কুক কুক গানের জন্য রায়হান রাফিকে দুইবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দিতে অনুরোধ করছি। কেন? মন দিয়ে শুনুন তবে…
১. এই গানটি অসম্ভব গভীর এক অর্থ ও দ্যোতনা নিয়ে তৈরী হয়েছে। এ যেন এই সময়ের সমাজের চিত্র।
২. যখন সুন্দরবনের মধুর জি আই নিয়ে নিয়েছে, জামদানী ও টাঙাইল শাড়ি নিয়ে টানা টানি চলছে, সে সময়টি এই গানের কোকিলের ডাকে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলা ভাষায় কোকিল ডাকে কুহু। মুরগী ডাকে কুক কুক। কিন্তু এইগানে কোকিল কুককুক ডাকে। কারণ হিন্দি কোকিল ‘কোয়েলিয়া’ কুহু ডাকে না; কোয়েলিয়া ডাকে কুক কুক। এ যেন আমাদের কোকিলের জি আই নিয়ে নিল বন্ধু দেশ।
৩. যখন ভারতে আমোদ ফুর্তি করতে গিয়ে সঞ্জীবনি বাগানে গিয়ে আমাদের করুণ পরিণতি হয়, তখন এইখানে নৃত্যরত ভারতীয় কোকিল মিমির সাথে নাচতে নাচতে ফুর্তি করতে গিয়ে একইভাবে খালাস হয়ে যায় এক যুবক। পড়ে থাকে যেন নর্দমায় একইভাবে।
৪. নদীর বুকে চর আমি কি তোর পর? এটা বলার পরেই তুফানের হাতে শেষ হয়ে যায় এই যুবক। তিস্তা কিংবা গঙ্গার পানিতে চর এর গল্প করে। আমরা যে পর নই সেকথা বলে পানির ওপর ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখলেই যেভাবে মমতাহীন দিদি রেগে যান ঠিক সেভাবে শাকিব খান রেগে গিয়ে নদীর বুকে চর বলা ছেলেটাকে ফেলে দিয়ে নিজে মিমি নদীর বুকে আশ্রয় নিলো। একদম ম্যাজিক রিয়ালিজম।
৫. এদিকে চোখের সামনে সব ঘটনা দেখেও পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা নৃত্যরত জনগণ যেন বন্ধুত্বের অর্ধ শতক কনসার্টে নাচতেই থাকে। তারা নির্বিকার। কিছুতেই কিছু আসে যায় না। তারা জওয়ান তাই তারা তুফানি নাচ দিতেই থাকে। যেভাবে ফা...কনসার্ট বলে ফেসবুকে টিকটকে নাচে তরুন যুবকেরা। এদিকে লুটেরা লম্পট মাস্তান তুফান রাজ করে।
৬. আর মিমি পলকহীন থাকে। সীমান্ত অতিক্রম করে মঞ্চে উঠে শাকিবখান যেন তার প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে যায়। মিমির প্রেমে সে বোধবুদ্ধিহীন দাস।
মঞ্চ আর দর্শক সারী এক হয়ে যায়। কোনো সীমারেখা থাকে না। কনা গায় ফাগুন মাসে কাঁচা বাঁশে... বাগধারাতে বিখ্যাত বাঁশ নামক এই উদ্ভিদটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। চিরকাল যা জনগণের উন্নতির স্বাক্ষী হয়ে দ্রব্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতির নামে গণপশ্চাতে প্রবিষ্ট হয়। এখনও হচ্ছে।
এই গানের গীতিকার সুরকার শিল্পী কলাকুশলী সকলকে একটি পোস্ট রিয়ালিস্টিক, পোস্ট মডার্ন, ফিউচারিস্টিক, সুররিয়ালিস্টিক, ম্যাজিক রিয়ালিস্টিক গানের জন্য বারবার পুরস্কার দেয়া হোক।
আর এই গানের এমন দৃশ্যায়নের জন্য রাফিকে টুপি খোলা... যা যা খোলা যায় সব খোলা অভিনন্দন।