রিকশাওয়ালা মামা: আমরা মামা ফর্মে আছি, তাই না?
আমি: বুঝি নাই মামা, কোন ফর্মে?
রিকশাওয়ালা মামা: ফাস্টে শ্রীলংকা, তারপর আফগানিস্তান, গতকাইল পাকিস্তান।
আমি: অহ, ক্রিকেটের কথা বলেন মামা?
রিকশাওয়ালা মামা: হ মামা। আমরা এই মিলাই কয়বার উঠলাম ফর্মে?
আমি: ফর্মে মানে ফাইনাল? তিনবার মনে হয় মামা।
রিকশাওয়ালা মামা: কালকে 'বারত' এর লগে খেলা!
আমি: হ!
রিকশাওয়ালা মামা: রিকশা টানমু না কাইল!!
আমি: খেলা দেখবেন?
রিকশাওয়ালা মামা: হ! মুশফিকের পাইজরের হাড্ডি ভাংসে হুনছি, তারপরও কিমনে জাম্প দিয়া ক্যাচ লইছে মামা দেখছেন?
আমি: হু!
রিকশাওয়ালা মামা: পাইজরের হাড্ডি ভাংলে কইলাম দম লইতে সেই কইস্ট মামা।
আমি: হ্যাঁ, কিন্তু ওর কি পাঁজরের হাড্ডি ভাংসে? আঙ্গুল নাইলে অন্য কিছু ভাংসে।
রিকশাওয়ালা মামা: আমার মনে কয় বুকের হাড্ডি ভাংসে! অনেকগুলা বেতার বড়ি খাইছে হুনছি।
আমি: আপনের কইলে তাইলে বুকের হাড্ডিই ভাংসে।
রিকশাওয়ালা মামা: মাশরাফি, সামনে কুটি কুটি বছরেও এমুন খেলোয়াড় জন্ম নিবো না দেশে।
রিকশাওয়ালা মামা: তবে একটা কথা, পরথমে নামা ব্যাটম্যানগুলার রান করতে হইবো।
আমি: কথা সত্য।
রিকশাওয়ালা মামা: পরথম পাচজন ঠেকাইয়া পঞ্চাশ করলে পত্যেকে কত হয়?
আমি: অনেক হয়...!
রিকশাওয়ালা মামা: ঠেকাইয়া ৩০ ওবার খেলুক।
আমি: হু!
রিকশাওয়ালা মামা: তারপর পিটাক। অফিসে দুইজন লোক ধরেন আহে নাই।
আমি: কোন দুইজন?
রিকশাওয়ালা মামা: সাকিব আর তামিম, তাই বইলা সবাই চেয়ার থিকা উইঠা যাইবো?
আমি: ঠিক...
রিকশাওয়ালা মামা: ঠেক দিতে হইবো।
আমি: সামনে গাথা আছে মামা!
গাথার ভিতরে চাক্কা ফালাইয়া স্পোক ভাংলো কয়েকটা। কিন্তু সে তাতে তেমন বিচলিত না।
রিকশাওয়ালা মামা: মাশারাফির পায়ে অনেকগুলা শিলাই দিছে হুনছি! তারপরও লোকটা কেমনে লাফ দেয়!!
আমি: মনের জোর মামা।
মনের জোর বলতে না বলতে পাশের একটা রিকশার সাথে দিলো লাগাইয়া।
রিকশাওয়ালা মামা: ঐ, কোন কথা হবে না, কালকে ফাইনাল!
অন্য রিকশাওয়ালা: আবার জিগায়! ফাইনালললল!!!
অন্য কোন সময় হইলে আমার তাদের হাতাহাতি থামাইতে নামতে হইতো। আজ দুইজনই হাসি মুখ।
রিকশাওয়ালা মামা: জিতুম না মামা???
আমি: অবশ্যই। ইয়ে, আমার বাসা সামনেই, নামাই দিয়েন!
রিকশাওয়ালা মামা: জিতুম ওর মারে বাপ!
আমি: জি, মারে বাপ।
এখনকার রিকশাগুলা আগের মত নাই। মেশিন লাগাইছে। আমারে নামিয়ে দিয়ে মেশিনের রিকশা সেই টান দিয়ে চলে গেলো। সাথে বাহারি হর্ন রিকশার।
রিকশাগুলায় মেশিন লাগাইছে ঠিকই। কিন্তু বুকের ভিতরে লোকগুলার মেশিন লাগে নাই আজও। কি অদ্ভুত মানুষগুলো!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন