ঢাকার পুরোনো বাসিন্দারা যেন শুধু বাসিন্দাই নয়—একেকজন ঢাকার অংশীদার বললেও ভুল হবে না।
মাঝে মাঝে তাদের কথা-বার্তা,আচার-আচরণ দাবি- দাওয়া শুনলে মনে হবে ঢাকা তাদের পৈতৃক সম্পত্তি আর দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে ঢাকায় বসবাস করা মানুষ সেখানের মেহমান। সেই প্রথাগত আচরণ থেকেই তারা এবার করেছেন এক ভিন্ন চাওয়া। গত শনিবার সকালে নতুন আরেকটি নিউমার্কেটের দাবি করে মিছিল বের করেন ঢাকার পুরোনো বাসিন্দারা।
ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যের একটি হলো নিউমার্কেট। পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিনের ক্ষমতাকালে ১৯৫২ সালে সিবিডি কর্তৃক এই মার্কেটের নির্মানকাজ শুরু হয়। এর নির্মানকাজ শেষ হয় ১৯৫৪ সালে। আজিমপুরের উত্তর অংশে অবস্থিত এই বাণিজ্যিক শপিং মার্কেটের মাধ্যমেই মূলত ঢাকার আধুনিকায়ন শুরু হয়। এখন এই নিউমার্কেটের বদলেই ঢাকার পুরাতন বাসিন্দারা দাবি করছেন নতুন নিউমার্কেটের।
এ ব্যাপারে ফজলুল গণির স্ত্রী আরমানি গণি বলেন, ‘ঢাকার এই নিউমার্কেট আমরা তুদিও না। দুইদিন কাপড় ছাড়া ন্যাংটা থাকলেও এখানে যায়া আর কাপড় কিনি না। গ্রাম গঞ্জ থেকে আসা মানুষ ওইখানে দুইদিন বাজার সদাই কইরা হম্বিতম্বি করে। আমরা মুখ টিপি আর হাসি...এই মার্কেটের নাম চেঞ্জ হয়ে ‘ওল্ডমার্কেট’ হয়ে যাওয়া উচিৎ। আর আমাদের জন্য একটা নতুন নিউমার্কেট।‘
জোনাকী নামের আরেক পুরাতন বাসিন্দা বলেন ‘পুরাতনদের জন্য বানানো নিউমার্কেটে দাম এত উপরে থেকে বলার দরকার নাই। ৭০০ টাকা বললেও আমরা ৭০ টাকা থেকেই শুরু করি। এইগুলা ওই নিউমার্কেটেই ঠিক আছে...’
ঢাকার আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘এই মার্কেটে প্রথম দোকান দিছে আমার দাদা। সেই দাদা মরে আমার মরারও টাইম হয়ে গেছে। এক পা অলরেডি কবরে। তাও এই মার্কেটের নাম কীভাবে নিউমার্কেট হয়? ফাইজলামি নাকি?’
এদিকে পুরাতন বাসিন্দাদের উন্নাসিকতায় আহত হয়েছেন ঢাকার নতুন বাসিন্দারা। তবে তারাও কোনোদিকে কম নন। রংপুরের আবেদ আলী নামের এক ডাক্তার ডাক দিয়েছেন আন্দোলনের। তিনি বলেন, ‘কীসের এতো অহংকার? এক শহর, এক নিউমার্কেট। আমরা আন্দোলন করে যাবো। এই শহরে নাশকতার কোনো জায়গা নেই। জাগো বাহে কোণ্ঠে সবাই....’