আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। প্রতিবছরই বইমেলা নিয়ে ভিন্নরকম উচ্ছ্বাস দেখা যায় পাঠক-লেখক-প্রকাশকমহলের। এ যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক জগত। বইমেলায় শুধু বই নয়, দেখা যায় ফাস্ট ফুড, কফি-চায়ের নান্দনিক স্টলও। সেসব স্টলের গায়ে লেগে থাকে শহুরে আধুনিকতা এবং আভিজাত্যের ঘ্রাণ। তবে এবারের বইমেলায় সাদামাটা রুটির দোকান দিয়েই বেশ হাকডাক ফেলে দিয়েছেন নজরুল কাজী নামের ১৭ বছরের এক যুবক।
ফুল টাইম রুটি বানালেও তিনি অনবরত গুনগুন করে বুনতে থাকেন সুর, তৎক্ষনাৎ বানিয়ে ফেলতে পারেন গানসহ নানা জিঙ্গেল। কেউ কেউ বলছেন এই যুবক জাতীয় কবি কাজী নজরুলেরই ডপলগ্যাঙ্গার৷ সবল শরীর, মাথায় ঝাঁকড়া চুল, পেয়ালার মতো চোখ, বীর্য-ব্যঞ্জক ভারী গলার স্বর কাজী নজরুলকেই মনে করিয়ে দেয়। সবসময়ই রুটি বেলতে বেলতে গুনগুন করে গান গাইছেন, তার অট্টহাসি আর আড্ডায় মুখরিত হচ্ছে বইমেলার প্রাঙ্গন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন স্টলের কর্মীদের নিয়ে তিনি তৈরি করেছেন লেটো গানের দলও।
বিস্ময়ের এখানেই শেষ নয়। নজরুল কাজীর ডাকনামও সুখু মিয়া। দুখু-সুখু শব্দদুটো কাছাকাছি হলেও অর্থগতভাবে কী বিস্তর ফারাক! 'সুখু মিয়ার রুটির দোকান'-এ রুটির চেয়েও বড় আকর্ষণ সুখুই।
দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শোনা যায় তার সুরেলা গলা, গাইছেন ‘পেলেন রুটি বিশ, তন্দুর চল্লিশ, নান মাত্র ষাটে, সবাইকেই যেতে হবে মরণের খাটে....’
শুধু কি তাই? মেয়েদের সাথে ধুমিয়ে চলছে তার ফ্লার্টও৷ পনিটেইল নিয়ে ইনস্ট্যান্ট গান লিখে ফেলায় আখ্যা পেয়েছেন 'বইমেলার রিজলর্ড' হিসেবে।
সুখুর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে জানা যায়, মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও বর্তমানে সে একজন হিন্দু মেয়ের সাথে সিচুয়েশনশিপে এবং আরেকজনের সাথে রিলেশনশিপে আছে। এর বেশিকিছু জানাতে তিনি রাজী হননি। এমনকি সাক্ষাৎকার নেবার সময়ও নজরুলের এই ক্যামেরাবিমুখ স্বভাবে বিরক্ত হয়েছেন বেশ কিছু সাংবাদিক।
অসংখ্য প্রশ্নের উত্তরে সুখু মিয়া কেবল বলে, ‘পেলেন রুটি বিশ, তন্দুর চল্লিশ, নান মাত্র ষাটে...’
এদিকে অন্য এক খবরে জানা গেছে, বইমেলার এই রুটির দোকানদার আসলে সত্যিকারের নজরুল। বইমেলায় আগের মতো বই বেচাবিক্রি না থাকায় রুটির দোকান দিয়েছেন তিনি। নজরুলের দেখাদেখি বইমেলায় ‘ঠাকুরবাড়ি হেঁসেল’নামে ভাতের হোটেল দেয়ার চিন্তা করছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাদাত হোসাইনের সাথে প্রতিযোগিতায় না টিকে রঙ চা-এর দোকান দেয়ার কথা ভাবছেন হুমায়ূন আহমেদও।