উন্নয়নের দর্শন—বিশ্বের খ্যাতনামা দার্শনিকেরা উন্নয়ন নিয়ে যা বলে গেছেন

৫২১ পঠিত ... ১৬:৩৮, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২২

Unnoyoner-dorshon

উন্নয়ন কী? আপনি প্রশ্নটি আওয়ামীলিগের বিএনপি বিষয়ক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাহেবকে যদি করেন, তার উত্তরের ব্যাপারে আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন।  

তার উত্তরের মূলভাব হবে মোটামুটি এমন—

উন্নয়ন হচ্ছে তাই যা বিএনপি আমলে হয় নাই।

এই সূত্র ধরে, 'উন্নয়ন কী?' প্রশ্নের উত্তর দার্শনিকেরা তাদের স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে কী দিতেন সেটা কল্পনা করা যাক।  

 

হিরাক্লিটাস: একই উন্নয়ন দুইবার দেখানো যায় না।

 

বুদ্ধ:  উন্নয়নের মতো যাবতীয় বস্তু বা বিষয়ের প্রতি আকাঙক্ষা থেকে মুক্তিই নির্বাণ। 

 

সক্রেটিস: উন্নয়নরে জানো।  

 

প্লেটো: একটা আদর্শ উন্নয়নের মূল এর 'উন্নয়নত্ত্ব'।

 

(র‍্যাশনালিস্ট) দেকার্ত: আমি উন্নয়ন দেখি, তাই আমি অস্তিত্বশীল। 

 

(এম্পিরিসিস্ট) জন লক: *আমার কাছে* উন্নয়ন জিনিসটা দরকারি মনে হয়। 

 

(র‍্যাশনালিস্ট ও এম্পিরিস্টদের মধ্যে সমন্বয়কারী) কান্ট: 'উন্নয়ন' হইতেছে ‘উন্নয়ন’বিষয়ে আমাদের যাবতীয় অভিজ্ঞতার সমষ্টি। 

 

(মায়াবাদী) শংকরাচার্য: আসলে উন্নয়ন বলতে কিছু নাই; জগতের সকলই মায়া।  

 

(ফেমিনিস্ট) মিনা/মেরি ওলস্টোনক্র্যাফট: আমিও উন্নয়ন দেখবার চাই, আব্বা।

 

(উপযোগবাদী) স্টুয়ার্ট মিল: উন্নয়ন বিষয়ক কর্মকাণ্ড যদি বেশিরভাগ মানুষরে সুখী করে, তাইলে উন্নয়নই ভালো।

 

(সোশালিস্ট) মার্ক্স: প্রত্যেকেরই উন্নয়ের অধিকার আছে। কেউ উন্নয়ন পাবে, তো কেউ পাবে না; তা হবে না তা হবে না।  

 

(হেগেলিয়ান) জিজেক: আমি একজন হেগেলিয়ান উন্নয়ন; আপনার কাছে উন্নয়নের ভালো থিয়োরি থাকলে, রিয়ালিটিরে ভুইলা যান।  

 

জর্ডান পিটারসন: একুশ শতকে 'উন্নয়ন' শব্দটা বামঘেঁষা, পোস্টমডার্নিস্ট একাডেমিকদের বানানো জিনিস। প্রকৃত উন্নয়ন বুঝতে চাইলে বাইবেলের বুক অফ জেনেসিস পড়েন।

 

(প্র্যাগম্যাটিস্ট/রিলেটিভিস্ট) রিচার্ড রর্টি: উন্নয়ন সেই জিনিস যারে মানুষের কাছে আপনি উন্নয়ন বইলা চালাইতে পারেন; অ্যাবসলিউট উন্নয়ন বইলা কিছু নাই।   

 

ভ্লাদিমির নবোকভ: ৩য় বিশ্বে 'উন্নয়ন' শব্দটা কোটেশন মার্ক ছাড়া ব্যবহার করা পাপ।

 

কে এম রাকিব: ঢাকা থেকে পিরোজপুর (২১৭ কি.মি) যাইতে আগে লাগতো ৭-৮ ঘন্টা। পদ্মা সেতু হওয়ায় এখন লাগে সাড়ে ৩ ঘন্টার ১টু বেশি। অথচ মিরপুর-১২ থেকে মতিঝিল (১৬.৫ কি.মি) যাইতে সময় লাগে ৪ ঘণ্টা৷ 

এটাই সাইন্স থুক্কু উন্নয়ন!

[ নোট: বিশ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী দার্শনিকদের একজন ছিলেন লুডভিগ ভিটগেনস্টাইন। দর্শনে লিঙ্গুয়িস্টিক টার্ন বলে যে জিনিসটা ঘটে গেছে তার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা এই অস্ট্রিয়ান ভদ্রলোকের। ভিটগেন্সটাইনের অতিপরিচিত বানী: A serious and good philosophical work could be written consisting entirely of jokes.

এই লেখা দর্শনের না। বরং দর্শনের বিখ্যাত লাইনগুলা নিয়া জাস্ট কিছু মজা করা এবং দর্শন পড়তে মানুষরে কিছুটা আগ্রহী কইরা তোলার চেষ্টা।

দর্শন ইতিহাসের বিখ্যাততম কিছু বাক্যের প্যারোডি করে কয়েক বছর আগে ‘ফিলসফি ম্যাটার্স’নামে একটা পেইজ একটা পোস্ট দিছিলো, এই লেখা সেই প্যারোডি ফর্মেটকে অনুসরণ করলেও, অনেক বেশি স্বাধীনতা নেয়া।

অর্থাৎ অনেক উদ্ধৃতি অ্যাড করা হইছে যা ওখানে ছিলো না, কিছু বাদও দেয়া হইছে। ফর্মেও কিছু বদল আসছে। কোনো কোনো দার্শনিকের নামের আগে ব্র্যাকেটে পরিচিতিমূলক শব্দ যুক্ত করছি, যাতে দর্শন বিষয়ে একেবারে ধারণাহীন পাঠকেরাও এই দার্শনিকদের চিন্তার মূল প্রবণতার সাথে উক্তিরে কিছুটা রিলেট করে পারে এবং ফিলসফি ১০১ লেভেলের ধারণা যাদের আছে তাদের কাছে জোক যাতে আরও স্পষ্ট হয়।]  

৫২১ পঠিত ... ১৬:৩৮, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২২

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top