গল্পের জাদুকর বিদায় নিয়েছেন প্রায় ১০ বছর। কিন্তু তার ভক্তরা যে হিমু, রুপা, মিসির আলী সেজে আজও অপেক্ষা করছে তার। গল্পের জাদুকরকে ভোটকেন্দ্রে এক পলক দেখার মোক্ষম সুযোগ মিস করলেন না তারা। তাই হুমায়ূন আহমেদের খোঁজে আজ ভোট কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে হিমু, রুপাদের।
ছেঁড়া হলুদ পাঞ্জাবি, খালি পা, ময়লা মাথার এক লোক কেন্দ্রে বসে কাঁদছিল। তাকে দেখে হিমু ভেবে আমাদের eআরকি প্রতিবেদক জিজ্ঞেস করেন, 'পেয়েছেন কি আপনার জাদুকরের দেখা? তাকে দেখেই কী আপনার এই অঝোর কান্না? কোথায় তিনি?'
খ্যাঁক করে উঠে হিমু বলে উঠলো, 'ধুর মিয়া, কে হিমু? আমি মতি মিয়া। আইছিলাম ভোট দিতে। ভোট দিছিও৷ বাংলাদেশের ভোটকেন্দ্রে দেখলাম কাল্পনিক চরিত্ররা স্বাধীনভাবেই ভোট দিতাছে। পরিবেশ আইজ অত্যধিক সুন্দর লাগতেছে।'
ভুল হিমুর দুঃখের কথা শুনে আমরা কেটে পড়তেই আরেক কেন্দ্রে গিয়ে শুনি মিসির আলী এসেছেন। এমন স্বচ্ছ নির্বাচনে কোনো রহস্যের তো মারপ্যাঁচ নেই, এমনকি কে জিতবে তাও সকলের জানা। তাই কেন্দ্রে কী তিনিও হুমায়ূন আহমেদের রহস্য উদঘাটন করতে এসেছেন নাকি জিজ্ঞেস করতেই বলেন, 'ঠিকই ধরেছেন। এসেছি তাকেই খুঁজতে। কিন্তু হুমায়ূন সাহেবের সাথে দেখা হয়নি। আমার মনে হয় চাঁদের আলো গায়ে মাখানোর সুযোগটা তিনি মিস করতে চাননি। তাই গতরাতেই চলে এসেছিলেন।'
এবার আসল হিমুর খবর জানতে আরও কিছু কেন্দ্র ঘোরার পর দেখা পেলাম নীল শাড়ি-চুড়ি পরা রুপার। কেন্দ্রের ভেতরে না গিয়ে বাইরে কার জন্যে অপেক্ষা করছেন জিজ্ঞেস করতেই রুপা বললেন, 'হিমু বলেছিল আসতে, তাই এলাম। আজ নাকি আমাদের বিয়ে। হিমু গিয়েছে বিয়ের সাক্ষীকে খুঁজতে। এই সাক্ষিক্ষীকে নাকি আর কখনোই পাওয়া যাবে না। আর সাক্ষীকে না পেলে বিয়েও হবে না। কাল রাত থেকে খুঁজেই বেড়াচ্ছে। আর আমিও দাঁড়িয়ে আছি হিমু আর তার সাক্ষীর অপেক্ষায়।'
আমরা যদিও জানতাম হিমু খুঁজে বেড়াচ্ছেন হুমায়ূন আহমেদকে। কিন্তু তিনি যে তাদের বিয়ের সাক্ষীও হতে যাচ্ছেন তা জানা ছিলো না।
তবে সুখের খবর হলো, হুমায়ূন আহমেদকে না পেয়ে বিষণ্ণ মনে ফিরে যাওয়ার সময় সাদাত হোসেনের সাথে দেখা হয়েছিল আমাদের। পরে ওনার সঙ্গে দেখা করেই দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে নিলাম আমরা।