রাতে গোসল করতে ঢুকে দেখি সিগারেটের প্যাকেট প্যান্টের পকেটে। বের হয়ে আবার রুমে আসতে ইচ্ছা করলো না। তাই বাথরুমে জানালার পাশে প্যাকেট রেখে গোসল শেষ করি। গোসল করে বের হলাম কিন্তু প্যাকেট নিতে আর মনে নাই।
কিছুক্ষণ পরে হুট করে মনে পড়লে দৌড়ে বাথরুমে যাই। গিয়ে দেখি প্যাকেট নাই।
হুট করে মনে পড়লো আমার পরে মনেহয় আব্বা বাথরুমে গিয়েছিলেন।
দেখলাম ভদ্রলোক তসবিহ ছড়া গুনতেছেন আর আমার দিকে ট্যাড়া ট্যাড়া চোখে তাকাচ্ছেন।
উনি শিওর প্যাকেট মেরে দিছেন। কী বলবো বুঝতেছি না। বুকটা ফেটে যাচ্ছে! এক প্যাকেট সিগারেট। ব্যাক পেইনের কারণে এমনেই ফ্লোরে পড়ে থাকি। এই রাতে আর নিচে নামা সম্ভব না।
আম্মারে বললাম, ‘আব্বারে জিজ্ঞেস করেন বাথরুমে কিছু পাইছে আমার?’
আম্মা বললেন, ‘বাথরুমে আবার কী রাখছোস? টাকা?’
বললাম, ‘ওই এমনই কিছু। জিজ্ঞেস করেন কিছু পাইছে কিনা।‘
আম্মা আব্বাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিছু পাইছো রায়হানের?’
আব্বা তসবিহ গুনতে গুনতে সুরা পড়তেছেন আর চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বা না কী বললেন কিছুই বুঝলাম না।
চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করতেছে! এ কেমন বাপ? ওনার দরজার সামনেই ওনাকে দেখায়া দুই হাত তুলে দাঁড়িয়ে আছি। বুঝাচ্ছি, আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিচ্ছি!
ভদ্রলোক আমার দেখাদেখি নিজেও দুই হাত উপরে তুলে ফেললেন!
মানে কী!
উনি হাত তুলছেন কেন? উনি কি ছেলের সিগারেট চুরির জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন?
এমন বাপই কি চেয়েছিলাম আমি?
রাতে ভদ্রলোকের রুম থেকে সিগারেটের গন্ধ ভেসে আসলে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে শুনি, আম্মা বলতেছেন, ‘ছেলের সিগারেট মাইরা খাও তোমার লজ্জা করে না?’ আব্বা বললেন, ‘ওমা তুমিই তো আমারে বাথরুম থেকে প্যাকেটটা আইনা দিলা!’
আমি জাস্ট মেঝেতে বসে পড়লাম! বুকটা চাপড়াচ্ছি আর ভাবতেছি আমি এই কাদের সাথে বাস করি? ওরা কারা?
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন