছাপড়ি শব্দটার ব্যবহার খেয়াল করেন।
ছাপড়ি শব্দটা মূলত কারা ব্যবহার করে?
আর্থিক দিক দিয়া মিক্লা, আপার মিক্লা ও আপার ক্লাসের জেন-জি।
ছাপড়ি শব্দটা কাদেরকে নির্দেশ করতে ব্যবহার করে?
আর্থিক দিক দিয়া লোয়ার ক্লাস বা নতুন পয়সা হওয়া ক্লাসের মানুষজন।
আর্থিক দিক দিয়া এরা গরিব বা নিম্নবিত্ত; বড়জোর নিম্নমধ্যবিত্ত তবে তারা নিজেদেরে ধনী ও খান্দানি দেখাইতে চেষ্টা করে; চেষ্টা করে কিন্তু করুণভাবে ব্যর্থ হয়। তাদেরকে প্রায়ই ওয়ানাবি মনে করা হয় যারা এলিট/অভিজাতদের বৈশিষ্ট্য আর আচরণ অনুকরণ করতে চায়। কিন্তু পারে না।
নানা মাত্রার প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্য শ্রেণিবিদ্বেষও এই ক্ষেত্রে কাজ করে। আমি ঢাকার স্কুলে দেখছি, এক বন্ধু আরেক বন্ধুরে মজা করে বলতেছে, হালা বস্তি! কিছুদিন আগে জেন-যি মেয়ের ফেসবুক একটা ক্যাপশন দেখলাম। সে সার্কাজম করে ক্যাপশন দিছে: বুয়া লাগতেছে! মামলাটা প্রায়শ পুরানা পয়সা ও নতুন পয়সার—খান্দান ও ইজ্জতের চিরন্তন দ্বন্দ্ব আকারেও পাঠ করা যায়, যেখানে রুচিশীলতা নামের অস্ত্রে সাধারণত পুরনা পয়সাওয়ালা ক্ষমতার চর্চা করে।
এবার অস্বস্তিকর একটা প্রশ্ন তুলি।
আচ্ছা, এই যে ছাপড়ি বলে যাদেরকে দেগে দেওয়া হইতেছে, এই যে ক্ষ্যাত পিপল, গাইয়া লোকজন, এদের অপরাধটা কী?
কোনো শ্রেণির পোশাক আশাক স্টাইল এগুলা অনুকরণ করতে চাওয়া তো কোনো অপরাধ না। তাহলে?
আপনি দেখবেন এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। হয়তো বলবেন, এদের ফ্যাশন সেন্স, রুচি ইত্যাদির দিক দিয়া ক্ষ্যাত। মানে এরা রুচিশীল না কিংবা অরুচিকর। নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদের ভাষায় এদের মধ্যে দেখা যায়, ‘রুচির দুর্ভিক্ষ।’
কিন্তু এরা কার রুচির বাটখারায় রুচিশীল বা অরুচিশীল?
রুচি তো নানা রকম। আর রুচির কোনো সার্বজনীন স্ট্যান্ডার্ড নাই এবং রুচির সার্বজনীন কোন মানদন্ডও তৈরির সম্ভাবনাও নাই। রুচির কাজিয়া মানব সভ্যতার চিরন্তন কাজিয়া। দাস স্পেক জরথ্রুস্ট্রা-তে নিটশে লেখেন— 'বন্ধুরা, আমারে বলেন তো, রুচি ও রুচিশীলতা নিয়া বিবাদ কি নাই? আসলে জীবনটাই হইতছে রুচি ও রুচিশীলতা নিয়া বিবাদ। রুচি: একই সাথে দাঁড়ি, পাল্লা, আর মাপনদার; করুণা সেইসব লোকের জন্যে যারা দাঁড়ি, পাল্লা ও মাপনদাররে নিয়া বিবাদ ছাড়া বাঁচতে চায়'।
ছাপড়ি শব্দের সাম্প্রতিক বহুল ব্যবহারে আমরা মূলত শ্রেণি-বিভক্ত সমাজের রিনিউ করা বিবাদই দেখতেছি।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন