আপনাদের মাতামাতি, উল্লাস, উদ্দীপনা সবকিছুর প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি। হাওয়া আমার ভালো লাগেনি। হ্যাঁ এটা আমি আপনাদের সাথে একমত যে অনেকদিন পর এমন কিছু এসেছে। কিন্তু কথা থেকে যায়।
আপনাদের যদি মনে থাকে এখনো এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চলছে। দিনের একটা সময় কারেন্ট থাকে না, ভ্যাপসা গরম, বৃষ্টির কোনো দেখা নেই। এরমধ্যে মানুষ অপেক্ষা করে ছিলো একটুখানি হাওয়ার জন্য। অথচ যে হাওয়াটা এসেছে সেটা শরীর ঠান্ডা করবে কী, ঠিকঠাক মতো ঘামই তো শুকায় না। ঘাম শুকানোর আগেই দেখা যায় হাওয়া হাওয়া হয়ে গেছে।
বন্ধু উদাস হয়ে বলে, 'এই শহরে হাওয়া বিল্ডিং এর চিপায় আটকে থাকে, নড়তে পারে না।'
'ঠিক বলছিস। যে হাওয়া দালানের চিপায় আটকে থাকে সে হাওয়াকে ভালো লাগার কোনো উপায় নাই।'
হাওয়া ভালো লাগছিলো হাওড়ে। ওরে হাওয়া! সাঁইসাঁই করে শরীরের তলা পর্যন্ত চলে যাচ্ছিলো। হাওয়া ভালো না লাগার আরেকটা কারণ হলো আমার বাসাটা দক্ষিণমুখী। কতো ইচ্ছা ছিলো দক্ষিণমুখী একটা বারান্দায় বসে বসে বউ আর আমি খুনসুটি করতে করতে হাওয়া খামু। কিন্তু সেই উপায় কী রাখছে আপনাদের উন্নয়ন? বিশাল একটা বিল্ডিং উঠেছে। সব হাওয়া খেয়ে নিচ্ছে ওই লস্কর বাড়ির লোকেরা।
অবশ্য আরেকটা হাওয়া আছে যেটা হাওয়া থেকেও জনপ্রিয়। সেইটা হলো উন্নয়নের হাওয়া। যেদিকে তাকাই উন্নয়নের হাওয়া। এই হাওয়ার কারণে মিরপুরের জ্যামে বসে থাকি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অথচ গাছে একটু হাওয়া নেই।
এইটুকু শুনে বন্ধু বলে, 'ঠিকই আছে!'
'কী ঠিক আছে? এই শহর থেইকা সব গাছ কাইটা ফেলানো উচিত।'
'ক্যান?'
'তুই দেখছোস এইখানে অন্তত বিশটা গাছ আছে, অথচ কোনো হাওয়া দিতেছে না। তুই কী মনে করস? অফিসে বিশজন লোক যদি কাজ না করতো তবে চাকরী থাকতো?'
ব্যাপারটা ভালো লাগলো। যে গাছ হাওয়া দিতে পারে না সেই গাছ থেকে কী লাভ। ফলে আমরা দুই বন্ধু গরমে ঘামতে ঘামতে সিদ্ধান্ত নিলাম হাওয়া আমাদের ভালো লাগেনি আর দুর্বল হাওয়া দেয়ার জন্য শহরের সব গাছের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। আর সিনেমা হাওয়া, সেইটা এখনো দেখিনি বলে কেমন লেগেছে বলতে পারছি না। তবে সামনের সপ্তাহে দেখে জানাতে পারবো।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন