আজকে আমার বান্ধবী মারিয়াকে ছেলেপক্ষ দেখতে আসবে। ও প্রথমে রাজি ছিলো না। পরে ওর গলায় ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে ওকে রাজি করাই; কেননা ওকে বারবার ওর এক্সের কাছে ফেরত যেতে দেখতে দেখতে আমি বিশাল ক্লান্ত। প্রতিবার যাবে আর লাথি খেয়ে এসে আমার গলা ধরেই কানবে। এবার আমি মুক্তি চাই।
এবারে ওকে আগে বলেই রেখেছিলাম যে, ‘আর যদি দেখি ওই গাঁজাখোরকে তুই মাফ করছিস তাহলে তোরে আমি গাঙ্গের জলে ভাসাবো।‘
যাইহোক সকাল থেকে আমি ওদের বাসায়। আন্টি একা সামলাতে পারবেন না তাই আমি হাজির। ওদিকে ছেলেরা আসবে বিকেলে। কাজকর্ম সেরে দুপুরের দিকে মারিয়াকে রেডি করা শুরু করলাম।
ভ্রু কুঁচকে মারিয়া আমাকে বললো, ‘আমি এই বিয়ে করবো না।‘
কথাটা শুনে ওকে বললাম, ‘আমিইই করবো যা, কিন্তু বিয়ে করতে যাবার সময় তোমাকে পুঁতে রেখে যাবো যাতে তোমার গাঞ্জাখোরের কাছে যেতে না পারো। বিয়ের পরে অন্তত আমি শান্তি চাই। আর ওরা দেখতে আসতেছে। আসলেই বিয়ে হয়ে যায় না।‘
এদিকে বিকেল হতে হতে সবাই চলে এসেছে। মারিয়া যাতে ওর এক্সকে ফোন দিতে না পারে তাই আমি ওর ফোন নিয়ে ওর সাথেই বসে থাকলাম। ঠিক করলাম ওকে নিয়ে একবারে মেহমানদের সামনে যাবো।
আমি মারিয়াকে নিয়ে ড্রইংরুমে গেলাম। রুমে যেতেই মনে হলো আমার ব্যাকগ্রাউন্ডে ধুমতানা নানানা বাজছে। মারিয়া আর আমি দুজনেই অবাক! কেননা মারিয়াকে যে দেখতে এসেছে সে আমার এক্স রাসেল।
আমাদের দুজনকে দেখে রাসেল মনে হলো অনেক বড় শক খেলো। একবার আমাকে দেখে আরেকবার মারিয়াকে। আমি চুপ করে তাকিয়েই আছি তখন হঠাৎ আমার এক্সের মা বলে উঠলেন, ‘আরেহ তুমি ছোঁয়া না?’
আমি আন্টিকে কী বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। আন্টি যদি কিছু বলে বসেন? তাও আন্টিকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আন্টি আপনি চেনেন আমাকে?’
আন্টি বললেন, ‘হ্যাঁ চিনি তো। আমার ছেলের সাথে তোমার ছবি দেখেছি আমি।‘
আমি এবার তাকিয়ে দেখি মারিয়ার বাসার সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে আমি উনাদের কিডনি নিয়ে বেচে দিয়েছি। কেউ কিছু বলবে বলবে এমন সময়ে আন্টি মারিয়ার ফ্যামিলিকে বললেন, ‘আরে তেমন কিছু না। ও তো রাসেলের জুনিয়র। রাসেল বলতো ও ওকে একদম ছোট বোনের মত দেখে আর আমার রাসেলেরও তোহ বোন নাই তাই বোনের মত ওকে ভালোবাসতো। আমি ওর ছবি দেখেছি এজন্য চিনি ওকে।‘
কথাগুলো শুনে আমি স্থির চোখে তাকিয়ে আছি রাসেলের দিকে। রাসেল পারছে না উঠে দৌড় দিয়ে পাঙ্খা দিয়ে নিচে নামতে; কারণ প্রেম চলাকালীন রাসেলই আমাকে সবসময় বলতো, ‘আমার মা তোমাকে তার রাসেলের বউ হিসেবে মেনেই নিয়েছে ছোঁয়া।‘
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন