বিশ্বের প্রতিটি বড় বড় ঘটনা নিয়ে পরবর্তীতে নানান বই, সিনেমা তৈরি হয়। সেখানে যে যার মতো করে উপস্থাপন করে ঘটনাকে। কল্পনা, সত্যের মিশেলে কিংবা ঘটনার ছোট কোন অংশের সত্যকে উপজিব্য করে বানানো হয় সিনেমা। নিঃসন্দেহে করোনাভাইরাস বিশ্বের ইতিহাসে একটা বড় ঘটনা। এই ঘটনার পর করোনাভাইরাস নিয়েও নানান দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বানাবে নানান সিনেমা। তারা বানানোর আগেই কোন ইন্ডাস্ট্রি কেমন সিনেমা বানাতে পারে তা ভেবেছেন পার্টটাইম নির্মাতা ফুলটাইম ফেসবুকার মিকসেতু মিঠু। আগে থেকে কাহিনী জেনে স্পয়লার হনু সাজার সুবিধার্থে eআরকির পাঠকদের জন্য তুলে ধরা সেসব। ভালো কথা, পোস্টারের সাথে এ যুগে সিনেমার গল্পের যেমন একেবারেই মিল থাকে না, এখানেও তেমনটা নেই!
হলিউড
হলিউড বানাবে অ্যাকশনধর্মী সায়েন্স ফিকশন থ্রিলার। মুভিতে দেখা যাবে, পৃথিবী ধ্বংস করার জন্য করোনা ছড়িয়েছে চায়না। সাথে ছিল রাশিয়ান গবেষকরাও। রাশিয়ান ডিফেন্স মিনিস্টার পুরা ফান্ডিং দিয়েছে। একইসাথে ভাইরাস গবেষক ও সিআইএ এজেন্ট টম ক্রুজ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একাই চীন-রাশিয়ার এই ষড়যন্ত্র রুখে দেবে। অনেকগুলা গোলাগুলি, বাইক রেস, কার চেজ, উঁচু বিল্ডিং থেকে লাফ, আন্ডার ওয়াটার ডাইভ, প্লেন থেকে লাফ শেষে পুরোপুরি ধংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে পৃথিবী।
বলিউড
বলিউড বানাবে র্যোমান্টিক ঘরানার অ্যাকশন সিনেমা। যেখানে ভারতীয় এজেন্ট হৃতিক রোশন সারাদিন দেশের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ফলে তার সাথে ব্রেকাপ হয় প্রেমিকা ক্যাটরিনার। ভারতে আসে মহামারি ভাইরাস করোনা। ভারতের ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ আবিষ্কার করবে, এই ভাইরাস ছড়ানোর পেছনে কাজ করছে একজন ক্ষমতাবান ভারতীয় মুসলমান, যার স্বপ্ন ইন্ডিয়ার অর্থনীতিকে ধংস করে দেয়া। এন্টিডোটও আছে সেই ব্যক্তির কাছে। এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ক্যাটরিনা এখন মরে তখন মরে অবস্থা। মাঠে নামবে হৃতিক রোশন। অভিকর্ষজ ত্বরণকে বুড়ো আংগুল দেখিয়ে অনেক উড়াউড়ি ফাইট ও বোম ব্লাস্টিং শেষে একাই সেই চক্রকে ধংস করে উদ্ধার করবে এন্টিডোট। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা ক্যাটরিনা নিজের ভুল বুঝতে পারবে।
তামিল
ভিলেন রজনীকান্ত হুদাই আবিষ্কার করবে করোনাভাইরাস। বিদেশিদের কাছে এই ভাইরাস বিক্রির আগে প্রয়োগ করবে নিজের দেশে। একের পর এক লোক মারা যেতে থাকবে। এ সময় এগিয়ে আসবে ভিলেন রজনীকান্তের জমজ ভাই, সেও রজনীকান্ত, তবে তার ভূমিকা নায়ক। দুই জমজ ভাইয়ের অনেকগুলো হাড়-হাড্ডি ভাঙ্গাভাঙ্গি শেষে নায়ক রজনীকান্ত মেরে ফেলবে তার জমজ ভাই ভিলেন রজনীকান্তকে। গ্রামবাসীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রজনীকান্তের গলায় পুষ্প মাল্য অর্পণের মাধ্যমে শেষ হবে সিনেমা। সিনেমার মাঝে মাঝে রজনীকান্তের হাঁটুর বয়সী এক নায়িকাকে নাচতে দেখা যাবে, যে কোন কারণ ছাড়াই রজনীকান্তের প্রেমিকা।
ঢালিউড
এই সিনেমায় দেখা যাবে, বুবলির ব্যবসায়ী বাপ মিশা সওদাগর বাইরের দেশ থেকে চোরাচালানির মাধ্যমে করোনা আমদানি করবে দেশে। সৎ পুলিশ অফিসার শাকিব খান প্রচুর দৌড়ানি দেবে মিশার দলকে। ফাঁকে ফাঁকে প্রেম চলতে থাকবে বুবলির সাথে। একটা গান হবে জিয়া উদ্যানে। আরেকটা মালয়েশিয়ায়।
এদিকে এফডিসি সংলগ্ন বস্তির লোকজন মরতে শুরু করবে। হাতিরঝিলে স্পিডবোট চালিয়ে মিশাকে ধংস করে দেবে পুলিশ অফিসার শাকিব। কিন্তু মরার আগে শাকিবকে করোনা ইনফেক্ট করে যাবে মিশা। ফলে আইসোলেশনে যেতে হবে শাকিবকে। এইদিকে মানসম্মত 'পিপিপি' না থাকায় ডাক্তাররা শাকিবের ধারে ঘেঁষতে ভয় পাবে। মৃত্যু যখন সুনিশ্চিত, সেই মূহুর্তে হাসপাতালে ছুটে আসবে বুবলি। কান্নাকাটি করে আর আল্লাহকে ডাকাডাকি শেষে শাকিবের ঠোঁটে চুমু খাবে বুবলি (ফুল টোকাটুকি)। সুস্থ হয়ে উঠবে শাকিব।