জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি কাল্পনিক মানববন্ধন। সবার হাতে হাতে পোস্টারে লেখা, ‘মানি না, মানব না।’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, বয়কট করতে হবে।’, ‘নিষিদ্ধ কর, নিষিদ্ধ কর।’ আমাদের প্রতিবেদক কল্পনাতেই কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেলেন কারণ কী জানতে।
আন্দোলন চলছে ঠিকই, সেটা মুরাদ টাকলা অভিধান শীর্ষক একটি বই নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন। আন্দোলনটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ ডেন্টিস্ট এসোসিয়েশন দ্বারা। বিস্তারিত জানতে চেয়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীদের একজনের সাথে কাল্পনিক কথা চালালেন eআরকি প্রতিবেদক।
প্রতিবেদক: ভাই, এই যে আপনারা এতগুলো মানুষ মানববন্ধনে রাজপথে নেমেছেন। আপনাদের দাবীটা আসলে কী?
আন্দোলনকারী: এইখানে যতজনকে দেখছেন, সবাই দেশের স্বনামধন্য, প্রতিষ্ঠিত ডেন্টিস্ট। আমরা সবাই আমাদের চেম্বার বন্ধ করে একটা মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি।
এই বলেই তিনি তার কাঁধে ঝুলতে থাকা টোট ব্যাগ থেকে একটি হলুদ রঙের বই বের করে ক্যামেরার সামনে ধরে বললেন, ‘আমরা চাই এই বইটি নিষিদ্ধ করা হোক। বইটির যেই কয়টি কপি বাজারে আছে সব বয়কট করা হোক এবং নতুন করে আর ছাপানো না হোক।’
প্রতিবেদক: কিন্তু কেন ভাই? বইটিতে কি রাষ্ট্রভাষা বাংলার ভুল প্রয়োগ আছে? কিংবা আমাদের মাতৃভাষার অবমাননা করা হয়েছে?
আন্দোলনকারী: ভাই, বাংলা ভাষার একটি অন্যতম লিখিত ভাষা হলো মুরাদ টাকলা ভাষা। এই ভাষায় লেখালেখি করে দেশের হাজার খানেক মানুষ। কিন্তু সৌভাগ্যবশত অনেকেই এই ভাষা পড়তে জানে না। এই ভাষা পড়তে গিয়ে দাঁত ভেঙে যেত অনেক মানুষের। আর তারা চলে আসত আমাদের কাছে দাঁতের চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এই বই বাজারে আসাতে সবাই এখন মুরাদ টাকলা ভাষা শিখে গেছে। এখন আর কারও এই লিখা পড়তে গিয়ে দাঁতও ভাঙে না, আমাদের কাছে আসার প্রয়োজনও পড়ে না। আমাদের ব্যবসা উঠেছে লাটে!
সব শুনে ডেন্টিস্ট সমাজের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সেখান থেকে অফিসে এসে প্রতিবেদনটি লিখে ফেলেন eআরকি-র প্রধান প্রতিবেদক। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন সময় অফিসের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে-বসে, হাঁটতে-চলতে, এমনকি খাবার খেতে খেতেও হলুদ রঙের একটি বই মনযোগ দিয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে।