চলে এসেছে আরো একটি মহান বৃহস্পতিবার। তবে, মাসের শেষ বৃহস্পতিবার হওয়ায় এটার তাৎপর্য বেড়ে গেছে বহুগুণে। সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ফিসফিস করছে একে অন্যের কানে৷ যদিও এসব কথা কানে নিচ্ছে না মালিকপক্ষ। যার ফলে, এই বৃহস্পতিবার অতিবাহিত হতে যাচ্ছে ফাঁকা পকেটে। ব্যাপারটা নিয়ে কয়েকজন ফেইসবুকে হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাস দিলে সেটা দ্রুত ব্যাংকগুলোর নজরে আসে৷
আর এরই ফলশ্রুতিতে, মাসের শেষ বৃহস্পতিবারের জন্য ফেস্টিভ্যাল লোন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকগুলো। এক যৌথ বার্তায় এসব সিদ্ধান্তের কথা জানায় তারা। বাংলা ব্যাংক এসোসিয়েশন (BBA)-এর জনৈক ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, 'আবহমান বাংলায় বৃহস্পতিবার মানেই উন্মাদনা, উৎসব।আর যে কোনো উৎসবে ব্যাংক যদি মানুষের পাশে না দাঁড়ায়, তাহলে দাঁড়াবে কে?'
প্রতিটি মানুষের বৃহস্পতিবার পালনের অধিকার আছে, এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা চাই প্রতিটি মানুষ বৃহস্পতিবারে নিশ্চিন্তে দুই হাতে টাকা ওড়াক। আর সেই টাকা এবার আমরাই দেবো। টাকা ফেরত দেয়ার চিন্তা শুক্রবার সকালে করলেও চলবে।'
মাসের শেষ বৃহস্পতিবারের জন্য স্পেশাল ক্রেডিট কার্ড চালু করার পরিকল্পনাও চলছে, এমনটা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমরা ব্যাপারটাকে সহজ করতে চাই। বৃহস্পতিবারে মূলত ক্যাশ টাকায় বিল পরিশোধ করার মত অবস্থায় অনেকেই থাকেনা । তাদের কথা ভেবেই আমরা আনছি TNS (থার্সডে নাইট স্পেশাল) ক্রেডিট কার্ড৷ গোনাগুনির ঝামেলা থাকবে না। শুধু ঘষা দিলেই চলবে।'
লোনের লিমিট কত হবে জানতে চাইলে তিনি হেসে বলেন, 'আমরা এই লোনের নাম দিয়েছি LL (লিমিটলেস লোন)। যে যত খেয়ে পারে, ইয়ে মানে খরচ করে পারে।'
এদিকে লোনের খবরে খুশির জোয়ার বইছে অফিস পাড়াগুলোতে৷ অনেককেই লাঞ্চের পর থেকে ব্যাংকের সামনে লাইন দিতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে ইচ্ছুক জনৈক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, 'নিজের জন্য দুটি লোন নিবো। বন্ধুরাও ধরেছে। ওদেরকেও নিয়ে দেবো। বৃহস্পতিবারের আনন্দ সবার মাঝে ভাগ করে দিতে চাই।'
এ ব্যাপারে বিজ্ঞাপনী সংস্থার জনৈক কপিরাইটার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, 'লোন পেলেই আর লোনলি থাকবোনা'। তবে এ ধরনের লোন বৈধ কিনা জানতে চাইলে বনানীর একজন রেস্টুরেন্ট মালিক টেলিফোনে বলেন, 'চিয়ার্স!'। এ সময় কাচের গ্লাসের টুংটাং শব্দ পাওয়া যায়।