ব্যাটসম্যান প্রস্তুত। বোলিং মার্ক থেকে ছুটে আসছেন গতিদানব! ব্যাটসম্যানের কপালে চিকন ঘাম! তার এখন একমাত্র চিন্তা, তিনি কি পারবেন? গতিদানবের বল বলে কথা!
এদিকে গুটি গুটি পায়ে দৌড়ে এসে টুপুস করে বলটা ছুঁড়ে দিলেন গতিদানব! ওদিকে বল দেখে ব্যাটসম্যানের কপালের চিকন ঘামটা মোটা হয়ে গেল। তিনি হেলমেট খুলে পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালের মোটা ঘামটা মুছে নিলেন। তারপর মাথার চুলগুলোকে ওমর সানির মত ঝাঁকিয়ে, বলিউডের নায়িকা মাধুরীর মতন উপর দিকে ফুঁ দিয়ে কপালের চুলগুলোকে উড়িয়ে দিলেন!
তারপর ড্রেসিং রুমের দিকে তাকিয়ে সংকেত দিলেন, হেলমেট নিয়ে ক্যাপ দিয়ে যেতে! ঠিক এমন সময় আম্পায়ার ব্যাটসম্যানের কাছে এসে জানালো, ‘বল আসার মাঝখানে ড্রেসিং রুম থেকে কেউ মাঠে নামার নিয়ম নেই! বলটা শেষ হোক, তখন হেলমেট জমা দিও।’
ব্যাটসম্যান বললেন, ‘আমি কি কিপারের পিছনে হেলমেটটা রেখে আসতে পারি?’
আম্পায়ার বললেন, ‘না সেটাও পারো না। ওদের ফিল্ডিংয়ে অসুবিধা হতে পারে!’
ব্যাটসম্যান বললেন, ‘তাহলে আমি নিজে গিয়েই হেলমেট রেখে আসি!’
আম্পায়ার বললেন, ‘সেটা করতে পারো, কিন্তু মাঠের সীমানার মধ্যে থাকবে! আর এর মধ্যে বল এসে তুমি বোল্ড হয়ে গেলে কিন্তু আউট হয়ে যাবা!’
ব্যাটসম্যান বলের দিকে তাকালো। নাহ, বল আসতে এখনো অনেক দেরি! অর্ধেক পিচই পার হয়নি!
ব্যাটসম্যান হেলমেট রেখে আসতে হাঁটা ধরলো। আম্পায়ার তার নিজের জায়গায় চলে এসে অপেক্ষা করছেন। ওদিকে বল প্রচণ্ড গতিতে ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্পের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে!
এদিকে ব্যাটসম্যান সীমানার কাছে এসে হেলমেট বদলে ক্যাপ মাথায় দিলেন! তারপর পানি মুখে দিয়ে একটু কুলকুচি করলেন। এবার হাঁটু গেড়ে বসে ঢক ঢক করে হাফ বোতল পানি খেয়ে নিলেন। তারপর ঘাম মুছে গ্যালারির দিকে তাকাতেই চমকে উঠলেন। দেখেলেন অপরূপ সুন্দরী এক মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে! জবাবে ব্যাটসম্যানও সেই অপরূপ সুন্দরীর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসলেন।
ওদিকে খেলায় চরম উত্তেজনা। বল পিচের মাঝামাঝি অবস্থায় চলে এসেছে। কিন্তু ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে পিচ ছেড়ে সীমানার কাছে গিয়ে ইস্টু পিস্টু করছে! ব্যাটসম্যান কি পারবে সঠিক সময়ে পিচে ফিরে আসতে?
ব্যাটসম্যান ঘুরে তাকিয়ে বলের অবস্থানটা দেখে নিলেন। বল পিচের অর্ধেকের বেশি চলে গিয়েছে। সময় বেশি নেই। ব্যাটসম্যান দ্বাদশ খেলোয়ারকে বললো, ‘একটা মোবাইল যোগাড় কর তো!’
দ্বাদশ খেলোয়ার এক দর্শকের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে এলো। ব্যাটসম্যান তার বাসায় ফোন দিলো।
‘হ্যালো মা, কেমন আছো? ডায়বেটিসের ওষুধ মনে করে খাইছো তো?‘
ফোনের ওপাশ থেকে মায়ের জবাব, ‘হ্যাঁ বাবা ওষুধ খাইছি! ভালোও আছি!’
ব্যাটসম্যান ছেলে এবার আমতা আমতা করে বললো, ‘মা আমি যেখানে দাঁড়ায় আছি, ঠিক তার উপরের গ্যালারির তিন নম্বর সারিতে এক মেয়ে বসে আছে। ওই মেয়েটাকে আমার পছন্দ হয়েছে! বিয়ে করলে আমি ওকেই করবো। তুমি একটু খোঁজ নাও তো!’
ফোনের ওপাশ থেকে ব্যাটসম্যানের মা জবাব দিলো, ‘হুমমম টিভিতে আমি সব দেখছি! তুমি কোন চিন্তা করো না বাবা। ওর সাথেই তোমার বিয়ে দিবো! তুমি মন দিয়ে ব্যাটিং করো বাবা! বল তো মাঝ পিচ পেরিয়ে গেছে!'
মায়ের কথা শুনে খুশি হয়ে গেল ব্যাটসম্যান! তিনি ফোনটা দ্বাদশ খেলোয়ারের কাছে দিয়ে পিচের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন। কিছুদূর এসে গ্যালারির সেই অপরূপ সুন্দরী মেয়ের দিকে তাকালেন। আহা, মেয়েটা এখনো মিটিমিটি হাসছে! এখান থেকেই দেখা যাচ্ছে! হঠাৎ কি যেন ভাবলেন ব্যাটসম্যান। তারপর আবার গ্যালারির কাছে চলে আসলেন। দ্বাদশ খেলোয়ারকে কানে কানে কি যেন বললেন। দ্বাদশ খেলোয়ার এক দর্শকের কাছে ছুটে গিয়ে কি যেন একটা এনে ব্যাটসম্যানকে দিলো। ভালো করে বোঝা গেল না কী দিলো।
ব্যাটসম্যান হেঁটে হেঁটে ক্রিজে এসে পৌঁছালো। বল কাছকাছি চলে এসেছে। আর মাত্র কয়েক হাত বাকি। ব্যাটসম্যান এবার এক অভিনব কাণ্ড করলেন। ডাউন দ্যা উইকেটে এগিয়ে এসে পকেট থেকে বের করলেন দর্শকের দেয়া একটা মার্কার পেন! তারপর প্রচন্ড গতিতে ধেয়ে আসা বলের উপর লিখলেন, ‘Hi, Will you marry me?’
তারপর ব্যাটসম্যান একটু পিছিয়ে এলেন। মার্কার পেনটা পকেটে রাখলেন। বলও চলে এসেছে প্রায়। ব্যাটসম্যান সজোরে মারলেন গ্যালারির সেই অপরূপ সুন্দরীকে লক্ষ্য করে।
ব্যাটে লেগে বল চলে যাচ্ছে সেই সুন্দরীর কাছে। গতি দানব মাথায় হাত দিয়ে আফসোস করছেন, ‘ই ই ই ই একটু জন্য বোল্ড হইলো নারে!’
বল সরাসরি সীমানার বাইরে গিয়ে সেই সুন্দরীর কোলে পড়ছে। সুন্দরীর মুখে হাসি। গ্যালারিতে উত্তেজনা। ব্যাটসম্যান তাকিয়ে আছে সুন্দরী কি বলে সেটা দেখার জন্য। ওদিকে গতি দানব তার পরের বলটি করার জন্য তার বোলিং মার্কে ফিরে যাচ্ছেন...
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন