কিছুদিন আগেই প্রকাশিত হলো মেডিকেল কলেজের রেজাল্ট। কৃতী ছাত্র-ছাত্রী যাদেরই জিজ্ঞেস করা হয়েছে ডাক্তার হয়ে কী করবে, উত্তর এসেছে একটাই, ‘গরীবের সেবা।’ এত এত গরীব-প্রীতি দেখে সমাজ আবেগে আপ্লুত হলেও, আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে বড়লোক সোসাইটি। এমনই নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গুলশানের ভাই জানান, আগে শুনতাম সবাই গরীব-মারা ডাক্তার হতো, বেশি টাকা নেয় দেখে অনেক ডাক্তারকে কসাই বলেও ডাকত গরীবরা। এইজন্য বড়লোক হইছি। হওয়ার পরে দেখি ডাক্তাররা সব সেবা করবে গরীবের! বড়লোক হয়ে মনে হইতেছে আমার লাভ-লস নাই, আমার লাইফটাই লস!’
এদিকে গুলশানের ঠিক পাশেই কড়াইল বস্তির এক গরীবকে জিজ্ঞেস করলে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। নিজের সন্তানকে মেডিকেলের অ্যাডমিশনে পরীক্ষাই দিতে দেননি তিনি। কেন দেননি, এই প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘পোলাপান ডাক্তার হইয়া নাকি গরীবের সেবা করব। আছিই তো গরীব, তাইলে আমার মাইয়া গরীব হিসাবে সেবাই নাইলে নিলো। হুদাই আরেক গরীবের সেবা কইরা কী লাভ?’
আমরা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া এক কৃতি শিক্ষার্থীর কাছেও গিয়েছিলাম। কেন গরীবের ডাক্তার হতে চান, জানতে চাইলে বলেন, ‘দেখুন, আমাদের দেশের গরীবেরা চির অবহেলিত, নিপীড়িত। চিকিৎসা সেবা নিয়ে আমি তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’ গরীবের পাশে দাঁরালে আপনার কী লাভ হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে হালকা হেসে শিক্ষার্থী জবাব দিলেন, ‘বুঝেনই তো…’
এদিকে দশ বছর গরীবের পাশে দাঁড়াতে চাওয়া প্রাচীন শিক্ষার্থী কাম বর্তমান ডাক্তারের কাছে আমরা গিয়েছিলাম গরীবের পাশে কেমন দাঁড়াচ্ছেন তিনি, তা জানতে। ফেরারি কারে আমাদের পাশ ঘেঁষে হুশ করে বেরিয়ে যাওয়ায় আমরা প্রশ্নটি তাকে আর করতে পারিনি।