আপনার প্রার্থী কতটুকু সৎ ও যোগ্য : ১০টি প্রশ্নের মাধ্যমে যাচাই করুন

২৬০৪ পঠিত ... ১৭:০৬, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

নির্বাচনের মৌসুমে প্রার্থীরা নিজেদের সৎ, যোগ্য, চরিত্রবান বলে নানারকম দাবি করেন। সবাই সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়ার পরামর্শও দেন। কিন্তু একজন প্রার্থী কতটুকু সৎ, তা কীভাবে বুঝবেন? পোস্টার দেখে, ছবি দেখে, প্রচারণা দেখে তো আর প্রার্থীর সততা এবং যোগ্যতা সম্পর্কে জানা সম্ভব না! এই জটিল সমস্যার সমাধান eআরকি ছাড়া কে দেবে, বলুন? ভোটারদের কনফিউশন দূর করতে আমরা তৈরি করেছি ‘eআরকি অনেস্ট ক্যান্ডিডেন্ট ফিল্টার’। নিচের এই ১০টা প্রশ্ন করে যাচাই করে নিতে পারেন আপনার প্রার্থীর সততা।


১# নির্বাচিত হলে আপনি দুর্নীতি করে কী পরিমাণ টাকা আয় করতে চান?

ক. লাখ লাখ 
খ. কোটি কোটি 
গ. ডলারে (মিলিয়ন) 
ঘ. দুর্নীতি করার প্রশ্নই আসে না।


২# হলফনামায় আপনার স্ত্রীর যে সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, তা কি আসলেই আপনার স্ত্রীর?

ক. স্ত্রীকে কিছু কিনে দিলে তা কি আর আমার বলা যায়?
খ. আমার সবকিছুই তো গিন্নীর কাছে সঁপে দিয়েছি। 
গ. আরে হলফনামায় নিজের নামে এতকিছু দেখানো যায় নাকি?
ঘ. আমার স্ত্রীর টাকাতেই তো আমি চলছি।

 

৩# আপনার এলাকায় আপনি কী কী উন্নয়ন করতে চান?

ক. উন্নয়ন করবো হাবিজাবি এইসব কথা তো নির্বাচনে জেতার জন্য বলা, এইগুলা সিরিয়াসলি নেন কেন!
খ. এমন উন্নয়ন করতে চাই, যাতে সামনের মেয়াদেই দুইবার আমার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একই রাস্তা নিয়ে কাজ করে।
গ. নিজের উন্নয়ন করতে চাই। আমিও তো আমার এলাকারই অংশ, নাকি?
ঘ. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পার্ক, রাস্তাঘাট, পাবলিক টয়লেট ইত্যাদি নির্মাণ ও সংস্কার করতে চাই।


৪# আপনি কি কোন অবৈধ পেশায় জড়িত আছেন?

ক. কালো টাকা সব সাদা হয়ে গেছে, টেনশন নাই!
খ. আমার পেশা অবৈধ কিনা জানি না, তবে আমাকে লোকে গডফাদার বলে।
গ. ড্রাগস, অস্ত্র, জাল টাকা- সব ধরনের ব্যবসাতেই আমার পসার আছে। 
ঘ. না ভাই, আমি নরেন্দ্র মোদির মতো চায়ের দোকানে কাজ করে মনোনয়নপত্র কিনেছি।


৫# দলের মনোনয়ন পেতে আপনি কত টাকা অনুদান দিয়েছেন?

ক. এইতো ভাই লাখখানেক। 
খ. কোটি টাকার নিচে কথা হয় না!
গ. শুধু টাকা দিয়ে তো এইসব কাজ হয় না, হাই কমান্ডে তদবিরও করতে হয়েছে। 
ঘ. এলাকার জনগণের ভালবাসা ও সমর্থনের জন্যই আমাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।


৬# ব্যবসা ছেড়ে রাজনীতিতে এলেন কেন?

ক. এতদিন ব্যবসা করেছি, এখন বাণিজ্য করব।
খ. ব্যবসার প্রয়োজনেই।
গ. রাজনীতিই তো এই দেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা!
ঘ. মজলুম জনতার হক আদায় করতে।


৭# বিভিন্ন মিছিল ও র‍্যালির জন্য লোক আনতে আপনি জনপ্রতি কত টাকা খরচ করছেন?

ক. তেমন কিছু না, চা সিগারেটের খরচ দেই।
খ. আরে এসব কর্মী তো আমারই ছোট ভাই-বোন। 
গ. প্রত্যেকের জন্য দিনপ্রতি ৫০০ টাকা 
ঘ. আমাকে ভালোবেসেই মানুষ আমার প্রচারণায় অংশ নেয়।


৮# নির্বাচনে জিতলে আপনার এলাকার ভোটারদের কথা মনে রাখবেন?

ক. আমার অ্যামনেশিয়া আছে। 
খ. ভোটের পর আমাকে মনে রাখবে সবাই, আমি কেন মনে রাখতে যাব
গ. আমার আসন ঢাকা থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে, এত দূর থেকে মনে রাখা কঠিন। 
ঘ. জনগণের জন্যই আমি রাজনীতি করি, তাদের ভুলে গেলে চলবে কী করে?


৯# ভোট পাওয়ার জন্য এলাকার ভোটারদের আপনি কীভাবে প্রভাবিত করছেন?

ক. অন্যান্য প্রার্থীদের বসায় দিছি, তাতেই কাজ হয়ে গেছে!
খ. টাকা পয়সা দিয়ে প্রভাবিত করছি। 
গ. আমি না জিতলে জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচী হাতে নেবো বলে জানিয়েছি। 
ঘ. আমার প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার উপর আস্থা রাখছি।


১০# এলাকার সর্বত্র ছেয়ে যাওয়া পোস্টারগুলো কে ছাপিয়েছে?

ক. আমার কর্মীরা
খ. সামনের টার্মে যারা আমার কাছে নানান সুবিধা চায়।
গ. আমি নিজেই।
ঘ. এলাকার সর্বস্তরের সচেতন জনগণ।

 

আপনার এলাকার প্রার্থী যদি এই সবগুলো প্রশ্নেই ‘ঘ’ অপশনটি উত্তর দিয়ে থাকে, তাহলে বুঝে নিন আপনার প্রার্থী যোগ্য, তবে তিনি চরম পর্যায়ের অসৎ ও মিথ্যাবাদী। যদি প্রতি প্রশ্নেই ঘ বাদে বাকি তিনটি অপশনের কোনোটি উত্তর দিয়ে থাকে, তবে বুঝবেন তিনি সৎ, তবে একজন সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য বেশ অযোগ্য! একইসঙ্গে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী যদি পেতে চান, তাহলে পরের নির্বাচনে আবার ট্রাই করুন। ধন্যবাদ।

২৬০৪ পঠিত ... ১৭:০৬, জানুয়ারি ১৫, ২০২০

Top