১৪ ফেব্রুয়ারির অন্যান্য দিবসগুলো সম্পর্কে আপনি জানেন?

২৬১৩ পঠিত ... ১৯:৪৯, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২

Valentine-day-charao (1)

আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারী, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস এবং সেই সাথে বসন্তের প্রথম দিনও! বাংলাদেশের প্রতি মানুষের মনে আজ ভালোবাসা এবং বসন্ত—এ দুই মিলেই দোলা দিচ্ছে। তবে শুধু ভালোবাসা দিবস পালন করতে করতেই ভুলে যাবেন না যেন অন্য যে দিবসগুলো আছে, তাদের কথা। কেননা তাদের কেউওই কিন্তু কোনভাবেই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। চলুন প্রিয় পাঠক জেনে আসি, আজকের দিবসগুলোক! 

পহেলা ফাল্গুন

পহেলা ফাল্গুন বাংলা পঞ্জিকার একাদশতম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও বসন্তের প্রথম দিন। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন পালিত হয়। বসন্তকে বরণ করে নেয়ার জন্যই মূলত বাংলাদেশে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়।

সুন্দরবন দিবস

সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস পালিত হয়ে আসছে। ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের আওতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রূপান্তর ও পরশের উদ্যোগে এবং দেশের আরও ৭০টি পরিবেশবাদী সংগঠনের অংশগ্রহণে প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সুন্দরবন দিবস’ ঘোষণা করা হয়। সে হিসেবে এবার পালিত হচ্ছে ২২ তম সুন্দরবন দিবস! 

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস

আজ বাংলাদেশের ইতিহাসেও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। বাংলাদেশে অনেকেই এই দিনটিকে পালন করেন স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসাবে।

এই দিবসের পটভূমি জানতে হলে আমাদের যেতে হবে ১৯৮২ হবে। সে সময় বাংলাদেশে তৎকালীন সামরিক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শিক্ষামন্ত্রী ড.মজিদ খানের ঘোষিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।

সে বছর ১৭ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিষয়ে একমত হয় ছাত্র সংগঠনগুলো

তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল ওই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সচিবালয়ে স্মারকলিপি দেয়ার শিক্ষার্থীদের পূর্বঘোষিত একটি কর্মসূচী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ওই সমাবেশ ডাকে।

কিন্তু সেখানে পুলিশ গুলি করলে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেদিন পুলিশের গুলিতে অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছিল বলে ধারণা  করা হয়। তবে মৃতদেহ পাওয়া যায় মাত্র দুজনের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাকি মৃতদেহগুলো গুম করে ফেলে। তাদের স্বজনরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে স্বজনদের কোন খোঁজ আর পাননি, এমনটাই জানিয়েছিলেন তৎকালীন সাবেক ছাত্রনেতা ও ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক মোশতাক হোসেন। 

সেদিন থেকেই এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৪ই ফেব্রুয়ারী পালিত হয় ‘স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’। 

বুক গিভিং ডে

স্বীকার করতে চান বা না চান, উপহার পেতে কার না ভালো লাগে বলুন তো? আপনি যখন একটি মোড়ানো প্যাকেট পাবেন তখন তার ভিতরে কী আছে তা খুঁজে বের করার জন্য উত্তেজনা কিংবা খুশি—কোনো মুহূর্তকেই অস্বীকার করার কিছু নেই। আজকের এই দিনটি বিশেষ করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে পড়ার প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে তোলা এবং তাদের জন্য বই সরবরাহ করার  উদ্দেশ্যে নিবেদিত।

এই দিনটি মূলত শুরু হয়েছিল যুক্তরাজ্যে। অ্যামি ব্রডমুর এবং তার ছেলের মাধ্যমেই দিনটির সূচনা ঘটে যারা মূলত অভাবগ্রস্থ এলাকায় বই বিতরণের কাজ শুরুর কথা ভেবেছিলো। পরবর্তীতে এই মা-ছেলে জুটি বিভিন্ন ইভেন্ট, প্রজেক্টের মাধ্যমে এই দিনটিকে এগিয়ে নিয়ে যায় পরবর্তীতে এসব দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ২০১৩ সালে,  এমা পেরির কাছে। তিনিই বর্তমানে এই ওয়েবসাইটটি  চালান। সাইটটি আজকের দিনটিকে ১০০% স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে যার লক্ষ্য বইয়ের সহজপ্রাপ্যতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বই পড়ার প্রতি তাদের  আগ্রহ বৃদ্ধি করা। 

'বুক গিভিং ডে' খুব বড়সড় ইভেন্টের আয়োজন না করলেও স্বেচ্ছাসেবকদের তাদের নিজস্ব সদিচ্ছা থেকে কাজ করতে উৎসাহিত করে। সাধারণত এই দিনে শিশুদেরকেই বই দেওয়া হয়ে থাকে। তবে মজার ব্যাপার হলো, এই দিনটি এখন ৪৪ টিরও বেশি দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হয়, সাতটি মহাদেশের মধ্যে ছয়টি দেশই যাতে অংশগ্রহণ করে!

বোন দিবস

ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখকে বিশ্বের সবাই ভালোবাসা দিবস হিসেবেই জানলেও এই নিয়মকে পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের ইউনির্ভার্সিটি অব এগ্রিকালচার। ইসলামি ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে ভালোবাসা দিবসকে ‘সিস্টারস ডে বা বোন দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য জাফর ইকবাল ১৪ ফেব্রুয়ারিকে ‘সিস্টারস ডে’ ঘোষণা দিয়েছেন। জানা যায়, এখন থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি সিস্টারস ডে পালনের সময় ক্যাম্পাসের নারী শিক্ষার্থীদের স্কার্ফ ও আবায়াহ (বোরকার মতো এক ধরনের পোশাক) উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এছাড়াও ইতিহাসেও আজকের দিনটি কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ১৮৭৬ সালের এই দিনে বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল ও এলিসা গ্রে দু'জনই টেলিফোন সংক্রান্ত আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট আবেদন করেন। ১৩৪৯ সালের এই দিনেই স্ট্রাসবুর্গ শহরে প্রায় ৯০০ ইহুদীকে পুড়িয়ে মারা হয় যা ইতিহাসে পরিচিত ‘ব্ল্যাক ডেথ' নামে। শুধু তাই নয়, এই ১৪ ফেব্রুয়ারিতেই বিখ্যাত সাহিত্যিক অস্কার ওয়াইল্ডের ‘Importance of Being  Earnest’ বইটি প্রকাশিত হয় লন্ডনে। 

২৬১৩ পঠিত ... ১৯:৪৯, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২

আরও eআরকি

পাঠকের মন্তব্য

 

ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে

আপনার পরিচয় গোপন রাখতে
আমি নীতিমালা মেনে মন্তব্য করছি।

আইডিয়া

কৌতুক

রম্য

সঙবাদ

স্যাটায়ার


Top