: তুমি কি বুঝে-শুনে এই বিয়েতে রাজি হইছো?
: ডেফিনিটলি। এনি ডাউট?
: তুমি জানো এর আগে আমার কয়টা রিলেশন ছিল?
: সো হোয়াট? মেশিন তো জায়গামতো আছে, না? নাকি ওটাও ক্ষয় করে ফেলছেন?
হায় খোদা! এ দেখি মানসম্মান নিয়ে টানাটানি। লিজাকে ইশারায় চুপ করতে বলে আশেপাশে তাকালাম। ক্যাফেটেরিয়ার সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এখন কি লিজার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ঠিক হবে? উত্তর বাদ দিয়ে লিজাকে নিয়ে বাইরে চলে এলাম।
বিয়ের জন্য বাসা থেকে লিজাকে ঠিক করা হয়েছে। বিয়ে-শাদির কোন ইচ্ছা নেই আমার। প্রেম করে ধরা খাইতে খাইতে ছ্যাড়াব্যাড়া অবস্থা। শেষ পর্যন্ত কঠিন সিদ্ধান্ত নিলাম। নো বিয়ে-শাদি। খাবো, দাবো, ঘুরবো। তারপর টুক করে একদিন মারা যাব। খেল খতম।
আপনারা ভাববেন না লিজাকে দেখার পর আমার সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। উলটো বিয়ে না করার ডিসিশন আরও পাকাপোক্ত হয়েছে।
দুইদিন এই মেয়ের সাথে চ্যাটিং করেছি। উদ্দেশ্য ছিল বিয়েতে কেন তার রাজি হওয়া উচিত নয়, এরকম কিছু পয়েন্ট দেখানো। কিছু পয়েন্ট লিখে রেখেছি। তার যা অপছন্দ, আমি ইচ্ছে করেই বলব আমার তা পছন্দ।
ইচ্ছে করে বলতে হয়নি। তার সাথে আসলেই আমার কোনো মিল নাই। টানা দুই ঘণ্টা চ্যাটিং করে কমন পছন্দের কিছু পেলাম না। তবু মেয়ে আমাকে বিয়ে করবে! এটা কী চিজ রে ভাই!
এবার অন্য পথে আগাতে হবে। অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। প্রথমেই শারীরিক সম্পর্কের কথা বলব। মেয়েরা এই বিষয়টা পছন্দ করে না। প্রথমে হবে লতা-পাতা, ঘাস, ফুল-ফল, প্রিয়-অপ্রিয় এসব নিয়ে কথা। এসবে আসবে ইমোশন...তারপর?. হা হা...ইউ নো দ্যাট!
যাই হোক। দ্বিতীয় দিনের চ্যাটিংয়ে লিজাকে প্রথমে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিলাম।
মেয়ে বলে, ব্যাপার না। বিয়ের আগে কী আর পরে কী। আপনার মাঠ। আপনি যখন ইচ্ছা খেলবেন। শুধু খেয়াল রাখবেন মাঠ যেন ভেজা না থাকে। হায় খোদা! এই মেয়েরে নিয়ে আমি কই যাই?
এদিকে বাসায় আমার কোনো কথা শোনা হচ্ছে না। আমি বিয়ে করব না। এই কথায় তাদের কোনো খেয়াল নাই। তারা বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আমিও মাকে রাগ করে বলেছি, নাও, ভালোমতো প্রিপারেশন নাও। এই প্রথম হয়তো মেয়েপক্ষ এসে দেখবে ছেলে পালিয়ে গেছে। তোমাদের নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ওদিকে লিজা আমাকেই বিয়ে করবে। লিজা টেক্সট করেছে। আপনার সাথে কিছু কথা ছিল। কাল বাসায় আসবেন প্লিজ? আহা! বাঁচা গেল।
বিয়ের এক মাস আগে তাহলে মেয়ের অনুশোচনা বোধ এসেছে। এখন নিশ্চয়ই তার আগের কোনো রিলেশন নিয়ে কনফেস করবে। আমি তো কোনোভাবেই মানব না। বিয়ে বাতিল!
লিজার বাসায় গেলাম। টকটকে লাল শাড়ি পরেছে। ওহে মেয়ে, এসব দিয়ে আমাকে লাইনে আনতে পারবা না। পুরাই লস প্রজেক্ট।
লিজা কথা শুরু করলো।
: আজ তো আমাদের শপিংয়ে যাওয়ার কথা, রাইট?
: ওহ হো! আমার তো একদম মনে নাই। আর মনে থাকলেও বা কী। এই বিয়েতে আমার কোনো মত নেই।
: একচুয়ালি...আমার না শপিং একদম ভালো লাগে না...মার্কেটে গেলেই আমার মাথা ঘোরে.. আই হেইট শপিং!
: বিয়ে ফাইনাল।
: স্যরি? হোয়াট?
: মানে আমি বিয়েতে রাজি!
লিজা শকড! দুই মিনিট নীরবতা। লিজা আয়নার সামনে গেল। চুল ঠিক করল। কোনো কথা নাই। আমিও নিশ্চুপ।
অ্যাঁ...কিভাবে বলি..অ্যাঁ....আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে। আমি তো আপনাকে বলেছি রান্নাবান্না তেমন পারি না। শুধু ওই বিরিয়ানিটা কেমনে কেমনে জানি ভালো রাঁধতে পারি। আজ আপনার জন্য রেঁধেছি। ক্যান আই সার্ভ ইট?
ওররে! বিরিয়ানি রাঁধতে পার তুমি? বিয়ে আজকেই হবে! কাজী ডাক। শুভ কাজে দেরি করতে নাই।
লিজা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। লাল পরী আমার দিকে এগিয়ে আসছে। লিজা, কিছু বলবা?
: আপনাকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারি?
: ইয়ে মানে....(ধুচ্ছাই...এই সময়ে লজ্জা লাগে কেন?)
লিজা আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। আহা! শান্তি।
: একটা কথা বলি?
: আবার কী কথা?
: আপনার ভুঁড়িটা অনেক কিউট!
: স্যরি?
: আপনার ভুড়িটা অন্নেক কিউট!
প্রেম আসলেই অন্ধ। তা হোক, কিছু কিছু অন্ধত্ব মনে হয় ভালো!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন