ফেসবুকের ইনবক্সে গভীর রাতে পরিচিত-অপরিচিত মেয়েদের অাপত্তিজনক প্রস্তাব দিয়ে পরে ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে গিয়েছিল এমনটা বলা যেন একটা নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। এর ভেতরে ব্যতিক্রম একজন। কারণ তিনি গরীব লোক, তার বাসায় কোনো কাজের ছেলে নাই। তার নাম শাহীন রহমান শাহীন। তিনিও গাজী সাহেবের মতোই গভীর রাতে মেয়েদের ইনবক্সে হানা দিতেন লং ড্রাইভের প্যাকেজ নিয়ে। এর বাইরে রয়েছে চাকরি দেওয়ার নাম করে হয়রানী।
হয়রানীর শিকার নাবিলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিস্থিতির চাপে পড়ে নিজের ভুল স্বীকার করে (ডিবি অফিসে বসে) একটি মুচলেকা দিতে বাধ্য হয়েছেন শাহীন রহমান। বলেছেন এমন কাজ তিনি আর ভবিষ্যতে করবেন না। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন চৈতী আহমেদ। মুচলেকার ছবিটি আপ করে তিনি লিখেছেন---
"আমার কাছে যখন এটি পৌঁছেছে তখন আমি এই মুচলেকাটিকে ভবিষ্যতের শাহীন রহমানদের জন্য সাবধানবাণী হিসেবে পাবলিক করাকে দায়িত্ব মনে করছি। ভদ্রলোক আমার ফেসবুক ফ্রেণ্ড। তিনি সম্প্রতি ইনবক্স মামলায় ফেসে গিয়ে আইডি ডিঅ্যাকটিভেট করে রেখেছেন। কী দিন আসলো, অনলাইন-অফলাইন কোথায় নারী নিরাপদ?
গতকাল একজন নাট্যনির্মাতা ইনবক্সে জানালেন, কাওরানবাজারে কেউ উনাকে স্লিভলেস জামা না পরার জন্য হুমকি দিয়েছে। দেখি না কি করে...দেখি না কি করে...দেখতে দেখতে কোথায় পৌঁছে গেছে আমার স্বদেশ!
নীচের মুচলেকাটি একজন জনপরিচিত সাংবাদিকের। ক’দিন আগে যার কথা আমি লিখেছিলাম। যারা উনার সাথে ফেসবুকে আছেন তারা জানবেন, 'ভদ্র' এই সাংবাদিকটির অসম্ভব সুন্দর আর সুখী একটি পরিবার আছে। অসাধারণ দুটো কি তিনটি বাচ্চা আছে।
অথচ তিনি মেয়েদের ইনবক্সে-ইনবক্সে লংড্রাইভের প্যাকেজ সেঁধে বেড়ান। নারী নিপীড়ন করে বেড়ান। সম্প্রতি একটি মেয়েকে চাকরির ইন্টারভিউয়ের জন্য ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকেও কী কী যেন প্রস্তাব দিয়েছেন। ফলাফল ডিবি অফিসে বসে এই মুচলেকা। যাদের ইনবক্সডিজিজ কান্ট্রোল নেহি হোতা হে তাদের জন্য এটি কান্ট্রোল তরিকার নমুনা হিসেবে দেয়া হলো। সামালকে ভাইলোগ।"
শাহীন রহমান শাহীন ইনবক্সে অশ্লীল আলাপের জন্য ডিবি অফিসে গিয়ে এই মুচলেকাটি দিয়েছেন--
শাহীন রহমান (শাহীন)
পিতা: আবদুর রহমান চৌধুরী
১**/১ পশ্চিম নাখাল পাড়া
ঢাকা।
উপরে আমার নাম ঠিকানা লেখা আছে । গত ২৬ মার্চ ২০১৮ নাবিলা *** নামে এক ভদ্রমহিলার সঙ্গে ফেসবুকে যে চ্যাট হয়েছে তার জন্যে আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও লজ্জিত। একই সঙ্গে নিঃর্শত ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে আমি এহেন কার্যকলাপ করবো না, যদি করি তাহলে আইনের কাছে দায়বদ্ধ থাকবো।
শাহীন রহমান
(স্বাক্ষর)
০৫/০৪/২০১৮
ভবিষ্যতের শাহীন রহমানরা এখনই সাবধান হয়ে যান। ঘুরে আসতে হতে পারে ডিবি অফিস। আর যাদের ইনবক্সে রাত-বিরাতে এমন প্রস্তাব আসে তারা সরাসরি গিয়ে অভিযোগ করতে পারেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে।
পাঠকের মন্তব্য
ইহাতে মন্তব্য প্রদান বন্ধ রয়েছে
লগইন