তখন আমার টিউশানি লাইফের স্বর্ণযুগ। একদিন এক স্টুডেন্টের মা আমাকে বললেন, ‘আমার ভাইয়ের মেয়েটা আসছে, এডমিশন টেস্ট দেবে। ও ঢাকা তেমন চেনে না। তুমি ওরে নিয়ে ঢাকা ভার্সিটির ক্যাম্পাসটা একটু ঘুরিয়ে নিয়ে আসো।’
স্টুডেন্টের পরিবার বাংলা সিনেমার চৌধুরী সাহেব মার্কা বড়োলোক। গল্প উপন্যাসে পড়েছি, এভাবেই গরিব শিক্ষকের সাথে বড়োলোকের মেয়েদের প্রেম হয়। প্রেম হলে ভালোই হয়—এমন চিন্তা করে আমি রাজি হয়ে গেলাম। তা ছাড়া, স্টুডেন্টের বাসার সবাই আমাকে বেশ পছন্দও করে। এই প্রস্তাবটা তারা নিশ্চয়ই ভেবেচিন্তে করেছে।
এক শুভদিনে মেয়েটাকে ঢাকা শহর দেখাতে বের হলাম। ধরি, মেয়েটার নাম আনিকা। রিকশায় যাচ্ছি। আনিকা একটা কথাও বলছে না। আমিও কী বলবো বুঝতে না পেরে চুপ করে আছি।
রিকশা শাহবাগের কাছাকাছি আসতেই আনিকা বললো, ‘ভাইয়া, একটা কথা, আমি আসলে শাহবাগ নেমে যেতে চাইতেছি, আমার বয়ফ্রেন্ড আসবে। আপনি সন্ধ্যায় আমাকে এখান থেকেই পিক কইরেন। আর আল্লার দোহাই, ফুপিকে কিছু বইলেন না। এই হেল্পটুকু করেন, প্লিজ!’
আমি থতমত খেয়ে বললাম, ‘তুমি না ঢাকার কিছু চেনো না?’
আনিকা বললো, ‘ধুর, আমি আগেও একা একা আসছি কয়েকবার। ওর সাথে দেখা করতে।’
আমি বিরসবদনে রাজি হলাম। আর কীইবা করার আছে আমার? আনিকার কথামতোই সব হলো। সন্ধ্যায় ওকে পিক করে বাসার নিচ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে বিদায় নিলাম।
পরদিন পড়াতে গেছি, স্টুডেন্টের মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কেমন ঘুরলা কালকে?’
আমি বললাম, ‘খুব ভালো। আনিকা স্মার্ট মেয়ে, আমি ওকে ঢাকা দেখানোর আগেই ও আমাকে হাইকোর্ট দেখিয়ে দিছে!’
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন