হাজার বছর ধরে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। আমরা অনেকেই জানি অনেক ক্ষেত্রেই নারীর অবদানকে অবহেলা করা হয়। এমনকি বিজ্ঞানের শাখাতেও এই বৈষম্য প্রাচীনকাল থেকেই লক্ষনীয়।
জীবনের প্রতিটা পদক্ষেপে নানারকম বাধা পাওয়া সত্ত্বেও মেয়েরা সবসময়ই নিজেদের সামনে আসা বাধাকে উতরে গিয়েছেন এবং নিত্য নতুন সৃষ্টিতে নিজেদের মেধার ব্যবহার করেছেন এবং প্রমাণ করেছেন তারা কোনো দিক দিয়ে পুরুষের চেয়ে কম নন।
নারী দিবসকে সামনে আজ রইলো ৫জন নারী বিজ্ঞানীর গল্প যারা বদলে দিয়েছেন নারীদেরকে নিয়ে সবার দৃষ্টিভঙ্গি এবং করেছেন বিশ্বকে জয়।
মেরি কুরি
প্রথমেই বলতে হয় মহীয়সী এই নারীর কথা যিনি একাধারে ছিলেন পদার্থবিদ এবং রসায়নবিদ এবং তিনিই প্রথম বিজ্ঞানী যিনি দুইটি শাখায় নোবেল জয়ী হন। তার যে গবেষণা দুনিয়ায় তাক লাগিয়ে দেয়, তা হলো রেডিও অ্যাক্টিভিটি। এই গবেষণাই পরমাণু বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হয়। শুধু তাই নয়, মরণব্যাধি ক্যানসার চিকিৎসায় ব্যবহৃত এক্স-রে থেকে শুরু করে রেডিওথেরাপি আবিষ্কার তারই অবদান।
মেরি কুরি তার পুরোটা জীবন ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণে। এমনকি রেডি অ্যাক্টিভিটি নিয়ে গবেষণা করতে করতে বিকিরণজনিত রোগে ভুগে মারা যান মহৎ এই বিজ্ঞানী।
মারিয়াম মির্জাখানি
এখন বলবো সেই বিখ্যাত নারীর কথা যার গণিতের প্রতি ভালোবাসা সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। বলছিলাম ইরানের বংশদ্ভূত বিখ্যাত গণিত গবেষক মারিয়াম মির্জাখানি।
হাইস্কুল থেকেই এই গবেষকের ছিল গণিতের প্রতি ভালোবাসা এবং আগ্রহ। ১৯৯৪ সালের গণিত অলিম্পিয়াডে তিনি রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেন সবাইকে। মোট পয়েন্ট ৪২ এর ভেতর ৪১ নাম্বারের অধিকারী ছিলেন তিনি এবং এই ৪১ পয়েন্ট তাকে এনে দেয় সোনার পদক। শুধু তাই নয়, একই প্রতিযোগিতায় ১৯৯৫ সালে শতভাগ পয়েন্ট চলে যায় তার দখলে। গণিতের প্রতি তার ছিল অগাধ আগ্রহ এবং তীব্র ভালোবাসা এবং সেই ভালোবাসা থেকে তিনি পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জটিল পৃষ্ঠের গতিবিদ্যা ও জ্যামিতির উপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং হয়ে যান এই বিষয়ে একজন শীর্ষস্থানীয় পণ্ডিত। ২০১৪ সালে প্রথম নারী হিসেবে গণিতে সবচেয়ে নামী পুরস্কার ফিল্ডস মেডাল অর্জন করেন তিনি।
কিয়ারা নির্ঘিন
দক্ষিণ আফ্রিকান মেয়ে কিয়ারা নির্ঘিন যিনি বেড়ে ওঠেন দক্ষিণ আফ্রিকাতেই। দক্ষিণ আফ্রিকার এক প্রধান সমস্যা হলো খরা। এই সমস্যার কারণে সেখানে কূপগুলোতে পানি শুকিয়ে যেতো এবং বাসিন্দারের প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো। ছোটবেলা থেকে চোখের সামনে সবাইকে কষ্ট পেতে দেখে তিনি চিন্তা করেন এমন কিছু করার যাতে কূপ শুকিয়ে না যায় এবং সেই চিন্তা থেকেই ১৯ বছর বয়সী কিয়ারা নির্ঘিন অধিক শোষণক্ষমতা সম্পন্ন পলিমার আবিষ্কার করেন যা তার আকারের চেয়ে ১০০ গুণ বেশি তরল শোষণ করতে পারে। খরার সময় ফসলের জন্য পানি ধরে রাখতে কাজে লাগবে এই পলিমার। কমলা ও অ্যাভোকাডোর খোসা দিয়ে বানানো এই পলিমারের খরচও কম আর বায়োডিগ্রেডেবল অর্থাৎ যা মাটিতে মিশে যাবে।
তার এই বিখ্যাত আবিষ্কারের জন্য ২০১৬ সালে গুগল সাইন্স ফেয়ারে পুরষ্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয় কিয়ারা নির্ঘিনকে।
ক্যাথেরিন জনসন
মহীয়সী পাঁচ নারী বিজ্ঞানী নিয়ে যেখানে কথা হচ্ছে সেখানে ক্যাথেরিন জনসনকে নিয়ে কথা হবে না তা তো হতে পারে না। ক্যাথেরিন জনসন প্রথম আফ্রিক্যান-আমেরিকান নারী যিনি গ্রাজুয়েট স্কুলে যান এবং নাসার স্পেস প্রোগ্রামে যোগ দেন।
গণিতবিদ হিসেবে নাসায় কাজ করছেন ক্যাথরিন। পৃথিবীর কক্ষপথে এবং মহাশূন্যে যাওয়া প্রথম নভোযানের জন্য তিনি ট্র্যাজেকটরিজ, লঞ্চ উইন্ডোজ এবং এমার্জেন্সি রিটার্ন পাথ ইত্যাদি হিসাব করেন। এমনকি নাসার সেই দলে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী।
টু ইউইউ
ম্যালিরিয়া আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে যুগান্তকারী আবিষ্কার করেন চাইনিজ ঔষধ রসায়নবিদ টু ইউইউ। প্রাচীন চায়নার ম্যালেরিয়ার ওষুধ নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। তার আবিষ্কৃত আর্টেমিসিনিন ম্যালারিয়ায় আক্রান্ত রোগীর রক্ত থেকে প্ল্যাজমোডিয়াম জীবাণুর পরিমাণ কমায় যা লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়। এখন বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার প্রথম প্রতিষেধক হিসেবে আর্টেমিসিনিন কম্বিনেশন দিয়ে চিকিৎসা করতে পরামর্শ দেন।
২০১৫ সালে ইউইউ এবং তার দুই সহকর্মী প্রথম চাইনিজ হিসেবে ফিজিওলজি এবং মেডিসিনে নোবেল পুরষ্কার অর্জন করেন। এমনকি তিনি চায়নার প্রথম নারী
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন