১২ বছর ১০ মাস ১৩ দিন বয়স যার, সে পরীক্ষায় ভালো করতে করবে কোচিং, স্কুলের টিফিনে চটপটি খাবার টাকার জন্য মায়ের সাথে করবে ঝোলাঝুলি, বিকেলে বন্ধুদের সাথে মাঠে গিয়ে ফুটবল পেটাপেটি। ঠিক সেই বয়সেই ভারতের চেন্নাইয়ের রমেশবাবু প্রজ্ঞানানন্দ হয়ে গেল গ্র্যান্ডমাস্টার। যেটা হতে মানুষের লাগে প্রচুর ‘প্রজ্ঞা’ আর অভিজ্ঞতা। বিশ্বের ইতিহাসেই এরচেয়ে কমবয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পেরেছেন চারজন। এর আগে দশ বছর দশ মাস বয়সে হয়েছিলেন আন্তর্জাতিক মাস্টার। অত কম বয়সে অবশ্য আন্তর্জাতিক মাস্টার আর কেউই হতে পারেননি।
ভৈসালি আর প্রজ্ঞানানন্দ, দুই ভাইবোন। তামিল অঞ্চলে বাবার নামটাও ছেলেমেয়ের নামের সাথে জুড়ে যায়, তাই তাদের নাম হয়ে দাঁড়াল রমেশবাবু ভৈসালি আর রমেশবাবু প্রজ্ঞানানন্দ। ভারতের বিখ্যাত দুই দাবা প্রডিজি ভাইবোন। ভারতের দাবায় বয়সভিত্তিক যা কিছু চ্যাম্পিয়নশিপ, তার অধিকাংশই এই দুইজনের করায়ত্ত।
মা-বাবার সাথে দাবা প্রডিজি ভাইবোন প্রজ্ঞা-ভৈসালি
গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাবার পর অনেকেই সেই রেটিঙের আশেপাশে ঘুরতে থাকেন। কখনও একটু বেশি, কখনও একটু কম। প্রজ্ঞানানন্দ সেপথ মাড়াননি। তরতরিয়ে বাড়ানো শুরু করলেন রেটিং। আস্তে আস্তে চ্যালেঞ্জ জানানো শুরু করলেন সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারদের। আর ১৮তম জন্মদিন যখন, তখন তিনি নিজেই সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারদের একজন।
একটা টুর্নামেন্টের আগে দাবা খেলোয়াড়ের প্রস্তুতি এক ব্যপক কর্মযজ্ঞ। বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতির ব্যপকতা অনুমান করাই যায়। সেই প্রস্তুতিটাই অসুস্থতার কারণে নিতে পারেননি প্রজ্ঞানানন্দ। দেখা যাচ্ছে, এই প্রস্তুতি দিয়েই তিনি বিশ্বকাপের ফাইনালে!
ফাইনালে ম্যাগনাস ও প্রজ্ঞার প্রথম রাউন্ডের খেলা ড্রয়ের মাধ্যমে শেষ হয়
এত কম বয়সে, মানে ১৮ বছর বয়সী আর কেউ দাবা বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠেননি। সামনে মহাপরিক্রমশালী ম্যাগনাস কার্লসেন। প্রজ্ঞা যেভাবে সব হিসাব-নিকাশ পালটে দিচ্ছেন, কে জানে, সবচেয়ে কমবয়সে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবার রেকর্ডটাও এবার হয়েই যায় কিনা!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন