কখনো স্মার্টফোন ব্যবহার করতেন না বিসিএসে ফার্স্ট অমুক, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট এক্সেপ্ট না হওয়ার জিদে বিসিএস পেলেন তমুক, বউয়ের অনুপ্রেরণাতেই বিসিএসে সেকেন্ড, বিসিএসের রেজাল্ট দেয়ার পরের কয়েকদিন এমন বিসিএস সাফল্যের গল্প পত্রিকায় দেখতেই হয়। নিচের এই পাঁচ রকম সাফল্যের গল্প শুনতেও খুব বেশি দেরি নেই...
১# জীবনেও নেটফ্লিক্সে ঢোকেননি বিসিএসে এডমিন ক্যাডারে তৃতীয় হওয়া খসরু
বন্ধুরা সবাই নেটফ্লিক্সে মুভি-সিরিজ দেখে সময় কাটাতো। শেয়ারে নেটফ্লিক্স নেয়ার জন্য তাকে বারবার জোর করতো বন্ধুরা, অনেকেই নিজেদের আইডি পাসওয়ার্ড ইনবক্স করে ফ্রিতে চালানোর প্রস্তাবও দিয়েছে। তবু পড়াশোনা থেকে দূরে সরতে চাননি বলে জীবনে কখনোই নেটফ্লিক্সে ঢোকেননি। সবসময় সাফল্যের লক্ষ্যে এমন অবিচল ছিলেন বলেই আজ সফলদের কাতারে খয়রতপুরের খসরু। বিসিএসে এডমিন ক্যাডারে তৃতীয় স্থান অধিকার করার দুর্দান্ত কীর্তি তার।
২# ফেসবুক সবসময় ডার্ক মোডে চালাতেন বিসিএস ফরেনে ফার্স্ট মোখলেস, চোখের বাকি পাওয়ারটা বাঁচিয়েছেন পড়ালেখার জন্য
বাবা-মা ফেসবুক চালাতে নিষেধ করতেন, মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে নাকি চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ফেসবুকিংটা তবু ছাড়তে পারেননি, তবে সবসময় চালাতেন ডার্ক মোডে। চোখের বাকি পাওয়ারের পুরাটাই খরচ করেছেন বইয়ের পাতায়। হোমপেজকে গুরুত্ব না দিয়ে জুবায়ের্স জিকেতেই চোখ রেখেছেন। আর তাই তো ফরেন ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন মোখলেস। অশ্রুসিক্ত চোখে এমনটাই জানালেন এই মেধাবী শিক্ষার্থীর বাবা।
চোখের চশমা খুলে আমাদেরকেও দেখালেন মোখলেস। জানালেন, চ্যাটিং করার সময় চোখের পাওয়ার বাঁচাতে অডিও ক্লিপ পাঠান এবং শোনেন। এত পড়াশোনা করে তাই চোখের পাওয়ার গত দু বছরে কমেনি, বরং বেড়েছে। আগে কত ছিল জিজ্ঞেস করতেই তিনি আমাদের পাল্টা প্রশ্ন করেন, 'তিউনিশিয়ার রাজধানীর নাম বলেন তো?'
৩# শৈশব থেকে একটাই মুভি দেখেছেন আইভি, অতঃপর বিসিএসে অভাবনীয় সাফল্য
মুভি দেখার অভ্যাসের জন্য বান্ধবীরা বিসিএসের পড়াশোনায় মন দিতে পারতো না। অনেকেরই ছিল আউট বই পড়ার অভ্যাস। তাই কখনোই সিনেমা দেখার অভ্যাস করেননি, বই পড়েননি। রেজাল্টের পর তাই আইভির মাথায়ই বিসিএসের স্বর্ণমুকুট। নিজেই বলছিলেন এই কীর্তিমান, 'জীবনে একটাই সিনেমা দেখেছি, শশাঙ্ক রিডেম্পশন। শুনেছি এটাই পৃথিবীর সেরা সিনেমা। তাই মনে হয়েছে আর কিছু না দেখলেও চলে। তবে বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে অনেক কিছুই এখনও মুখস্থ। প্রথম সবাক বাংলা চলচ্চিত্রের নাম জানেন? মুখ ও মুখোশ!'
৪# বিসিএসে না টিকলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন জীবনে আর কচুশাক দিয়ে ভাত খাবেন না, হলেন একেবারে ফার্স্ট
কচুশাক ছিল খুব প্রিয়। সপ্তায় একবার না খেলে নাকি দিনই কাটতে চাইত না। জিদ করে বসলেন, ক্যাডার না হতে পারলে আর কখনও খাবেন না নিজের এই প্রিয় খাবারটি। আর এভাবেই আজ শিক্ষা ক্যাডারে ফার্স্ট রইসুল। কচুশাক দিয়ে ভাত খেতে খেতে তিনি আমাদের জানান, 'রেজাল্ট পেয়েই আগে ভাত খেতে বসেছি। পোস্টিং হওয়ার আগ পর্যন্ত শুধু কচুশাক দিয়েই ভাত খাবো। এছাড়া কচুর লতিও খাওয়ার ইচ্ছা আছে।'
৫# পড়তে পড়তে দিনে তিনবার অজ্ঞান হতেন, হাসপাতালে পরীক্ষা দিয়েই প্রশাসনে ফোর্থ!
খাওয়া নেই, দাওয়া নেই, পাগলের মতো শুধু পড়তেন আর পড়তেন। পড়তে পড়তে দৈনিক দু-তিনবার তো অজ্ঞান হতেনই, চারবার হওয়ারও রেকর্ড আছে। বারবার হাসপাতালে নেয়ার ঝামেলা এড়াতে তাই হাসপাতালেই থাকা শুরু করেন। পরীক্ষাও দিয়েছেন হাসপাতালের বেডে শুয়েই। অথচ সেই পরীক্ষাতেও মেধার মুন্সিয়ানা দেখিয়ে প্রশাসনে ফোর্থ হলেন মেধাবী রোখসানা। সেই গল্প বলতে বলতে চোখের পানি আটকে রাখতে পারলেন না, 'পরীক্ষার মধ্যেও একবার দশ মিনিটের অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম। ঐ দশ মিনিট সময় পেলে শিওর ফার্স্ট হতাম! তবু, আলহামদুলিল্লাহ ফর এভ্রিথিং :) কী যে খুশি লাগছেএএএএএ!' এটুকু বলেই রোখসানা অজ্ঞান হয়ে যান!
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন