প্রকাশিত হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট। এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট শোনা বা জানতে পারার পর থেকে তা মেনে নেয়া পর্যন্ত পুরো সময়ে আবেগের নানান পরিবর্তনকে eআরকির আবেগ বিশেষজ্ঞ দল ভাগ করেছেন পাঁচটি ধাপে। এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা যারা এখন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি নিয়ে চিন্তিত, তারা দ্রুত এই পাঁচটি ধাপের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা মিলিয়ে নিন।
১# অস্বীকার
পাঁচটি ধাপের প্রথমটিই হলো ফলাফল মেনে না নেয়ার প্রবণতা। তাৎক্ষনিক শক সামলাতে এরকম আচরণ অস্বাভাবিক নয়। তালিকায় যখন প্রত্যাশিত ফলাফল দেখা না যায়, তখন প্রথমেই মনে হয়, ‘না এটা তো আমার রেজাল্ট না! নিশ্চই আমি ভুল রোল নাম্বার দেখছি।’ এর পর যখন রোল নাম্বার নিশ্চিত হওয়ার পরেও রেজাল্ট আগের মতোই দেখায়, তখন মনে হতে পারে ‘না, এত খারাপ পরীক্ষা তো আমি দেই নাই! নিশ্চয়ই এটা আগের বছরের রেজাল্ট! অথবা খাতা মনে হয় ঠিকঠাকমতো দেখে নাই!’
২#ক্রোধ
রেজাল্টের পর আবেগের দ্বিতীয় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হচ্ছে ক্রোধ। অস্বীকার করার ধাপ পেরুলে শিক্ষার্থী আস্তে আস্তে বাস্তবতার সংস্পর্শে আসতে শুরু করে, এবং বুঝতে পারে তার রেজাল্ট আসলে এটাই। কিন্তু তবুও সে পুরোপুরি ব্যাপারটি মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। তখন সে তার রাগ ঝাড়ার জন্য পারিপার্শ্বিক বিষয় খুঁজতে থাকে। ‘ফালতু সাজেশন পড়েছি বলেই পরীক্ষায় কিছু কমন আসে নাই!’, ‘পাশের পোলাটা নিশ্চয়ই আমাকে ভুলভাল উত্তর দেখাইছে, সেজন্য নাম্বার কম পাইছি!’, ‘এক্সট্রা পেজ মনে হয় খাতা নেয়ার সময় ছিঁড়ে ফেলছে!’ থেকে শুরু করে ‘পাশের মেয়েটা পরীক্ষার সময় এমন সেজে আসছিলো কেন? এজন্যই তো খাতায় মনোযোগ দিতে পারি নাই’ জাতীয় ঘটনার উপর সে তার পরীক্ষার ব্যর্থতার দায় চাপাতে চায়।
৩# দর কষাকষি
ক্ষুব্ধ হয়ে কোন লাভ হচ্ছে না বুঝতে পেরে মানুষ শুরু করে দর কষাকষি। সে মনে মনে ভাবতে থাকে ‘এবার রেজাল্টটা যদি কোনভাবে বাতিল হয়, তাহলে এরপর থেকে পড়াশোনা করে ফাটায় ফেলবো!’ এই ভাবনার সাথে এসে যোগ হয় তার নিজের অপরাধবোধগুলো। কী করলে আরেকটু ভালো করা যেত, কী করলে আর ৫ টা নাম্বার বেশি পাওয়া যেত, তা নিয়ে সে ভোগে আত্মগ্লানিতে।
৪# হতাশা
রেজাল্ট দেখার পর চতুর্থ ধাপটি হচ্ছে হতাশা! ‘পরীক্ষায় ভালো করে কী হবে, একদিন তো মরেই যাবো’ জাতীয় ভাবনা দেখা দেয় শিক্ষার্থীর মনে। বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তাও আসে অনেকের মাথায়। সবকিছু ছেড়েছুড়ে হিমুর মত রাস্তায় রাস্তায় হাঁটার সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলে অনেকে।
৫# মেনে নেয়া
সর্বশেষ ধাপ হচ্ছে বাস্তবতা স্বীকার করে নেয়া। সবার থেকে গালিগালাজ এবং সমালোচনা হজম করার পর ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া। আসলে ততদিনে ব্যাপারাটা সয়ে যায়। যে যাই বলুক আর গায়ে লাগে না। রেজাল্ট পরবর্তী শোক পুরোপুরি হজম করে ফেলার জন্য 'পাবলিকে চান্স পেয়ে দেখায় দিবো কে আসল বাপের ব্যাটা', এই কথা মনে মনে ভাবেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর! যদি এখনও রেজাল্ট হজম না করতে পারেন, দ্রুত ভেবে ফেলুন!