স্মার্টফোনের অ্যাপগুলোর মত নিয়মিত রোগবালাই কিংবা জ্বরেরও আপডেটেড ভার্সন আসছে। জ্বরের এই লেটেস্ট ভার্সনটার নামই হল চিকনগুনিয়া। এটাকে তাই হাল ফ্যাশনের অনুষঙ্গও বলা যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত হিটে থাকা এই রোগটি যদি এখনো আপনার না হয়ে থাকে, ব্যাপারটা তো খারাপ। সমাজ থেকে পিছিয়ে পড়লেন। চিকনগুনিয়া না হয়ে থাকলে ঠিক যেন চলতি ট্রেন্ডের সাথে তাল মিলিয়ে থাকা গেল না। তাই চলুন, জেনে নেয়া যাক, চিকনগুনিয়া হওয়ানোর জন্য আপনাকে কী কী করতে হবে:
১. চিকনগুনিয়া হওয়ানোর জন্য প্রথমেই আপনাকে মশারি টাঙানো বাদ দিতে হবে। আর মশার কয়েল ধরানোর কথা তো চিন্তাই করা যাবে না। বাসায় যদি পুরোনো কোনো অর্ধ ব্যবহৃত কয়েল থাকে, সেটিও ফেলে দিন। কখন মনের ভুলে ধরিয়ে ফেলেন, কে জানে!
২. প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে অবশ্যই ভালো খাওয়া দাওয়া করতে হবে। যেহেতু মশার কামড়ে এই রোগ হয়, তাই শরীর তরতাজা করে মশাদের শরীরের প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে।
এতেও যদি কাজ না হয় তাহলে সেকেন্ডারি লেভেলে নামতে হবে।
এই লেভেলে আপনাকে কিছু সূক্ষ্ম বিষয় খেয়াল করতে হবে। যেমন--
১. এডিস মশা দিনে কামড়ায়। তাই আপনি দিনে মশারি, কয়েল ছাড়াই ঘুমানোর অভ্যাস করুন। আর হ্যাঁ রাতে ঘুমাবেন না। এতে দিনের ঘুম গভীর হবে। রাতে জেগে থাকার জন্য কঠঠিন ধরণের ফেসবুকার বন্ধুদের সহযোগিতা নিন।
২. সেকেন্ডারি লেভেলে আপনি দ্বিতীয় যে কাজটি করবেন তা হলো বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় লাগানো। নার্সারি থেকে ঝোপঝাড় টাইপের গাছপালা কিনে বাড়ির আশেপাশে লাগিয়ে ফেলুন।
৩. প্রচুর পরিমাণ ডাব নারিকেল খেতে পারেন। তবে ডাব বা নারিকেলের ছোকলা ফেলে না দিয়ে তাতে কিছু পানি জমিয়ে বারান্দায় রেখে দিন। এডিস মশা যেহেতু সেখানেই জন্মায়, চিকনগুনিয়া বাধানোর ভালো রকম চান্স থেকে যায়।
৩. ডাব নারিকেলের ছিলকায় কাজ না হলে বড় কিছু পাত্রে ড্রেনের পরিষ্কার পানি নিয়ে জমিয়ে রাখুন। পাত্রগুলো আপনার বেডরুমে রাখলে ভালো হয়। এতে এডিস মশার বাচ্চারা জন্মানোর সাথে সাথে আপনার সংস্পর্শে আসতে পারবে।
এত কিছুর পরও যদি আপনার চিকনগুনিয়া না হয়, তাহলে আপনার ভাগ্য বিরাট খারাপ।
ভালো কিছু পেতে হলে কষ্ট করা লাগে। তাই এই লেভেলে আপনাকে নিজের বাসা ছাড়তে হবে। ড্রেনের পাশের ঝোপঝাড়ের ভেতরে আপনাকে কিছুদিন কাটাতে হবে। যদি পারেন ড্রেনের পানিতে পা ডুবিয়ে একটু জলকেলি করুন। ফেইসবুকে একটা চেক ইনও দিতে পারেন, এতে কাজে উৎসাহ পাবেন।
একনিষ্ঠভাবে এরকম এক সপ্তাহ কাটাতে পারলে আশা করা যায়, আপনি পাবেন আপনার সেই কাঙ্ক্ষিত রোগ, চিকন গুনিয়া! আপনিও সবার মত স্ট্যাটাস দিতে পারবেন, ‘অবশেষে চিকনগুনিয়া... feeling sad’