প্রেমিকা থাকার অপরাধে বাবার কপালে যা হলো...

৫৭৬ পঠিত ... ১৫:৪৩, মার্চ ২৩, ২০২২

Chithi

সকালে নাস্তার টেবিলে নাস্তা খেতে খেতে আম্মু হঠাৎ আব্বুকে জিজ্ঞেস করলো, ‘রোজিনা কে?’ আব্বু শান্ত গলায় উত্তর দিলো, ‘আমি কী জানি?’ আম্মু একটা নিঃশ্বাস নিয়ে বললো, ‘তুমি চিনো না?’ পরোটার টুকরো মুখে নিয়ে আব্বু বললো, ‘না, কে এই মহিলা? কী করছে? আমাদের অফিসের কেউ?’

আম্মু এবার উঠে রুমে চলে গেলো। আমি আব্বুর দিকে তাকিয়ে দেখি দিব্যি সে ডিম পরোটা নিয়ে ব্যস্ত।এখন যে একটা তাণ্ডব হবে এটা নিয়ে একটুও মাথাব্যথা নাই, খাওয়াটা আগে তার কাছে৷ একদম আমার মত হয়েছে। স্যরি, আমি আব্বুর মত হয়েছি আরকি। আম্মুকে দেখলাম হাতে একটা কাগজ নিয়ে হাজির। সিনেমার নায়িকাদের স্টাইলে চিঠিটা আব্বুর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বললো, ‘এটা কী?’ চিঠিটা ডিমের কুসুমের উপর পড়ে ভিজে যাওয়ায় আব্বু খুব কষ্ট পেলো। চিঠিটা হাতে নিয়ে পড়া শুরু করলো,

প্রিয় শওকত,

কেমন আছো? আমি ভালো আছি। আমি বোধহয় তোমাকে ভালোবাসি।.....

 ইতি,

 রোজিনা।

এইটুকু পড়েই আব্বু সাথে সাথে নাউজুবিল্লাহ পড়ে উঠে দাঁড়ায় গেলো। আমার মনে হলো আমার পায়ের নিচের ফ্লোর নাই। আমি যেখানে প্রেম করতে পারিনা সেখানে আমার আব্বু তার বউ বাচ্চা ফেলে প্রেম করতেছে। ইয়া আল্লাহ। আম্মু তখন বললো, ‘এই বয়সে তোমার ভীমরতি শুরু হইছে তাই না? লজ্জা করে না? মেয়ে বিয়ে দিলে জামাই চলে আসবে আর তুমি প্রেম করো? আর কে এই রোজিনা? এত লোক রেখে এমন বুড়ো কেনো পছন্দ করলো। টাকাও তোহ নাই তোমার।‘

আব্বু রেগেমেগে গিয়ে বললো, ‘তোমার কেনো মনে হলো এটা আমি? দুনিয়ায় আর শওকত নাই?’ আম্মু বললো, ‘আরেক শওকতের চিঠি আমাদের বাসায় আসবে কেন?’ আমি এবার ভেউভেউ করে কান্না শুরু করলাম। আম্মু বলা শুরু করলো, ‘নে তোদের নতুন মা আসবে, রোজিনা মা।‘ আমি কাঁদতে কাঁদতে বললাম, ‘নামটা আমার পছন্দ হয় নাই’ আর আম্মু আমাকে কষে একটা থাপ্পড় দিলো। আমার সাথে সবসময় এটাই হয়।

ওদিকে আম্মু চিঠি নিয়ে আব্বুকে দেখালো, দেখো নিচে লেখা ইতি তোমার রোজিনা। তোমার রোজিনা? সেই রোজিনার শওকত হইছো তুমি তাই না?

আব্বু এবার বিশাল রেগে গেলো। রেগে গিয়ে বললো, ‘হ্যাঁ আমি প্রেম করি। বিয়েও করবো। রোজিনা নামের কাউকেই বিয়ে করবো। দাওয়াত থাকলো সবার।‘

এবার আম্মু কান্না শুরু করলো আর মামাকে ফোন দিলো। মামা আমাদের সাথেই থাকে, কিন্তু সে গতকাল রাতে বন্ধুর বাসা ছিল। মামা আসতেই আমি তাকে সব বললাম আর মামা বললো, ‘ছি এই বাপের মেয়ে হয়ে তুই এখনো সিঙ্গেল। বাপের মান তো রাখতে পারলি না।‘ এই কথাটা বলে মামা চুপ হয়ে গেলো। কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে দৌড়ে রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে চিঠি পড়ে আম্মুকে বললো, ‘আরে এটা তো আমার! আমি একটা স্ক্রিপ্টের জন্য এটা লিখে রাখছিলাম। তুই এমন কেন রে আপা? তোর মনে হয় দুলাভাই প্রেম করবে। তার কপালে যে বউ জুটছে এটাই তো তার কপাল।‘ আম্মু মামার গালে কষে একটা চড় দিয়ে আব্বুর রুমে চলে গেলো। একদম ঠিক হইছে।

ওদিকে আব্বুকে দেখলাম আলমারি থেকে পাঞ্জাবি বের করছে৷ আম্মু নরম সুরে আব্বুর কাছে গিয়ে বললো, ‘শুনো ওটা না তওফিকের ছিল। আমি না বুঝতে পারি নাই।‘

আব্বু কথায় পাত্তা না দিয়ে পাঞ্জাবিতে আতর মাখানো শুরু করলো। এরপর পাঞ্জাবি পরে রেডি হয়ে ড্রয়িংরুমে গিয়ে আম্মুকে বললো, ‘তোমার জন্য ছোট বোন আনতে যাচ্ছি। চেষ্টা করবো কোনো রোজিনাকে আনার। না পেলে কিছু মনে করো না। রোজিনা নামেই ডেকো। আমি আসি।‘

৫৭৬ পঠিত ... ১৫:৪৩, মার্চ ২৩, ২০২২

আরও

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

গল্প

সঙবাদ

সাক্ষাৎকারকি

স্যাটায়ার


Top